‘যাদের সমুদ্রবিলাসী মন, ঘুরে আসতে পারেন মিরপুর বা এর পার্শবর্তী এলাকায়, সাথে বৃষ্টিবিলাস ফ্রি।’
গত দুইদিনের বৃষ্টিতে মিরপুর এলাকার সড়কগুলোর চিত্র বর্ণনায় এমন উপমার আশ্রয় নিয়েছেন তামান্না জাহান দিশা। তার স্ট্যাটাসে সিনথিয়া রহমান প্রিয়াঙ্কা মন্তব্য করেছেন: মালিবাগের কাছে কেউ জিততে পারবে না এই বিষয়ে। সব দোকান বন্ধ পানি উঠে। গাড়ি হাফ পানিতে। কক্সবাজার টাকা খরচ করে মানুষ কেন যায় আল্লাহ জানে!
সাংবাদিক শরীফুল হাসান লিখেছেন: ভাবছিলাম বৃষ্টি জলজট শুধু চট্টগ্রামে। ঢাকায় এসেও দেখি একই অবস্থা। আমার প্রস্তাব হলো, বড় শহরগুলোতে উবারের পাশাপাশি বৃষ্টির দিনে কুবের মাঝির সার্ভিস চালু হোক।
তার পোস্টের নীচে রোকসানা মিলি লিখেছেন: আজকে সকালে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় সমুদ্রের ঢেউ দেখে এটাই ভাবছিলাম ভাই। যত পরিকল্পিতই হোক পানি থেকে মুক্তি নাই। তাই পানিতে চলার বিকল্প ব্যবস্থাই কুবের মাঝিদের ফিরিয়ে আনা হোক।
নগরীর রাস্তায় নৌকা চলার একটি ছবি শেয়ার করে তারেক মাহমুদ শাহেদ লিখেছেন: আমাদের এখানে উবার নয়, কুবের ট্রান্সপোর্ট চলে।
রাস্তায় ঢেউ তোলা পানির ছবি শেয়ার করে মাসুম মিজান লিখেছেন: ঢেউ শুধু নদীতেই নয়, চালকরা আজ ঢাকার রাস্তায় ঢেউ তুলে গাড়ি চালাচ্ছেন।
পুরান ঢাকার একটি রাস্তার ছবি শেয়ার করে মুসা আহমেদ লিখেছেন: টানা তিন ঘণ্টায় নাজিম উদ্দিন রোডে তিন ফুট, চকবাজার রোডে দুই ফুট, শিক্ষাবোর্ডের সামনে আড়াই ফুট, খাজে দেওয়ান ও শহীদ মিনার রোডে এক ফুটের বেশি পানি জমে আছে!
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) এর আহসানউল্ল্যাহ হলের নীচতলায় পানি উঠে যাওয়ার ছবি পোস্ট করে শুভ্র জ্যোতি টিকাদার লিখেছেন: বন্যাকবলিত আহসানউল্ল্যাহ হল।
এভাবে হাস্যরসমূলক স্ট্যাটাসের মাধ্যমে অনেকেই ছবি এবং লেখা পোস্ট করে তুলে ধরেন বৃষ্টিপাতের ফলে নগরীর দুর্ভোগের চিত্র।
গত ২৪ ঘণ্টায় (বুধবার ভোর ৬টা পর্যন্ত) রাজধানী ঢাকায় ২৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। আর স্বাভাবিক এ বৃষ্টিপাতেই তৈরি হয়েছে জলাবদ্ধতা। এতে অচল হয়ে পড়েছে গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন এলাকা। চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে নগরবাসীদের। আবহাওয়া অফিস বলছে, এ পরিমাণ বৃষ্টিপাত স্বাভাবিক। সাধারণত ৪৪ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টিপাত হলে তাকে অস্বাভাবিক বৃষ্টিপাত বা ভারীবর্ষণ বলা হয়।
মঙ্গলবার সারাদিন ও রাতে হালকা এবং মাঝারি বৃষ্টিপাতের পর বুধবারও তা অব্যাহত থাকে। এতে নগরীর মালিবাগ-মৌচাক এলাকা, শান্তিগনর, মগবাজারসহ নগরীর বিভিন্ন সড়কে পানি জমে চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়ে। গুরুত্বপূর্ণ মতিঝিল এলাকায়ও সৃষ্টি হয় ভয়াবহ জলাবদ্ধতা। অফিসগামী কর্মজীবীদের পড়তে হয় সীমাহীন দুর্ভোগে।
কোন কোন রাস্তা চলাচলের উপযোগী না থাকায় অন্য সড়কগুলোতে পড়ে যানবাহনের বাড়তি চাপ। সৃষ্টি হয় যানজটের। মতিঝিল, গুলিস্তান, শাহবাগ, ফার্মগেট, মহাখালী, প্রগতি স্বরণী, রোকেয়া স্বরণী, তেজগাঁও সাতরাস্তা, বাড্ডা লিংকরোড, মিরপুর সড়কে সৃষ্টি হয় যানজট। একদিকে যানজট অন্যদিকে গণপরিবহন সংকটে নাকাল হতে হয় নগরবাসীকে।