নাজমুল হাসান পাপনের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) বর্তমান কমিটির চার বছরের মেয়াদ শেষ হবে আগামী ১৭ অক্টোবর। ওই কমিটি মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে যাওয়ার আগে বিসিবির পরিচালনা পর্ষদের সবশেষ বোর্ড সভা হয়ে গেল বৃহস্পতিবার। সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসে বিসিবি সভাপতি জানালেন, এটিই তাদের শেষ সংবাদ সম্মেলন। সঙ্গে দাবি করলেন, বোর্ডের গঠনতন্ত্র নিয়ে সাবের হোসেন যা বলেছেন তার সবই মিথ্যাচার। সেই মিথ্যাচার শুনে তিনি নাকি নির্ঘুম রাত কাটিয়েছেন।
এক ঘণ্টার সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে নাজমুল হাসান জানান, বিসিবি নির্বাচন পরিচালনার জন্য সভায় ক্রীড়া সচিবকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের (এনএসসি) কাছে প্রস্তাব করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
নির্বাচন কমিশন নিয়ে কথা বলা হয়ে গেল দুই মিনিটের মধ্যেই। বাকি সময়টা বিসিবি গঠনতন্ত্র (সংশোধিত-২০১৭) নিয়ে সংবাদ মাধ্যমের সব প্রশ্নের জবাব দেন বোর্ড সভাপতি।
একটি পক্ষের মামলার পর গঠনতন্ত্র নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হওয়ার প্রেক্ষিতে নাজমুল হাসান বলেন, আমরা নিয়মের মধ্য দিয়েই যাচ্ছি।
আগে বিসিবির সাবেক সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী প্রেসব্রিফিং করে বিসিবির গঠনতন্ত্র অবৈধ বলে উল্লেখ করেন। তিনি বিসিবির এজিএম ও ইজিএম বর্জন করেন। সেই প্রসঙ্গে নাজমুল হাসান বললেন, ‘তার সবই মিথ্যাচার। আমি তার প্রেস ব্রিফিং গতকাল রাতে শুনেছি। সারারাত ঘুমাতে পারিনি। আমি মিথ্যা সহ্য করতে পারি না। এখন মনে হচ্ছে, কেন যে শুনতে গেলাম!’
সাবের হোসেন সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেছিলেন, বোর্ড প্রধান বরাবর অতীতে তিনটি চিঠি পাঠিয়ে একটিরও জবাব পাননি। তবে দেশের ও বিসিবির ভাবমূর্তির স্বার্থে তিনি মিডিয়াতে কখনও জানাননি। এ ব্যাপারে নাজমুল বললেন, ‘সে আইসিসিতে তিনবার জানিয়েছে। কেন মিথ্যাচার করে আমি জানি না। দেশের ক্রিকেটের ক্ষতি করে তাদের কী লাভ?’
সংবাদ সম্মেলন কক্ষে পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে নাজমুল হাসান ব্যাখ্যা করেন আদালতের রায় ও আইসিসির গাইডলাইন অনুযায়ী বিসিবি সব করছে কিনা।
মামলার কারণে উদ্ভূত পরিস্থিতি বিষয়ে বলতে গিয়ে নাজমুল হাসান বলেন, ‘আমাদের সিদ্ধান্তে আইসিসি সন্তুষ্ট। আদালত চেয়েছে বিসিবির ওপর এনএসসির কর্তৃত্ব কমাতে হবে। আমরা তাদের কাউন্সিলরশিপ তিন থেকে দুইয়ে নামিয়ে এনেছি। আমরা স্বাধীনমতো কাজ করতে পারছি। গত চার বছরে আমাদের সিদ্ধান্ত আমরাই নিয়েছি। সরকারি হস্তপেক্ষ এখানে ছিল না।’
ক্রিকেট বোর্ডে পরিচালক হিসেবে চার বছরের মেয়াদে কাজ করেছেন সাবেক তিন অধিনায়ক আকরাম খান, নাঈমুর রহমান দুর্জয় ও খালেদ মাহমুদ সুজন। বাংলাদেশের ক্রিকেট সাফল্যের সঙ্গে এগিয়ে যাওয়ার পেছনে এই ত্রয়ীর অবদানও তুলে ধরলেন নাজমুল হাসান, ‘এই তিনজন বোর্ডে থাকাতে আমরা অনেক উপকৃত হয়েছি। বিশেষ করে আজকে বাংলাদেশের যে মাঠের পারফরম্যান্স, সেটার পেছনে বিশেষভাবে অবদান রেখেছেন তারা।’
নাজমুল হাসান জানান, ১৭ অক্টোবরের পর বর্তমান বোর্ড শুধু বিসিবির রুটিনমাফিক কাজটাই পালন করবে। নীতিনির্ধারণী কোনও সিদ্ধান্ত আজকের পর থেকে নেবে না এই কমিটি। নির্বাচনের পর ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে নতুন কমিটির হাতে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়া হবে।’