নাগরিকত্ব আইন সংশোধনকে কেন্দ্র করে ভারতের রাজধানী দিল্লিতে যে সংঘাতের সূত্রপাত হয়েছিল, তা আরও ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়েছে। গত তিনদিনের সহিংসতায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০ জনে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভারত সফরের মধ্যেই সোমবার সংঘাত শুরু হয়। এনডিটিভি জানিয়েছে, এই সংঘাতে আহত হয়েছেন দেড় শতাধিক মানুষ।
গত দুইদিনের মতো বুধবারও দফায় দফায় সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে রূপ নেয় দিল্লির উত্তর-পূর্বাঞ্চল। বিবিসি বলছে, দিল্লিতে এমন সহিংসতা গত কয়েক দশকে দেখা যায়নি।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে কয়েকটি এলাকায় সান্ধ্য আইন জারি করা হয়েছে। কোথাও কোথাও দেখা মাত্র গুলির নির্দেশও দেয়া হয়েছে। একাধিক স্থানে বন্ধ রাখা হয়েছে মেট্রো স্টেশন।
উত্তেজনা যেন না ছড়ায়, সেজন্য বেসরকারি টেলিভিশনগুলোকে সংঘাতের খবর প্রচারের ক্ষেত্রে সাবধান করেছে কেন্দ্রীয় সরকার।
দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল এই উন্মত্ততা বন্ধ করে উভয় পক্ষকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
হিন্দুত্ববাদী বিজেপি সরকার বিতর্কিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) পাস করার পর থেকে ভারতের বিক্ষোভ চলছে। এই আইন বাতিলের দাবিতে নানা কর্মসূচিও চালিয়ে যাচ্ছে বিক্ষোভকারীরা।
ক্ষমতাসীন দল বিজেপি এই আইনের পক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে রাস্তায় নেমেছে। সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার প্রথম ভারত সফর শুরু করেন। সেদিনই নিহত হন এক পুলিশ কনস্টেবলসহ চারজন।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই পরিস্থিতি বিব্রতকর অবস্থায় ফেলেছে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে।
সোমবারের পর কেন্দ্রীয় সরকার ও পুলিশ সহিংসতা দমনে নানা পদক্ষেপ নিয়েছিল, দিল্লি পুলিশের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
কিন্তু তারপরও মৌজপুর, ব্রহ্মপুরী, ভজনপুরা চক, গোকুলপুরীসহ বিভিন্ন এলাকায় নতুন করে ব্যাপক সংঘাত বাঁধে।
আগের রাতে মৌজপুরে এক সাংবাদিককে লক্ষ্য করে গুলিও ছোড়ার খবরও এসেছে। এক সাংবাদিক গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও একজন। মৌজপুরে একাধিক গাড়ি ও দোকানে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
সার্বিক পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে দিল্লি পুলিশ এক বিবৃতিতে বলেছে, পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগজনক।