জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় পাঁচ বছরের সাজাপ্রাপ্ত কারাবন্দী বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে চার মাসের জন্য অন্তবর্তী জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট।
এই আদেশের পর হাইকোর্টের এনেক্স ভবনের সামনে বিএনপির শত শত নেতাকর্মী ও আইনজীবীরা স্লোগান স্লোগানে আনন্দ উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন।
টানা প্রায় ৩০ মিনিট চলা স্লোগানে একটাই উচ্চারণ “খালেদা জিয়া, খালেদা জিয়া”।
সোমবার দুপুরে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ খালেদার জামিন আদেশ দেন।
এসময় আদালতে খালেদার পক্ষে ছিলেন আইনজীবী জয়নুল আবেদীন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। আর দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক আখতারুজ্জামান সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন।
আর এই মামলায় খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক রহমান, বিএনপির সাবেক সাংসদ মাগুরার কাজী সালিমুল হক কামাল, সাবেক মুখ্য সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগনে মমিনুর রহমানকে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন আদালত।
সেই সাথে খালেদা তারেকসহ সবাইকে মোট ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা ৮০ পয়সা জরিমানা করা হয়।
এই রায়ের পরই খালেদা জিয়াকে পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে নেয়া হয়। এরপর গত ২০ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন খালেদা জিয়া।
পরবর্তীকালে গত ২২ ফেব্রুয়ারি বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ খালেদা জিয়ার করা আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন।
এবং এই মামলায় খালেদা জিয়াকে বিচারিক আদালতের করা জরিমানা স্থগিত করে ১৫ দিনের মধ্যে এই মামলার নথি হাইকোর্টে পাঠাতে নির্দেশ দেন।
এদিকে গত ৮ মার্চ সকালে খালেদা জিয়ার আইনজীবী জয়নুল আবেদীন একই হাইকোর্ট বেঞ্চে গিয়ে জামিন বিষয়টি আদালতের নজরে এনে বলেন ‘এই মামলার নথি আসার জন্য দেয়া সময় তো শেষ।’
এরপর বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ খালেদা জিয়ার জামিন বিষয়ে আদেশের জন্য ১১ মার্চ দিন ধার্য করেন।
কিন্তু ১১ মার্চ সকালে হাইকোর্টে নথি না আসায় বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ জামিন বিষয়ে আদেশের জন্য ১২ মার্চ দিন ধার্য করেন।
তবে হাইকোর্টের এই আদেশের কয়েক ঘণ্টা পরেই ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ থেকে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার নথি হাইকোর্টে এসে পৌঁছায়।