জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক (সম্মান) শ্রেণীতে ভর্তি পরীক্ষার দ্বিতীয় দিনে জালিয়াতির অভিযোগে ১৭ জনকে আটক করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এর মধ্যে ১২ জনকে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়। অন্য ৫ জনকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে।
রোববার ‘ডি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা চলার সময় তাদেরকে আটক করা করা হয়।
ঢাকা মিরপুরের সোয়েব আলম চৌধুরী, ভোলা জেলার মোরশেদ আলম ও মাহবুবুর রহমান, দিনাজপুর জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার মনিরুল ইসলাম ও পাবনা জেলার আশিক কবিরকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।
জানা গেছে, রোববার বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে ৫-৬ জন ব্যক্তি একজন পরীক্ষার্থীকে (সুরাইয়া) নিয়ে জটলা বেঁধে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করতে থাকে। এসময় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবের সভাপতি রিজু মোল্লার সন্দেহ হলে তিনি অন্য সাংবাদিকদের খবর দেন।
এরপর বিকাল ৫টার দিকে শহীদ মিনার সংলগ্ন জালিয়াতি চক্রের ২ থেকে ৩ জন পরীক্ষার্থীকে (সুরাইয়া) ৭ম শিফটের পরীক্ষার বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর বলতে থাকে। তাদের গতিবিধি সাংবাদিকদের নজরে আসলে তারা নিরাপত্তাকর্মীদের খবর দেন। নিরাপত্তাকর্মীরা ঘটনাস্থলে এসে সাংবাদিকদের সহযোগিতায় তাদেরকে আটক করা হয়।
পরবর্তীতে তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়ার সামনে থেকে আরো ৪ জনকে আটক করে প্রেসক্লাবের সাংবাদিককরা। এছাড়াও পুরাতন কলা থেকে ৫ জন, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ থেকে আরো ১ জনকে আটক করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
পরে বিশ্ববিদ্যালয় নিরাপত্তা অফিসে তাদের মধ্যে ১২ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে মুচলেকা দিয়ে ছেড়ে দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বাকিদের আশুলিয়া থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়। এর মধ্যে সোয়েব আলম চৌধুরী ও মোরশেদুল আলম জামান জালিয়াতি চক্রের সঙ্গে জড়িত। আর বাকি ৩ জনের মধ্যে দুইজন ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী ও একজন জালিয়াতি চক্রের এক সদস্যের সঙ্গে ঘুরতে আসেন।
সোয়েব আলম চৌধুরী ফার্মগেটে ইউসিসি কোচিং সেন্টারের ভর্তি ফরম পূরণ করে থাকে। আর তার সঙ্গে মোরশেদ অঅলম জামান যোগ হয়ে ভর্তিচ্ছু প্রতি জন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ৫-৬ লাখ টাকার চুক্তি করে একাধিক ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের সাথে যোগাযোগ করে থাকে।
এ বিষয়ে প্রক্টর তপন কুমার সাহা বলেন, সব বিষয় তথ্যপাত্য খতিয়ে দেখে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ৫ জনকে জালিয়াতি চক্রের সাথে জড়িত থাকার ঘটনায় পুলিশে দেয়া হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় আইন অনুযায়ী মামলা দায়ের করা হবে। চক্রের সঙ্গে জড়িত অন্যদের শনাক্ত করার চেষ্টা করছি।