চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

আগামীর বাংলাদেশ: চলমান ছাত্র আন্দোলন

এদেশের ভূখণ্ডের জন্মের সঙ্গে মিশে আছে ছাত্র আন্দোলনের গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা৷ ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ৫৪’র যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ৬২’র শিক্ষা কমিশনের বিরুদ্ধে আন্দোলন, ৬৬’র ঐতিহাসিক ৬ দফা ও ১১ দফা, ৬৯’র গণঅভ্যুত্থান, ৭০’র নির্বাচন, ৭১’র মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জনসহ প্রতিটি ঐতিহাসিক বিজয়ের প্রেক্ষাপট তৈরি ও আন্দোলন সফল করায় তৎকালীন ছাত্রছাত্রীদের ভূমিকা অপরিসীম৷ ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে যে ছাত্ররা সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছে পরবর্তীতে তারা প্রত্যেকেই এদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে একেকটি পিলার হিসেবে ভূমিকা রেখেছেন৷ ১৯৫২ সালে পূর্ববাংলায় বাম রাজনীতি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে গড়ে ওঠে ইস্ট পাকিস্তান স্টুডেন্টস ইউনিয়ন৷

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অসমাপ্ত আত্মজীবনী যে কোনো ছাত্র আন্দোলন ও ছাত্র সংগঠনগুলোর জন্য পথপ্রদর্শক৷ বঙ্গবন্ধু অল্প বয়স থেকে রাজনীতি ও অধিকার সচেতন ছিলেন এবং সক্রিয় রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করেছিলেন তিনি৷ ১৯৬৬ সালে ছাত্র আন্দোলনের ইতিহাসে যুগান্তকারী ঘটনা৷ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছয়দফা কর্মসূচি এবং পরবর্তীকালে তাঁর বিরুদ্ধে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা রুজু হলে ছয় দফা সমর্থন ও শেখ মুজিবের মুক্তির দাবিতে ছাত্রদের মধ্যে এক নজিরহীন ঐক্য গড়ে ওঠে৷ ১৯৬৯ সালে সকল ছাত্র সংগঠন সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ গঠন করে এবং জাতীয় ও সমাজতান্ত্রিক ধারণাপুষ্ট ১১ দফা দাবিনামা উপস্থাপন করে৷ এর ফলে আইয়ুব খানকে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহার ও শেখ মুজিবকে মুক্তিদানে বাধ্য হয়৷ মুক্তিলাভের পর শেখ মুজিবুর রহমান এক জনসমাবেশে ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ প্রদত্ত বঙ্গবন্ধু উপাধি গ্রহণের মাধ্যমে ছাত্রদের এ প্রভাবকে স্বীকৃতি দেন৷

১৯৭১ সালের ১ মার্চের পরে ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ বাঙালি জাতীয়তাবাদ ও বাংলাদেশ জাতিসত্তার ধারণাগুলো বাস্তবায়নের লক্ষ্যে অগ্রসর হয়৷ ১৯৭১ সালের ২ মার্চ তারা বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করে৷ পরদিন পল্টন ময়দানে আমার সোনার বাংলা জাতীয় সংগীত হিসেবে গৃহীত হয়৷ শেখ মুজিবের সাতই মার্চের ভাষণ ছিল ছাত্রদের আকাঙ্ক্ষারই বহিঃপ্রকাশ৷ ১৯৭১ সালের পঁচিশ মার্চের মধ্যরাতে জনগণের উপর পাকবাহিনীর আক্রমণ ৩ মার্চ ছাত্রদের স্বাধীনতা ঘোষণার যৌক্তিকতা প্রমাণ করে৷ ২৬ মার্চের স্বাধীনতা ঘোষণা ছিল বস্তুত ৩ মার্চ সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের স্বাধীনতা ঘোষণারই স্বীকৃতি৷

মুজিবনগর সরকার যথার্থভাবেই ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের জাতীয়তাবাদী অভিধাগুলি, যেমন দেশের নাম, জয় বাংলা স্লোগান, জাতীয় পতাকা ইত্যাদিকে স্বীকৃতি দিয়েছিল৷ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে ঘটনাবলি বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, মুক্তিযুদ্ধে ছাত্রসমাজের ভূমিকা ছিল অহঙ্কার করার মতো৷ গোটা জাতিকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ করতে অসাধারণ ভূমিকা পালন করেছিলেন বিভিন্ন স্কুল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা৷ মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে শিক্ষার্থীদের বড় অংশ সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেয়৷

হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলনে এবং ১৯৯১ সালে তার পতন ঘটানোর ক্ষেত্রে পুনরায় ছাত্ররা ঐক্য ও শক্তির পরিচয় দিয়েছে৷ ১৯৯০ সালের ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে তৎকালীন ক্ষমতাসীন সেনাশাসক জেনারেল হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ সরকারের পতন হয়৷ শুরু হয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে অগ্রযাত্রা৷

২০০২ সালের ২২ জুলাই রাত ১টায় অর্থাৎ ২৩শে জুলাই দিবাগত রাতে শামসুন্নাহার হলে ছাত্রীদের ওপর রাতের অন্ধকারে পুলিশের নির্মম নির্যাতনের ঘটনায় গড়ে ওঠা আন্দোলনে উপাচার্য অধ্যাপক আনোয়ারউল্লাহ চৌধুরী পদত্যাগ করতে বাধ্য হন৷ ২৩ শে জুলাই সকাল থেকে ছাত্রদল ব্যতীত ক্যাম্পাসের ক্রীয়াশীল সব ছাত্র সংগঠন এবং সাধারণ শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদী হয়ে ওঠে৷ ১ আগস্ট পদত্যাগে বাধ্য হন ভিসি৷

২০০৭ সালের ২০ আগস্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলার মাঠে ফুটবল খেলা দেখাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় চার শিক্ষক ও আট শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার করা হয়৷ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আটক হন আট শিক্ষক, এক কর্মকর্তা৷ দু’দিন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে অন্তত কয়েকশ জন আহত হয়৷ পরে ছাত্রদের আন্দোলনের মুখে দণ্ড পাওয়া রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের চার শিক্ষককে ডিসেম্বরে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয় তৎকালীন সরকার৷ ২০০৮ সালের জানুয়ারিতে আটক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও শিক্ষকদের ছেড়ে দেয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার৷

এই রকম হাজারো গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসে সমৃদ্ধ আমাদের ছাত্র আন্দোলনের ইতিহাস। সালাম, রফিক, জব্বার, বরকত, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, তোফায়েল আহমেদ, রাশেদ খান মেনন, মতিয়া চৌধুরী, আসম আবদুর রব, শাহজাহান সিরাজ, আবদুল কুদ্দুস মাখন, নূরে আলম সিদ্দিকী ও শহীদ নূর হোসেন থেকে শুরু করে অন্যসব জাতীয় ও আঞ্চলিক পর্যায়ের ছাত্রনেতারা দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে জাতীয় স্বার্থ রক্ষার ছাত্র আন্দোলন করতেন৷ কিন্তু এখনকার ছাত্র রাজনীতির আড়ালে টেন্ডারবাজি, দখল, মাদক নিয়ন্ত্রণ, চাঁদাবাজি এবং জঙ্গী তৎপরতার ভয়াবহতা লক্ষ্য করা যায়। দেশের প্রাচীন ছাত্র রাজনৈতিক সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ থেকে শুরু করে সকল ছাত্র সংগঠনের বিরুদ্ধেই এসব অভিযোগ আছে। কিন্তু ছাত্র সংগঠনগুলোর এই সব অনৈতিক কাজের পেছনে নিশ্চয়ই ইন্ধন দেয় না আওয়ামী লীগ বা অন্য দলগুলো? তাহলে কেন ঘটে এসব ঘটনা? এর জন্যে দায়ী ছাত্রদের নৈতিকতার স্খলন। জাগতিক লোভ লালসা আর ভোগ বিলাসিতার মরিচিকার মোহ ইদানিংকালের ছাত্রনেতাদের পথভ্রষ্ট করছে।

বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময়ে চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলন ও নিরাপদ সড়ক এই আন্দোলন দুটি থেকে শিক্ষা নেওয়ার অনেক কিছু আছে। ছাত্রদের কোটা সংস্কার আন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১১ এপ্রিল সংসদে ঘোষণা দিয়েছিলেন- সরকারি চাকরিতে কোনো ধরনের কোটাই আর থাকবে না৷ সব ধরনের কোটা তুলে দেয়া হবে৷ আর এ নিয়ে কাজ করতে মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে নির্দেশনাও দেয়া হয়৷ এরপরে একদিন মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম জানান- ‘সহসাই কোটা সংস্কার হচ্ছে না৷ আরো সময় লাগবে৷’ তিনি আরো বলেন- ‘কমিটি এখনও কাজ শুরু করেনি৷ কোটা সংস্কারের বিষয়টি আপনারা যতটা সহজ মনে করেন কাজটা তত সহজ নয়৷ এটি অত্যন্ত জটিল ও কঠিন কাজ৷ এখন নীচু লেভেলে কাজ চলছে৷ ওপর লেভেল পর্যন্ত আসতে তো কিছুটা সময় লাগবে৷ এটি সময়সাপেক্ষ বিষয়৷’ কিন্তু ওই দিন বিকেলে সরকার এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে কোটা সংস্কারে মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে প্রধান করে সাত সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে৷ কমিটিকে ১৫ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে৷ কিন্তু এর আগে কোটা সংস্কার আন্দোনকারীরা হামলার শিকার হন৷ পরের দুইদিনও তাদের ওপর হামলা হয়৷ আটক করা হয় কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতা রাশেদকে৷ আর হামলায় গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন আরেক নেতা নুরুল৷

কোটা সংস্কার আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন অভিযোগ করেন- ‘প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার তিন মাসেও কোটা সংস্কারের কোনো প্রজ্ঞাপন হয়নি৷ তাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় লাইব্রেরির সামনে আমরা প্রজ্ঞাপনের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন ডাকি৷ সেখানেই আমাদের ওপর হামলা করে ছাত্রলীগ৷ এরপর আন্দোলনকারীদের খুঁজে খুঁজে মারধর করা হয়৷এর প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জড়ো হওয়া আন্দোলনকারীদের ওপরও হামলা হয়৷ হামলায় আমি ও নুরুলসহ কয়েকজন আহত হই৷ রাশেদকে গ্রেপ্তার করা হয়৷’ তিনি অভিযোগ করেন- ‘সোমবারও শহীদ মিনারে প্রতিবাদী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায় ছাত্রলীগ৷ রাশেদসহ আমাদের চারজন শিক্ষার্থী নিখোঁজ আছে৷ তারা কোথায় আমরা জানি না৷ আবারো হামলার আশঙ্কায় আছি৷ হুমকি দেয়া হচ্ছে৷ ঢাকায় আমরা বাইরে বের হতে পারছি না৷’ তিনি বলেন- প্রধামন্ত্রী কোটা সংস্কারের যে ঘোষণা দিয়েছেন তা তিন মাসেও বাস্তবায়ন হয়নি৷ আমরা তো মাঠে থাকতে চাই না৷ আমাদেরও তো পড়াশোনা আছে৷ মন্ত্রিপরিষদ সচিব সকালে বলেন, সহসা কোটা সংস্কার হবে না৷ আর বিকেলে সরকার সংস্কারের জন্য কমিটি গঠন করে ১৫ দিনের মধ্যে রিপোর্ট দেয়ার কথা বলে৷ এই কমিটি যদি আগে গঠন করা হতো, যদি ঠিক সময়ে প্রতিবেদন দেয়া হতো, তাহলে এই নতুন পরিস্থিতির উদ্ভব হতো না৷ আমরা চাই, কোটা সংস্কারে আর দেরি করা হবে না৷ আটকদের ছেড়ে দিতে হবে, আহতদের সরকারি খরচে চিকিৎসা দিতে হবে এবং হামলাকারী ছাত্রলীগ নেতা কর্মীদের আইনের আওতায় আনতে হবে৷’

