অনলাইনের মাধ্যমে নিলামে বিক্রি করে দিতে ইটালির মিলানে অপহরণ করা হয়েছিল এক ব্রিটিশ মডেলকে। শুধু তাই নয়; তার শরীরে মাদকদ্রব্য ঢুকিয়ে অচেতন করে ছ’দিন ঢুকিয়ে রাখা হয় একটি ড্রয়ারে।
২০ বছর বয়সী ওই তরুণী তার এজেন্টের মাধ্যমে একটি ফটোশ্যুটে অংশ নিতে যুক্তরাজ্য থেকে মিলানে যান। সেখান থেকেই তাকে অপহরণ করে টানা ছ’দিন বন্দী করে রাখা হয়।
ইটালি পুলিশ জানিয়েছে, অপহরণের দায়ে লুকাজ হারবা নামের ৩০ বছর বয়সী যুক্তরাজ্যের অধিবাসী এক পোলিশ নাগরিককে গ্রেফতার করা হয়েছে।
ওই মডেল গত ১০ জুলাই মিলানে পৌঁছান। তার নাম-পরিচয় প্রকাশ না করে ব্রিটিশ পররাষ্ট্র কার্যালয় শুধু জানায়, তারা একজন ব্রিটিশ নারীকে কনস্যুলার সহায়তা দিচ্ছে।
পুলিশের বরাতে বিবিসি জানিয়েছে, মিলানে পৌঁছানোর পরদিন ওই নারী একটি অ্যপার্টমেন্টে যান। তাকে বলা হয়েছিল, সেখানে ফটোশ্যুট হবে। কিন্তু ওই অ্যাপার্টমেন্টে পৌঁছানোর পরই দুই ব্যক্তি তাকে হঠাৎ আক্রমণ করে।
পুলিশ জানিয়েছে, প্রথমে ওই মডেলের দেহে জোর করে মাদকদ্রব্য ঢোকানো হয়। তারপর হাতে কাতকড়া পরিয়ে অজ্ঞান অবস্থায় একটি ব্যাগে ভরে গাড়ির ট্রাংকে ঢোকানো হয়। পরে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় তুরিনের উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত বোর্গিয়ালের পরিত্যক্ত একটি বাড়িতে।
ইটালীয় আইনজীবী পাওলো স্তোরারি বিবিসিকে জানান, ভিক্টিমকে কেটামাইন নামক মাদক দিয়ে আচ্ছন্ন করে কয়েক ঘণ্টা টানা গাড়ি চালিয়ে ওই বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। ‘ভেবে দেখুন, তার অ্যাজমা (হাঁপানি) থাকলে কী অবস্থা হতো,’ বলেন তিনি।
পরিত্যক্ত ওই বাড়িতে নিয়ে শোওয়ার ঘরে থাকা কাঠের চেস্ট অব ড্রয়ারে হাতকড়া পরা অবস্থায়ই ছ’দিন ঢুকিয়ে রাখা হয়। সপ্তম দিনে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে মিলানে অবস্থিত ব্রিটিশ কনস্যুলেটে নিয়ে যায়।
তদন্ত কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গ্রেফতার হওয়া সন্দেহভাজন অপহরণকারী এ পর্যন্ত বেশ কয়েকটি অনলাইন নিলামের আয়োজন করেছে অপহরণ করা মেয়েদের বিক্রির জন্য। সেসব নিলামে মেয়েদের বিস্তারিত বর্ণনা এবং প্রাথমিক মূল্যও উল্লেখ করা ছিল।
লুকাজ হারবা একটি এনক্রিপটেড অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ওই মডেলের এজেন্টের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাকে নিলামে বিক্রি না করার বিনিময়ে ২ লাখ ৩০ হাজার ব্রিটিশ পাউন্ড দাবি করে।
হারবা এজেন্টকে জানায়, সে ‘ব্ল্যাক ডেথ গ্রুপ’ নামের একটি চক্রের সদস্য। ওই চক্র ইন্টারনেটের গোপন ও অনিরাপদ অংশে (ডিপ ওয়েব) মানব পাচারের কাজ করে।