নানা আয়োজনে “সমতার জন্য মুক্ত জ্ঞান” শ্লোগানকে সামনে রেখে পৃথিবীর অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক ওপেন একসেস সপ্তাহ ২০১৯ পালিত হয়েছে।
শনিবার রাজধানীতে এক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা ও জাতীয় গ্রন্তাগারের কবি বেগম সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে এক আলোচনা সভা আয়োজন করে ওপেন একসেস বাংলাদেশ।
বাংলাদেশে ওপেন একসেস শিক্ষা, তথ্য ও গবেষণা পদ্ধতি ছড়িয়ে দেওয়া এই আয়োজনের উদ্দেশ্য।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, গাজীপুর এর ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মোঃ গিয়াসউদ্দীন মিয়া।
অধ্যাপক ড. মোঃ গিয়াসউদ্দীন মিয়া বলেন, বাংলাদেশে শিক্ষা ও গবেষণায় এবং টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে ওপেন একসেস এর বিকল্প নেই। জ্ঞানের সমতা নিশ্চিত করতে সারা দেশে ওপেন একসেস আন্দোলন ছড়িয়ে দিতেও তিনি গুরুত্ব আরোপ করেন।
শোভাযাত্রা শেষে আলোচনা সভায় দেশ বরেণ্য শিক্ষাবিদ, সরকারি নীতি নির্ধারক, বিভিন্ন বিষয়ের গবেষক, গ্রন্থাগার ও তথ্য বিজ্ঞান পেশাজীবী এবং বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শতাধিক তরুণ গবেষক ও ছাত্র-ছাত্রী অংশ গ্রহণ করেন।
আলোচনা সভায় জিটিভি এবং সারাবাংলা ডট নেট এর এডিটর ইন চিফ সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা, বিশিষ্ট চিকিৎসক ও বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের হেপাটলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডাঃ মামুন আল মাহতাব সপ্নীল, সাংবাদিক মাহফুজ মিশু, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমআইএস বিভাগের অধ্যাপক ডঃ হেলাল উদ্দিন আহমেদসহ দেশ বরেণ্য গ্রন্থাগার ও তথ্য বিজ্ঞানীগণ অংশগ্রহণ করেন।
আলোচকরা ওপেন একসেস আন্দোলনের গুরুত্ব তুলে ধরেন এবং সরকারী ও বেসরকারী পর্যায়ে ওপেন একসেস নীতিমালা থাকার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
জিটিভি এবং সারাবাংলা ডট নেট এর এডিটর ইন চিফ সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা ওপেন একসেসের সোর্স ব্যবহার করে গবেষকরা সহজে নিজেদের কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছতে পারবে এবং সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ তথ্য পাওয়ার ক্ষেত্রেও তা সহায়তা করবে বলে উল্লেখ করেন।
দৈনিক বিজ্ঞান চিন্তার সম্পাদক এবং প্রথম আলোর সহযোগী সম্পাদক আব্দুল কাইউম বলেন, ওপেন একসেস আন্দোলন গতানুগতিক তথ্য ব্যবস্থাপনা, শিক্ষা, গবেষণা এবং প্রকাশনা শিল্প থেকে ভিন্ন একটি আধুনিক ধারনা এবং পৃথিবীব্যাপী গবেষকদের জন্য কাজ করছে।
চিকিৎসক ও বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের হেপাটলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডাঃ মামুন আল মাহতাব সপ্নীল তার বক্তব্যে বাংলাদেশে গবেষণার প্রয়োজনীয়তা ও গবেষণা কার্যক্রমে জন সম্পৃক্ততার মতো মৌলিক অপরিহার্যতার কথা তুলে ধরেন।
ওপেন একসেস বাংলাদেশ এর সভাপতি কনক মনিরুল ইসলাম বলেন, গবেষণা কর্মের ক্ষেত্রে আমরা যেমন পিছিয়ে আছি, তেমনি তথ্যের অভিগম্যতার ক্ষেত্রেও পিছিয়ে আছি। ওপেন একসেস যে তিনটি বিষয় নিয়ে কাজ করে তার মধ্যে রয়েছে উন্মুক্ত তথ্য, উন্মুক্ত গবেষণা ও উন্মুক্ত শিক্ষা।
এ সময় তিনি ভবিষ্যতে ওপেন একসেস বাংলাদেশ দেশে ও বিদেশে গবেষকদের মধ্যে জ্ঞানভিত্তিক যোগাযোগ তৈরি করবে এবং নীতি নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ওপেন একসেস বাংলাদেশের সহ-সভাপতি এম এম আসাদুল্লাহ এবং আলোচনা সভা সঞ্চালনা করেন সোসাইটি ফর লিডারশীপ স্কীলস ডেভেলপমেন্ট (এসএলএসডি) এর প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক মঈন উদ্দিন চৌধুরী।
১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ বুদাপেস্ট ঘোষণা অনুযায়ী দেশে যাত্রা শুরু করে ‘ওপেন একসেস বাংলাদেশ’। অনলাইন এই প্লাটফর্মটি আন্তজার্তিক ‘ওপেন একসেস’- এর একটি শাখা, যারা উন্মুক্ত তথ্য, উন্মুক্ত গবেষণা ও উন্মুক্ত শিক্ষা নিয়ে কাজ করে থাকে।
আন্তর্জাতিক ওপেন একসেস সপ্তাহটি পালনে “সোসাইটি ফর লিডারশীপ স্কীলস ডেভেলপমেন্ট (এসএলএসডি)” এবং “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণা সংসদ” ওপেন একসেস বাংলাদেশের সহযোগী হিসেবে কাজ করছে।