কোটা সংস্কারএই হামলার জন্য সরাসরি যাদের দায়ী করা হয়েছে, তাদের মধ্যে একজন হলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আল আমিন রহমান৷ হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, ‘আমরা হামলা করিনি, আমরা তাদের প্রতিহত করেছি৷ আমরাও কোটা সংস্কারের পক্ষে৷ প্রধানমন্ত্রী সংস্কারের ঘোষণা দিয়েছেন৷ কিন্তু জামায়াত শিবির, ছাত্রদলের কিছু লোক এই ইস্যু ব্যবহার করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চেয়েছিল৷ আমরা তাদের তা করতে দেইনি৷ আমরা ক্যাম্পাসের শৃঙ্খলা রক্ষা করছি৷’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম গোলাম রব্বানি বলেন, ‘হামলার ব্যাপারে আমাদের কাছে কেউ অভিযোগ করেনি৷ দুয়েকজন ছাত্র ব্যাক্তিগত পর্যায়ে কথা বলেছেন৷ আমরা তা সেভাবেই দেখছি৷ আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কোনো বাইরের ইস্যু নিয়ে বিশৃঙ্খলা করতে দেবো না৷’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা রক্ষার দয়িত্ব ছাত্রলীগের কিনা–এ প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘কোনো ব্যক্তি বা সংগঠনের কাছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইজারা দেয়া হয়নি৷ এখানে প্রশাসন আছে, নিয়ম আছে৷ ছাত্র শিক্ষক সবাই মিলে আমরা এখানকার শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষা করি৷’

যাকে নিখোঁজ বলা হচ্ছিল, কোটা সংস্কার আন্দোলনের সেই ফারুক হাসানকে শাহবাগ থানা পুলিশ গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠায়৷ ঢাকা মেট্রেপলিটন পুলিশের উপ কমিশনার মিডিয়া মাসুদুর রহমান বলেন, ‘তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগে মামলা হয়েছে৷ তার সঙ্গে তরিকুল ইসলাম এবং জসিমউদ্দিন নামে আরো দু’জনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে৷’ ফারুককে ছাত্রলীগ নেতা আল আমিন রহমান শহীদ মিনার এলাকা থেকে তুলে নিয়ে থানায় দিয়ে আসে৷

এই বছরের ১৭ ফেব্রুয়ারি থেকে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের জন্য ধারাবাহিক আন্দোলন শুরু হয়৷ সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা ৩০, জেলা ১০, নারী ১০ এবং উপজাতি কোটা ৫ শতাংশ৷ এই ৫৫ শতাংশ কোটায় পূরণযোগ্য প্রার্থী পাওয়া না গেলে সেক্ষেত্রে এক শতাংশ পদে প্রতিবন্ধী নিয়োগের বিধান রয়েছে৷ তবে সরকারি, স্বায়ত্বশাসিত, আধা স্বায়ত্বশাসিত, বিভিন্ন করপোরেশন ও দফতরে সরাসরি নিয়োগে জেলার জনসংখ্যার ভিত্তিতে জেলাওয়ারি কোটা পুনঃনির্ধারণ করা হয়৷ সর্বশেষ ২০০৯ সালের ২০ ডিসেম্বর জেলাওয়ারি কোটা নির্ধারণ করা হয়েছিল৷ ১১ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী কোটা বাতিলের ঘোষণা দিয়ে কমিটি গঠনের কথা বললেও বাস্তবে কমিটি গঠন হয় সেই ঘোষণার তিন মাস পর৷ এই কোটা সংস্কার আন্দোলনে ছাত্রলীগ সাধারণ ছাত্রদের পাশে না থেকে উল্টো এই আন্দোলনের বিরুদ্ধে থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে। তাহলে ছাত্রলীগ কি সাধারণ ছাত্রদের পালস বুঝতে পারছে না? নাকি রাষ্ট্রযন্ত্রের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত সংগঠনটি?

এই সব প্রশ্ন যখন উঠছে গণমাধ্যম এবং দেশের সাধারণ মানুষের মধ্যে সেই সময়ে বিমানবন্দর সড়কে বাসের চাপায় দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর প্রতিবাদে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি সড়কে অবস্থান নেয় স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা। এতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে পুরো ঢাকা প্রায় স্থবির পড়ে। দুই বাসের রেষারেষির সময় রাজধানীর কুর্মিটোলায় উড়াল সেতুর ঢালে রাস্তার পাশে অপেক্ষমাণ শিক্ষার্থীদের ওপর বাস তুলে দেন জাবালে নূর পরিবহনের চালক। এতে শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী নিহত এবং আরও নয়জন আহত হয়। আহত শিক্ষার্থীদের সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। সায়েন্স ল্যাবরেটরি মোড়ে সিটি কলেজ, ধানমন্ডি আইডিয়াল কলেজ, ঢাকা কলেজ, গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি কলেজসহ ধানমন্ডি ও আশপাশের কয়েকটি কলেজের কয়েক শ শিক্ষার্থী রাস্তা আটকে বিক্ষোভ করে।

