যুক্তরাজ্যের পশ্চিম লন্ডনের লাটিমার রোডে বহুতল অ্যাপার্টমেন্ট ভবনে ভয়াবহ আগুনে এখন পর্যন্ত মোট ১২ জন নিহত হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে লন্ডন পুলিশ কর্তৃপক্ষ। তবে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ফায়ার সার্ভিসের বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত ৬৫ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। অ্যাপার্টমেন্ট আটকে পড়া অনেকেই প্রাণ বাঁচাতে ওপর থেকে লাফ দিয়েছেন। অনেকে আবার সন্তানদের বাঁচাতে তাদেরকে ওপর থেকে ছুঁড়ে ফেলেছেন।
দেশটির প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে বলেছেন, ঘটনার তদন্ত করা হবে এবং এখান থেকে শিক্ষা নেয়ার কিছু থাকলে তা নেয়া হবে।
ল্যানকাস্টার ওয়েস্ট এস্টেটের গ্রেনফেল টাওয়ার নামের ওই ২৪ তলা আবাসিক টাওয়ার ব্লকে মাঝরাতে আগুন ধরে বলেই ভবনের বেশি অধিবাসী সেখানে আটকা পড়েন। টাওয়ারে মোট ১২০ টি ফ্লাট ছিল। ওই ভবনে ৬শ’র বেশি মানুষের বসবাস ছিল। তবে আগুনের কারণ এখনো জানা যায়নি।
তবে এটা পরিষ্কার যে আগুন ছড়িয়ে পড়লে কয়েকশ’ মানুষ ভবনের ভেতর আটকে পড়ে কারণ বেশির ভাগ মানুষ তখন ঘুমাচ্ছিল।
লন্ডন অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিসের দেয়া তথ্য মতে, ৬৮ জনকে উদ্ধার করে লন্ডনের ৬ টি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে। তাদের মধ্যে ১০ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এছাড়াও ১০ জন নিজ দায়িত্বে চিকিৎসা নিয়েছেন।
চতুর্থ তলা থেকে এর সূত্রপাত হয় বলে প্রত্যক্ষদর্শীদের ধারণা। মাত্র ১৫ মিনিটের মধ্যেই তা ওপর পর্যন্ত ছড়িয়ে যায়।
বেঁচে আসা অনেকেই বলেন তাদের বেঁচে ফেরাটাই বিস্ময়কর। চারদিকে শুধুই কালো ধোঁয়া, অন্ধকার, শিশুদের চিৎকার, ‘এটা যেনো হলিউড মুভির কোনো দৃশ্য।’
একজন বাবাকেও তার দুই সন্তানকে বাইরে ছুড়ে ফেলতে দেখেন একজন। একজন নারী চিৎকার করেন, ‘আমি বেরুতে চাই, আমি আমার বাচ্চাকে বাঁচাতে চাই।’
এ সময় নিচে অপেক্ষমান, প্রত্যক্ষদর্শী, বেঁচে ফেরা অনেকেই তাদের অক্ষমতার কথা প্রকাশ করে বলেন, ‘আমাদের কিছুই করার ছিল না।’
লন্ডন ফায়ার ব্রিগেডের সহকারি কমিশনার স্টেভ আপটার বলেন, টাওয়ারে ভেতরের এখনো আগুন রয়েছে। ফলে ভেতরে প্রবেশ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। তবে প্রায় সব জায়গায় খোঁজ করা হয়েছে এবং খোঁজ অব্যাহত থাকবে।
তবে বিল্ডিং ভেঙ্গে পড়ার কোনো সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছে ফায়ার ব্রিগেড।
১৯৭৪ সালে গ্রেনফেল টাওয়ার নির্মাণ করে কেনসিংটন অ্যান্ড চেলসি বরোহ্ কাউন্সিল। গত বছরই ভবনটির মেরামতের পেছনে ১ কোটি ব্রিটিশ পাউন্ড ব্যয় করা হয়। কাউন্সিলই ওই মেরামতের অর্থায়ন করেছিল।