নানা নাগরিক সমস্যার নগরী ঢাকা, সেই নগরী ঢাকার স্বল্পকালীন মেয়র সদ্য প্রয়াত আনিসুল হক। মেয়র হয়ে উনি ঢাকাকে বদলে দেবার স্বপ্ন দেখেছিলেন আর দেখিয়েছিলেন। মোনায়েম খানের বাড়ি থেকে শুরু করে অলিগলির অবৈধ দখলদার মুক্ত করতে তার বুলডোজার দ্বিধা করেনি। টেলিভিশনে উপস্থাপক আনিসুল হকের উচ্চারণ যেমন মুগ্ধ করেছে লাখো মানুষকে, তেমনি নগরবাসী ধীরে ধীরে তার বিভিন্ন উন্নয়ন পদক্ষেপে মুগ্ধ হতে শুরু করেছিল। নগরীর রাস্তাঘাট বড় করা থেকে শুরু করে জলাবদ্ধতা নিরসনে তার পদক্ষেপের সুফল হয়তো ধীরে ধীরে পাবে জনগণ, কিন্তু তা দেখে যেতে পারলেন না তিনি নিজে। একজন দলীয় পদপ্রার্থী হিসেবে মেয়র নির্বাচিত হয়েও তিনি সর্বদলীয় জনগণের মেয়রের ভালোবাসা পেতে শুরু করেছিলেন। ‘স্কাই ইজ দ্যা লিমিট’ আর ‘মানুষ তার স্বপ্নের চেয়ে বড়’ উক্তি দিয়ে তিনি চেষ্টা করে গেছেন ঢাকাবাসীকে একটু স্বাচ্ছ্যন্দ এনে দিতে। গণপরিবহন থেকে শুরু করে যানজট, দখলদার উচ্ছেদসহ বাসযোগ্য আধুনিক ঢাকা গড়তে অল্প সময়ের মধ্যে বেশ কিছু সাহসী পদক্ষেপ নিয়েছিলেন তিনি। যদিও ইতিমধ্যে তার অর্জন বেদখল হওয়া আর অসমাপ্ত কাজ থেমে যাবার আশঙ্কা করছেন অনেকে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু বিষয়ক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সেরকমই বলেছেন আনিসুল হকের মরদেহ দেখতে গিয়ে। তিনি বলেছেন, আনিসুল হকের অসমাপ্ত কাজ শেষ করাই এখন প্রধান চ্যালেঞ্জ। চিরনিদ্রায় শায়িত আনিসুল হককে হয়তো নগরীর কোনো সমস্যা আর শঙ্কা স্পর্শ করবে না, কিন্তু আমরা ওবায়দুল কাদেরের মতো শঙ্কিত। নিয়মের বেড়াজালে কেউ না কেউ আনিসুল হকের জায়গায় আসবেন। তার হাতেই হয়তো শেষ হবে সদ্য প্রয়াত এই মেয়রের কর্মপরিকল্পনার অসমাপ্ত উন্নয়নযাত্রা, বেদখল হবে না বিভিন্ন অর্জন। তার আত্মার শান্তি কামনা করে শঙ্কার মধ্যেও এই আমাদের প্রত্যাশা।