পুলিশের ট্রাফিক ধানমন্ডি জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) আকরাম হোসেন বলেন, কাঁটাবন বাটা সিগন্যাল মোড়ে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করে। ধানমন্ডি থেকে শাহবাগমুখী যান চলাচল বন্ধ ছিল। সব গাড়ি পান্থপথ হয়ে ঘুরে গিয়েছে। বিক্ষোভস্থলে পুলিশ ছিল। পরে সায়েন্স ল্যাবরেটরি মোড় থেকে সরে যায় শিক্ষার্থীরা। রামপুরা ব্রিজে রাজারবাগ এলাকায় বিভিন্ন স্কুল কলেজে শিক্ষার্থীরা এবং শান্তিনগর মোড়ে হাবিবুল্লাহ বাহার কলেজের শিক্ষার্থীরা অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করে। আগারগাঁও এলাকায়ও রাস্তায় নেমে আসে শিক্ষার্থীরা। মতিঝিলে শাপলা চত্বরের সামনে অবস্থান নেয় নটরডেম কলেজের শিক্ষার্থীরা। দুপুর থেকে ওই কলেজের কয়েকশ শিক্ষার্থী শাপলা চত্বরের সামনে জড়ো হয়। শিক্ষার্থীরা অবস্থান নিয়ে বিচার চাই, বিচার চাই স্লোগান দিতে থাকে। এ সময় যান চলাচল বন্ধ করে দেয় তারা। ফলে যাত্রাবাড়ী, পল্টন, বিজয়নগর এবং শাহবাগ থেকে মতিঝিলে আসার পথ বন্ধ হয়ে যায় । এর আগে কমার্স কলেজসহ আশপাশের বেশ কিছু স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা মিরপুর-১ নম্বর গোল চত্বরের রাস্তায় অবস্থান নেয়। সাড়ে ১০টা থেকে শিক্ষার্থীরা ওই পথে যান চলাচল বন্ধ করে দেয়। কিছু বাস যেতে চাইলে শিক্ষার্থীদের তাড়ার মুখে গতিপথ পরিবর্তন করেন চালকেরা। তবে স্কুলগামী বাস ও শিক্ষার্থী বহনকারী প্রাইভেট কারগুলোকে যেতে দেওয়া হয়। এ সময় মিরপুর-১, ২, ১০ নম্বর গোল চত্বর, কাজীপাড়া ও ১১ নম্বর এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে পুরো এলাকা স্থবির হয়ে যায়। এসব এলাকায় শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করে।

