সব কিছু ভেঙে পড়ার সিরিজে এবার ২০ রানের আফসোসের হার। প্রথম টি-টুয়েন্টির প্রাণহীন উইকেটে শুধু সৌম্য বাদে সবাই প্রাণ বিলিয়ে দেয়ার মিছিলে মেতে ওঠেন।
অথচ তামিমের অনুপস্থিতিতে ইমরুল কায়েসকে নিয়ে দারুণ শুরু করেন সৌম্য সরকার। ১৯৬ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে দুজনে ২৩ বলের জুটিতে ৪৩ রান করেন। চতুর্থ ওভারের পঞ্চম বলে ‘সন্দেশি’য় এক ফুলটসে ফ্লিক করতে যেয়ে ব্যক্তিগত ১০ রানে নিজেকে শেষ করেন ইমরুল।
হেনড্রিকস লেগ সাইডে সর্বসাকুল্যে একজনকে রাখেন, ডিপ স্কয়ারে। লেগস্টাম্পের উপর করা আলতো ফুলটসে টোকা মেরে ইমরুল মিলারের হাতে সেখানেই বল তুলে দেন!
(আরও পড়ুন: ‘সাকিবিয় ফর্মুলা’র দিনে আরেকটি শঙ্কার টার্গেট )
নেতা সাকিব বোলিংয়ে ওপেন করার পর ব্যাটিংয়েও সামনে থেকে নেতৃত্ব দেয়ার চেষ্টায় ওয়ানডাউনে নেমে যান। ৮ বলে ১৩’র বেশি করতে পারেননি। তাড়াহুড়া করে দ্রুত ফিরলেও তার দায়িত্ব নেয়ার মানসিকতা এদিন চোখে পড়েছে।
সপ্তম ওভারে অভিষিক্ত ফ্রাইলিঙ্কের ওপর চড়াও হন। পরপর দুটি চার মারার পর শেষ বলেও হাঁকাতে যান। ডাউন দ্য উইকেটে এসে কাভারের উপর দিয়ে উড়িয়ে দেন। এবার টাইমিং হয়নি। এক্সট্রা কাভারে ছিলেন ভিলিয়ার্স। প্রথম একটু এগিয়ে আসেন। পরে পেছন ফিরে নির্ভুল হাতে তালুবন্দি করেন।
অনেক দিন পর পুরনো সৌম্যর দেখা মেলে। দারুণ সব শটে চল্লিশ পার করেন। দশম ওভারের প্রথম বলে ফেলুকোওকে এগিয়ে এসে ফ্লিক করতে যান। লাইন মিস করে বল পায়ে লাগে। জোরালো আবেদন ওঠে। পপিং ক্রিজের বাইরে থাকায় আম্পায়ার সাড়া দেননি। কিন্তু সাউথ আফ্রিকার ফিল্ডাররা মরিয়া হয়ে ওঠেন। আবেদন যায় লেগ আম্পায়ারের কাছে। তিনি থার্ডআম্পায়ার স্মরণ করেন। কপাল পোড়ে সৌম্যর। পাঁচ চার, দুই ছয়ে ৩১ বলের ইনিংসে ৪৭ করে যান।
পরের ওভারে ফিরে যান মুশফিক। ‘প্রিয়’ স্লগ সুইপ খেলে ডিপ মিড-উইকেটে যে ক্যাচটি সাজিয়ে দেন তা অনেক দিন মনে থাকার কথা ফিল্ডার ভিলিয়ার্সের। ফাঙ্গিসোর এই বলে কাটা পড়ার আগে ৮ বলে ১৩ করতে পারেন। মুশফিকের পর রিয়াদও (৩) তাই। শর্ট থার্ডম্যানে ক্যাচ দিয়ে পথ ধরেন।
এরপর সাব্বির শটের পসরা সাজানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু ওই আজব ব্যাটিংয়ের দিনে তিনিও গজবের হাত থেকে রক্ষা পাননি। কী মনে করে হেনড্রিকসের ফাঁদে পা দেন। অফস্টাম্পের বেশ বাইরের স্লো-ডেলিভারিতে অযথা বড় শট খেলতে যান। যে বল ছেড়ে দেয়া উচিত, সেই বল ধাওয়া করে খেলতে যেয়ে অনুমিতভাবেই মিডঅফে ধরা পড়েন।
এরপর তাসকিন-রুবেলরা হারের সময়টা দীর্ঘায়িত করেন!
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
সাউথ আফ্রিকা: ১৯৫/৪, ২০ ওভার (ডি কক ৫৯, ভিলিয়ার্স ৪৯, মিলার , বেহারদিয়েন ৩৬*, মিলার ২৫* ; মিরাজ ২/৩১, সাকিব ১/২৮, রুবেল ১/৩৪, তাসকিন ০/২১, শফিউল ০/৩৩, রিয়াদ ০/৩৩, সাইফউদ্দিন ০/২০)
বাংলাদেশ: ১৭৫/৯, ২০ ওভার (ইমরুল ১০, সৌম্য ৪৭, সাকিব ১৩, মুশফিক ১৩, সাব্বির ১৯, রিয়াদ ৩, মিরাজ ১৪, সাইফউদ্দিন ৩৯*, তাসকিন ০, শফিউল ১, রুবেল ২*; প্যাটারসন ২/২৯, ফ্রাইলিঙ্ক ২/৩৩, ফেলুকোও ২/২৫)
ফল: ২০ রানে জয়ী সাউথ আফ্রিকা।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: এবি ডি ভিলিয়ার্স।