শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেছেন, বৈশাখ বাঙালির ঐতিহ্য আর উৎসবের ধ্বনি।
বাঙালির নববর্ষ পয়লা বৈশাখ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার রাজধানীর বাংলা একাডেমিতে ঐতিহ্যবাহী বৈশাখী মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শিল্পমন্ত্রী বলেন, বাঙালির হাজার বছরের জাতির ঐতিহ্য বৈশাখী মেলা। মেলাকে কেন্দ্র করে ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সবাই মিলেমিশে পালন করি। দেশের বাইরের যারা বাঙালি আছে তারা তাদের মনন থেকে পালন করছে নববর্ষ।
তিনি বলেন, যারা উদ্যোক্তা আছেন, মেলার মাধ্যমে তারা কেনাবেচা করতে পারবেন, শিশুরা ঐতিহ্য ধারণ করতে শিখছে।

মেলার সঙ্গে যারা সম্পৃক্ত রয়েছেন তাদের সকলকে ধন্যবাদ জানান শিল্পমন্ত্রী।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেন, বৈশাখী উৎসবে থাকে প্রাণের ছোঁয়া, থাকে উচ্ছ্বাসের বাঁধভাঙা জোয়ার। অতীতের ভুলত্রুটি ও ব্যর্থতা ভুলে নতুন করে সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনায় উদযাপিত হয় বাঙালির নববর্ষ। শিশু-যুবা-বৃদ্ধসহ সব বয়সের সব শ্রেণি মানুষ এ দিনটি উদ্যাপন করে। বাংলা নববর্ষ বাঙালির ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির প্রধান উপাদান। এ উৎসবের প্রধান অনুষঙ্গ বৈশাখী মেলা।
তিনি বলেন, দেশের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, সাহিত্য ধারণ করে সম্পৃক্ত থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় সেটাই করে যাচ্ছে।
এরআগে সকাল ১১টায় বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে ১০ দিনব্যাপী বৈশাখী মেলার শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিসিক-এর চেয়ারম্যান মুহা. মাহবুবর রহমান।
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব জাকিয়া সুলতানা এবং সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আবুল মনসুর।
বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) ও বাংলা একাডেমির উদ্যোগে চলবে এই মেলা। মেলায় সম্পৃক্ত রয়েছে শিল্প মন্ত্রণালয় ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে চ্যানেল আই স্টুডিও থেকে রেজোয়ানা চৌধুরী বন্যা ও সুরের ধারার শিল্পীদের পরিবেশনায় ‘বৈশাখের প্রাণ যে গান’ অনুষ্ঠিত হয়।
চ্যানেল আইয়ের পর্দায় মেলার উদ্বোধন অনুষ্ঠান নিবেদন করছে ঐক্যডটকমডটবিডি পাওয়ার্ড বাই ইন্ডিক্যাফে গ্লোবাল। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সঞ্চালনায় ছিলেন অপু মাহফুজ।
মেলায় উদ্যোক্তাদের পণ্যের পসরা
উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা যায়, প্রতিটি স্টলেই দেশি পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছে উদ্যোক্তারা। মেলায় পাওয়া যাচ্ছে, একতারা, দোতারা, খঞ্জনি, ডুগডুগি, নকশি কাঁথা, মুখোশ, চাদর, কুশন, শতরঞ্জি, মাটির গহনা, তাঁত ও জামদানি শাড়ি, থ্রি-পিস, কাঁসা পিতলের বাসন, বাঁশের তৈরি ডালা, চালুন, হাতে তৈরি বিভিন্ন গহনা ছাড়াও আরও বিভিন্ন হরেক রকমের জিনিসপত্র।
হস্তশিল্পের একজন উদ্যোক্তা জানালেন, বিক্রি ভালো হচ্ছে। দিন বাড়ছে মানুষের সমাগমও বৃদ্ধি পাচ্ছে। মেলায় রয়েছে নানা রকম খাদ্যপণ্যও- লাড্ডু, বাতাসা, বালুসাই, মুরালি, মোয়া, মিঠাই, নানা ধরনের ও মিষ্টান্ন-সামগ্রী। এর মধ্যে বেশি বিক্রি হচ্ছে বালুসাই মিষ্টি।
মেলায় ঘুরতে আসা দর্শনার্থী সানজিদা খাতুন বললেন, ‘আমাদের গ্রামের ঐতিহ্য বহন করে, এমন অনেক কিছুই মেলায় এসে দেখেছি। মেলায় এসে আমার খুব ভালো লাগছে।’