শিক্ষার্থীরা ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’, ‘আমার ভাই মরল কেন, সরকার জবাব চাই’, ‘আমার বোন মরল কেন, সরকার জবাব চাই’—এমন বিভিন্ন স্লোগান দেয়। ৪০০ থেকে ৫০০ শিক্ষার্থী পুরো এলাকায় অবস্থান নেয়। সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মিরপুর এলাকার বিভিন্ন স্কুল কলেজ থেকে আরও শিক্ষার্থী এসে এই বিক্ষোভে যোগ দেয়। তবে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পুলিশ তাদের সরিয়ে দিলে তারা বিভিন্ন অলিগলিতে অবস্থান নেয়। এসব সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হলেও গাড়ির সংখ্যা কম। শহীদ রমিজউদ্দীন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের ৬০ থেকে ৭০ জন শিক্ষার্থী মুখে কালো কাপড় বেঁধে মানববন্ধনের উদ্দেশ্যে রাজধানীর হোটেল রেডিসনের সামনে অবস্থান নেওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় পুলিশ তাদের সরিয়ে দেয়। ফার্মগেটে বাবুল টাওয়ারের সামনে স্থানীয় কয়েকটি কলেজের শিক্ষার্থীরা অবস্থান নিলে ওই সড়ক দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। কিছু সময় পর শিক্ষার্থীদের সরিয়ে দেয় পুলিশ। তবে ফার্মগেট এলাকায় শুধুমাত্র বিআরটিসির বাস চলতে দেখা যাচ্ছে। শিক্ষার্থী হত্যার প্রতিবাদে ৪ দিন ধরে রাজপথে শিক্ষার্থীরা যাত্রাবাড়ি শনির আখড়া, উত্তরা, বিমানবন্দর সড়ক, এমইএস, জিয়া কলোনি চেকপোস্ট, শেওড়া, মিরপুর, ধানমন্ডিসহ সারা ঢাকা শহরে বিক্ষোভ করছে শিক্ষার্থীরা। প্রতিদিন সকাল নয়টা বাজতে নাবাজতেই বিমানবন্দর সড়কে জড়ো হতে শুরু করে শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের শিক্ষার্থীরা।কুর্মিটোলায় হোটেল রেডিসনের উল্টো দিকে দুর্ঘটনাস্থলে শত শত শিক্ষার্থী জড়ো হচ্ছে প্রতিদিন। একই অবস্থা মিরপুর, ধানমন্ডি, যাত্রাবাড়ি, উত্তরাসহ পুরো ঢাকায়। তারা সড়ক অবরোধ করতে চাইলে পুলিশ বাধা দেয়। শিক্ষার্থীদের ধরে ধরে উত্তরাগামী বাসগুলোতে তুলে দেয় পুলিশ। কিন্তু রমিজ উদ্দিন কলেজসহ আশপাশের অন্তত ১০টি স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা স্রোতের মতো আসতে থাকে। পুলিশ জলকামান, সাঁজোয়া যান নিয়ে এক দফা ধাওয়া দিলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়। শিক্ষার্থীরা রাস্তা আটকে যানবাহন ভাঙচুর শুরু করে। এরপর পুলিশ সরে গিয়ে ওই রাস্তা দিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দেয়। শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে রেল চলাচলও বন্ধ হয়ে যায়। রাস্তা অবরোধ করে শিক্ষার্থীরা দফায় দফায় ‘আমরা বিচার চাই’ (উই ওয়ান্ট জাস্টিস) স্লোগান দেয়। এ সময় তারা ওই চালকের ফাঁসি, নৌমন্ত্রীর পদত্যাগ, দুর্ঘটনাস্থলে স্পিডব্রেকার তৈরি, নিহত শিক্ষার্থীদের ক্ষতিপূরণসহ কয়েকটি দাবি করে।

চলমান এই ছাত্র আন্দোলনে বর্তমানে শিক্ষার্থীরা রাস্তার দখল নিয়ে অধিকাংশ গাড়ি ও ড্রাইভারের লাইসেন্স পরীক্ষা নিরীক্ষা করছে এবং নিজেরাই ট্রাফিক কন্ট্রোল করছে। লাইসেন্সবিহীন কোন গাড়িকে তারা রাস্তায় চলতে দিচ্ছে না। এমনে কি কোমলমতি শিক্ষার্থীরা মন্ত্রী এবং পুলিশের উদ্ধর্তন কর্মকর্তাদের গাড়ির কাগজপত্রও পরীক্ষা নিরীক্ষা করছে।

এই পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওই বাস চালকের শাস্তি নিশ্চিত করার আশ্বাস দিয়ে শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফিরে যাওয়ার অনুরোধ জানিয়ে দূর্ঘটনায় নিহত দুই শিক্ষার্থীর পরিবারকে ক্ষতি পূরণ হিসেবে তাদের পিতা মাতাকে ২০ লাখ টাকা করে মোট ৪০ লাখ টাকার অনুদান দেন। পরিস্থিতিকে স্বাভাবিক করতে বৃহঃষ্পতিবার সারাদেশে একযোগে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বন্ধ ঘোষণা করে সরকার। কিন্তু তা উপেক্ষা শিক্ষার্থীরা এই দিনও রাজধানীর সব জায়গায় রাজপথে নিরাপদ সড়কের দাবিতে নিজেদের আন্দোলন অব্যাহত রাখে।

চলমান এই ছাত্র আন্দোলনের মধ্যেই বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর অর্পিত ক্ষমতাবলে আগামী ২ বছরের জন্য বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের কমিটি অনুমোদন করা হয়। সভানেত্রীর পক্ষে কমিটি ঘোষণা করেছেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটিতে নতুন সভাপতি মোঃ রেজানুল হক চৌধুরী শোভন, সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সঞ্জিত চন্দ্র দাস, সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসাইন এবং ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সভাপতি মো. ইব্রাহিম ও সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান হৃদয়। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সভাপতি মেহেদী হাসান এবং সাধারণ সম্পাদক হন মোঃ জোবায়ের আহমেদ।

