চলচ্চিত্র গবেষক ও লেখক আনুপম হায়াত বলেছেন, ‘বাদল রহমান বাংলাদেশে চলচ্চিত্র শিক্ষার সূচনা করেছেন। তিনি প্রথম ভারতের পুনে ফিল্ম ইনস্টিটিউটে চলচ্চিত্র বিষয়ক পড়াশুনা করেন। দেশে এসে চলচিত্র নির্মাণের পাশাপাশি শিক্ষকতা শুরু করেন। যে সময়ে চলচিত্রে কাজ করাটাই নিচু কাজ হিসেবে দেখা হতো, সে সময়ে তিনি চলচ্চিত্র শিক্ষাদানে মনোনিবেশ করেন। তিনি দেশের প্রথম শিশুতোষ চলচ্চিত্রও নির্মাণ করেন।’
গতকাল রোববার বিকালে রাজধানীর বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সেমিনার কক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। চলচ্চিত্রকার বাদল রহমানের ৭ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত বাদল রহমান স্মারক বক্তৃতার আয়োজন করে বাংলাদেশ মুভিয়ানা ফিল্ম সোসাইটি ও বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি।
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন চলচ্চিত্রকার মসিহউদ্দিন শাকের। অনুষ্ঠানের শুরুতে অসুস্থ চলচ্চিত্রকার সালাউদ্দিন জাকি মোবাইল কনফারেন্সের মাধ্যমে একটি ছোট অথচ তাৎপর্যপূর্ণ বক্তব্য দেন। সালাউদ্দিন জাকি বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধা, চলচ্চিত্রকার ও চলচ্চিত্র সংসদের অন্যতম পথিকৃৎ ছিলেন বাদল রহমান। গত শতাব্দীর ষাটের দশকের উত্তাল রাজনৈতিক আন্দোলন থেকে শুরু করে মুক্তিযুদ্ধ এবং পরবর্তী সময়ে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে ছিলেন কখনো কর্মী, কখনো সম্মুখ সারির নেতা।’
আয়োজক, ম্যুভিয়ানা ফিল্ম সোসাইটির সভাপতি বেলায়েত হোসেন মামুন বলেন, ‘চলচ্চিত্রকার বাদল রহমান বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শিক্ষার প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। তিনি আজীবন দেশের চলচ্চিত্র সংসদ আন্দোলনের সাথে যুক্ত থেকেছেন। বর্তমানে তরুণ সমাজ অনুকরণ করার মতো ব্যক্তিত্ব পায় না। বাদল রহমানই হতে পারে তরুণ সমাজের অনুকরণীয়।’
সভাপতির বক্তব্যে মসিহউদ্দিন শাকের বলেন, ‘চলচ্চিত্রকে যখন আফিমের মতো বিনোদন মাধ্যম মনে করা হচ্ছিল, যখন চলচ্চিত্র ক্রমশ সমাজ থেকে আলাদা হয়ে যাচ্ছিল তখন বাদল রহমান চলচ্চিত্রকে আঁকড়ে ধরেন। চলচ্চিত্র আর সমাজকে একত্রীকরণে ভূমিকা রাখেন।’
বাদল রহমানের উপর আরও আলোচনা করেন চলচ্চিত্রকর্মী হাশেম সূফী, সুশীল সূত্রধর, বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভের সাবেক মহাপরিচালক ড. জাহাঙ্গীর হোসেন, জুনায়েদ হালিম প্রমুখ।
‘বাংলাদেশ চলচ্চিত্রের সমাজীকরণের পূর্বাপর: কঠিন লড়াইয়ের পথ’ শীর্ষক স্বারক বক্তব্য পেশ করেন অনুপম হায়াত।