উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন এক ধরনের রকেট ইঞ্জিনের পরীক্ষা সফলভাবে সম্পন্ন করেছে নর্থ কোরিয়া। এই পরীক্ষার মাধ্যমে রকেট ইঞ্জিনের জ্বালানি পুড়িয়ে উপরে উঠার ক্ষমতা, কাঠামোর সুরক্ষা ও নির্ভরতার বিষয়গুলো দেখা হয়েছে। দেশটির উত্তর পিয়ংয়ং প্রদেশের সোহাই স্যাটেলাইট লঞ্চিং গ্রাউন্ডে এই পরীক্ষা চালানো হয়। দেশটির সরকারি বার্তা সংস্থা কেসিএনএসহ আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে এ বিষয় নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।
এর মাধ্যমে রকেট নিক্ষেপের প্রযুক্তিতে বিশাল অগ্রগতির ঘোষণা দিল দেশটি। নর্থ কোরিয়ার নেতা কিম জং উন একে দেশটির রকেট শিল্পে নতুন অধ্যায় হিসেবে অভিহিত করেছেন।
তিনি বলেছেন: আজ যে সফলতা আমরা অর্জন করলাম, তার প্রভাব ও কার্যকারিতা খুব শীঘ্রই সবাই দেখতে পাবে।
উন্নত এই রকেট প্রযুক্তি তাদের মহাকাশ কর্মসূচিতে ব্যবহার করা হবে বলেও এসময় জানানো হয়। তবে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো ভাবছে নর্থ কোরিয়ার আসল উদ্দেশ্য দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র কার্যক্রমকে আরও শক্তিশালী করা।
ঠিক এমন এক সময়ে এই পরীক্ষা চালানো হলো, যখন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এর সাথে দেখা করে বেইজিং ঘুরছেন। বরাবরের মত এবারও এই পরীক্ষার তথ্য উত্তর কোরিয়ার সরকারি টেলিভিশন কেআরটি থেকে প্রথম জানানো হয়। উত্তর কোরিয়া এখন পর্যন্ত মোট পাঁচ বার পারমাণবিক পরীক্ষা চালিয়েছে। এছাড়া, অসংখ্য ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করেছে।
নর্থ কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের এই কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাকে উদ্দেশ্য করে ট্রাম্প বলেছেন: তিনি (কিম জং উন) খুব, খুব, খুবই খারাপ কাজ করে যাচ্ছে। ফ্লোরিডার মারেলাগো রিজোর্টে বিমান থেকে নেমে সাংবাদিকদের কাছে এই মন্তব্য করেন তিনি। তিনি জানান, এই সপ্তাহের আলোচনায় অন্যান্য বিষয়ের পাশাপাশি নর্থ কোরিয়া নিয়ে আলোচনা করেছেন তার প্রশাসন।
নর্থ কোরিয়া দাবি করেছে এই প্রযুক্তি মহাকাশ কর্মসূচিতে ব্যবহার করা হবে। যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যসহ পশ্চিমা দেশগুলো এই ভেবে চিন্তিত যে, এই প্রযুক্তি ক্ষেপনাস্ত্র নিক্ষেপ করতে ব্যবহার করা হতে পারে।
এ বিষয়টি নিয়ে বিবিসির চীন বিষয়ক সম্পাদক ক্যারি গার্সিয়া বলছেন: টিলারসন এবং প্রেসিডেন্ট শি’র বৈঠক ছাপিয়ে এখন নর্থ কোরিয়ার এই রকেট পরীক্ষা নিয়েই সব জায়গায় বেশি কথা হচ্ছে।
সিএনএনের সামরিক বিশ্লেষক লেফটেন্যান্ট জেনারেল মার্ক হার্টলিং বলেছেন: রকেট প্রযুক্তিতে নর্থ কোরিয়ার অগ্রগতি তাদেরকে আন্তর্মহাদেশী ব্যালাসটিক মিসাইলে (আইসিবিএমএস) সহায়তা করবে। এখানে ব্যবহৃত প্রযুক্তির মধ্যে সব থেকে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- মিসাইল নিক্ষেপের পর রাডার এদেরকে চিহ্নিত করতে পারবে না।
পশ্চিমা সামরিক বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন, নর্থ কোরিয়া এমন একটি পারমাণবিক বোমা বহনকারী দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির চেষ্টা করছে যেটি যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমাদেশগুলোতে খুব সহজেই আঘাত করতে পারে।