ছাত্রদের এই আন্দোলনকে যৌক্তিক বলে মন্তব্য করেছেন ছাত্রলীগ এর নব নির্বাচিত সভাপতি মোঃ রেজানুল হক চৌধুরী শোভন। তিনি বলেন- ‘শিক্ষার্থীদের অবরোধের মুখে রাজধানীতে গণপরিবহন একেবারেই কমে গেছে। ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান ও শিক্ষার্থীদের যৌথ অভিযানের মুখে নগরীতে অবৈধ যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে অফিসগামী যাত্রীরা পড়েছেন বিপাকে। সরকারি নির্দেশে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের নির্দেশনা থাকলেও শিক্ষার্থীরা সকাল থেকেই ইউনিফর্ম পরে সড়কে অবস্থান নেন। দাবি মানা না পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা আন্দোলন থেকে পিছপা হবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছে- এই সব বিষয়কে আমরা ইতিবাচক হিসেবে নিয়েছি। আমরা শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবীর সাথে একাত্ম।’ এই বিষয়ে মোঃ রেজানুল হক চৌধুরী শোভন আরও বলেন- ‘রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কের কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের সামনে রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান ফ্লাইওভারের মুখে জাবালে নূর পরিবহনের তিনটি বাসের প্রতিযোগিতা করে যাওয়ার সময় এক বাসের চাপায় দুই শিক্ষার্থী নিহত হয়। এই ঘটনা পুরো জাতিকে নাড়িয়ে দিয়েছে। শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের উচ্চমাধ্যমিক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আব্দুল করিম রাজীব ও প্রথম বর্ষের ছাত্রী দিয়া খানম মীম। তাদের পরিবারের প্রতি আমরা গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করছি। আমরা চেষ্টা করবো আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পাশে থেকে দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করে নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করতে সরকারকে সহযোগিতা করে শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলন সফল করে তাদেরকে ক্লাস রুমে ফিরিয়ে আনতে।’

কমিটি ঘোষণার পরপরই ছাত্রলীগের নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী বাস চাপায় শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় চলমান আন্দোলনে সমর্থন ও একাত্মতা প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, দীর্ঘদিনের ক্ষোভের বহি:প্রকাশ হিসেবে স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নেমে এসেছে। আমরা সবসময় শিক্ষার্থীদের সাথে আছি। তাদের যৌক্তিক আন্দোলনের সঙ্গে আমরা সবসময় একাত্ম। গোলাম রাব্বানী বলেন, শিক্ষার্থীরা নিজেরা ড্রাইভিং লাইসেন্স পরীক্ষা করছেন এবং রুট পারমিট দিচ্ছেন, এগুলো আমরা ইতিবাচকভাবে নিচ্ছি। তারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনী, ট্রাফিক পুলিশ ও বিআরটিএ’র সংশ্লিষ্টদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে এটা আপনাদের দায়িত্ব। অথচ এটা আমরা পালন করিছ, যা আপনাদের পালন করার কথা ছিল। তিনি জানান, অতীতের ভুল ত্রুটি কাটিয়ে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও জীবনবোধ সকল কর্মীদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে কাজ করে যাবে নতুন কমিটি।

ছাত্রলীগের নতুন এই নেতৃত্বের সামনে এটি একটি বড় সুযোগ। চলমান সংকট নিরসন করতে তারা যদি শিক্ষার্থীদের পাশে থেকে এই আন্দোলনকে ফলপ্রসু করে ছাত্রছাত্রীদের ক্লাস রুমে ফেরত পাঠাতে পারে তবে তা হবে ছাত্রলীগের বড় সফলতা। কিন্তু নতুন নেতৃত্বের ছাত্রলীগ তাদের সেই দায়িত্ব পালন করতে পারে কিনা এখন সেটিই দেখার বিষয়? অতীতের ভুল ভ্রান্তি আর দুর্নাম ঘুচিয়ে সত্যিকার অর্থে সাধারণ ছাত্রদের প্রাণের সংগঠন হয়ে উঠবে ছাত্রলীগ এমনটাই সবার প্রত্যাশা।

(এ বিভাগে প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব। চ্যানেল আই অনলাইন এবং চ্যানেল আই-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে প্রকাশিত মতামত সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে)