মে মাসের ৭ তারিখ পর্যন্ত কোটা সংস্কার আন্দোলন স্থগিতের যে সিদ্ধান্ত, তা মানছেন না সাধারণ আন্দোলনকারীরা। তারা বলছেন, আমরা কোটা বাতিলের পক্ষে না, আমরা চাই কোটার সংস্কার।
সোমবার রাতে বেশ কয়েকজন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, ৫৬ শতাংশ কোটা কোনো দেশেই নেই। আমরা চাই কোটার শতাংশ কমিয়ে আনা হোক।
আরেক শিক্ষার্থী বলেন, কোটা নিয়ে যাচাই বাছাই করার কিছু নেই, পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে এগিয়ে আনতে সংবিধানে কোটা ব্যবস্থার কথা বলা আছে। পাশাপাশি মুক্তিযোদ্ধা কোটা ব্যবস্থা ৩০ শতাংশের কথা বলা আছে। আমরা চাচ্ছি এই কোটা ব্যবস্থার সঠিক সংস্কার।
মে মাস পর্যন্ত কোটা সংস্কার মানবেন না জানিয়ে শিক্ষার্থীরা বলেন: সামনে রমজান আসছে, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হয়ে যাবে, আমরা দ্রুত সংস্কারের দাবি জানাচ্ছি। আন্দোলনকে পিছু হঠাতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
তারা বলছেন, কোটার জন্য অনেক মেধাবী শিক্ষার্থীর মূল্যায়ন হচ্ছে না। আমরা আন্দোলন করে যাব, কোটা বৈষম্য দূর করব।
এর আগে বৈঠক শেষে সচিবালয় থেকে পরিষদের ১৯ সদস্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে রাজু ভাস্কর্যের সামনে আসেন। এসময় সেখানে সাধারণ আন্দোলনকারীরা জড়ো হন। পরিষদের পক্ষ থেকে আন্দোলন স্থগিতের সিদ্ধান্ত জানানোর সঙ্গে সঙ্গে ‘মানি না মানি না’ স্লোগান দিয়ে উঠেন সাধারণ আন্দোলনকারীরা।
এসময় পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন বলেন, ‘আপনারা যদি আমাদের সিদ্ধান্ত না মানেন তাহলে আমরা কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে সরে যাব।’
চাকরিতে বর্তমান কোটা পদ্ধতি পরীক্ষা-নিরীক্ষায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আশ্বাসে চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলন ৭ মে পর্যন্ত স্থগিত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রার্থীরা।
সোমবার সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে সরকারের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে আলোচনার পর এ সিদ্ধান্ত আসে।
সরকারের আশ্বাসে ১ মাসের জন্য কোটা সংস্কার আন্দোলন স্থগিত করা হয়েছে বলে জানান এ আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন।
রোববার পাঁচ দফা দাবিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতাকর্মীরা রাজধানীর শাহবাগে পূর্ব ঘোষিত অবস্থান কর্মসূচি শুরু করে। এক পর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে ব্যাপক সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে তারা।
রাতভর সংঘর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় চলে পুলিশ ও আন্দোলনকারীদের তাণ্ডব।
এরপর সোমবার তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।
সাধারণ আন্দোলনকারীদের দাবিগুলো হল, কোটা ব্যবস্থা সংস্কার করে ৫৬ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশে নামিয়ে আনা, কোটায় কোনো ধরনের বিশেষ নিয়োগ না দেয়া, চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহারের সুযোগ না দেয়া, সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে সবার জন্য অভিন্ন কাট মার্কস ও বয়সসীমা নির্ধারণ করা ও কোটায় যোগ্যপ্রার্থী পাওয়া না গেলে শূন্য পদগুলোতে মেধায় নিয়োগ দেয়া।