শামীম আরা নিপা। একুশে পদকপ্রাপ্ত নৃত্যশিল্পী। গতকাল শনিবার ছিল বিশ্ব নৃত্য দিবস। এ উপলক্ষে নাচ আর নাচ নিয়ে তার পরিকল্পনার কথা জানালেন চ্যানেল আই অনলাইনকে।
কেমন আছেন?
হ্যাঁ, ভালো আছি।
খুব ব্যস্ত?
হ্যাঁ, আজ (শনিবার) বিশ্ব নৃত্য দিবস। এ দিনের দিবস ঘিরেই ব্যস্ততা। টানা কয়েকদিন রিহার্সাল দিলাম। নৃত্যদিবস উদযাপন আর অনুষ্ঠানের রিহার্সাল নিয়েই যত ব্যস্ততা।
বিশ্ব নৃত্য দিববে কী করছেন?
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির উন্মুক্ত নন্দন মঞ্চে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় সুবিধা বঞ্চিত ও প্রতিবন্ধী শিশুদের সঙ্গে নৃত্যানুষ্ঠানের আয়োজন আছে। এখানে আমার নৃত্যাঞ্চল স্কুলের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করবে।
বাংলাদেশে নাচের ভবিষ্যৎ কেমন?
ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া ও প্রিন্ট মিডিয়া ছাড়া বাকি সব জায়গায় নাচের অবস্থান খুবই ভালো।
মিডিয়া নাচকে সাপোর্ট দিচ্ছে না?
আমাদের মিডিয়া নাচকে একটুও সাপোর্ট দিচ্ছে না। সংস্কৃতির অন্যান্য শাখাকে যেভাবে গুরুত্ব দেয় সে তুলনায় নাচকে কেউ গুরুত্ব দেয় না। মিডিয়া বাণিজ্য চায়, চেনা মুখ চায়। প্রতিটা মানুষের দায়বদ্ধতা থাকে দেশীয় সংস্কৃতির প্রতি। সেটা বাণিজ্যিকভাবে অসফল হলেও অনেকে তা করে। কিন্তু আমাদের দেশের মিডিয়ার সেই দায়বদ্ধতা নেই। সবাই দেশের কথা ভাবে না। বাণিজ্যিক ভাবনাটাই তাদের সার্বক্ষণিক ভাবনা। এটাই মূল কারণ।
এ অবস্থা থেকে বের হওয়ার কোনো উপায়?
আমাদের হাতে বের হওয়ার কোনো উপায় নেই। যা করার মিডিয়া মোড়লদের করতে হবে। তবে আমরা যা করতে পারি, মঞ্চকে টার্গেট করে এগুতে পারি। মঞ্চই আমাদের শেষ ভরসা। প্রচার ছাড়াই আমরা নিয়মিত অনুষ্ঠান করছি। তবে প্রচার হলে আরও বেশি অনুষ্ঠান হতো।
আপনাদের পক্ষ থেকে মিডিয়ার সাথে যোগাযোগ করা হয়েছে?
আমরা আমাদের সম্মান নিয়ে, ব্যক্তিত্ব নিয়ে কাজ করি। আমরা আমাদের নিজের জন্য কখনোই কিছু চাইব না। কারো কাছে যাবও না। মিডিয়া তো নিজ থেকেই এগিয়ে আসবে।
এভাবে মিডিয়া এড়িয়ে কাজ করা সম্ভব?
অবশ্যই সম্ভব। আমরা সস্তা জনপ্রিয়তার পিছে ছুটছি না। তাই বলে যে সম্মান ও সফলতা আমাদের হাতে আসবে না তা কিন্তু না। এর বড় উদাহরণ হলো রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে আমাকে একুশে পদক প্রদান। মিডিয়া হয়তো আমার চেয়ে কম কাজ করা অনেককে ফোকাস করে তারকা বানিয়ে দিতে পারে কিন্তু ভালো কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ একুশে পদক তো জিতিয়ে দিতে পারবে না।
নৃত্যাঞ্চলের পথচলা নিয়ে বলনু।
২০০০ সালে সংগঠন করি। ২০০২ সালে নাচের স্কুলের কার্যক্রম চলছে। আমরা চাই কিছু ভালো-ছেলে মেয়ে তৈরি করতে। যারা নাচকে ভালোবাসে। সম্মান করে। এখনো সে লক্ষেই কাজ করে যাচ্ছি।
অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ও নৃত্যাঞ্চলের পার্থক্য কতটুক?
অনেক পার্থক্য। আমরা অনেকবেশি আলাদা। আমরা শুধু নাচ দিয়ে দর্শকের নির্মল ভালোবাসা পেয়েছি। অন্যযারা আছে তারা কিন্তু শুধু নাচ নিয়ে কাজ করছে না। তারা নাচকে শৌখিন বিষয় হিসেবে নেয়। আমরাই নাচকে ভালোবাসা হিসেবে নিয়েছি। আমরা নাচকে প্রার্থনা হিসেবে, প্রফেশন হিসেবে নিয়েছি। দর্শকের যে ফিডব্যাক পাই সেটা অনেকবেশি মূল্যবান।
ধন্যবাদ, ভালো থাকবেন।
আপনারাও ভালো থাকবেন।
ছবি : সংগৃহীত