খুলে গেল স্বপ্নের দুয়ার। বাধা-বিপত্তি উপেক্ষা করে পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর ফলে অবসান হলো দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের দীর্ঘ দিনের অপেক্ষার। সেতু উদ্বোধন ঘিরে এদিন দুই প্রান্তের মানুষের উচ্ছ্বাস দেখার মতো! সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও সেই উচ্ছ্বাস দৃশ্যমান।
এখনো মনে হয় দৃশ্যটি ছিল ঘুমের মাঝে দেখা কোন স্বপ্ন! মা কাঁদছেন। কারণ আমাদের নানা মারা গেছেন। গভীর রাতে অনন্যোপায় হয়ে মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়ে মা ও তার ভাইবোনদের মৃত বাবাকে শেষ দেখার আশায় নৌকায় পদ্মাপাড়ি দেয়া। আমি এতই ছোট ছিলাম যে স্মৃতিতে রাতের গভীর অন্ধকার ও নৌকায় আছড়ে পড়া ঢেউয়ের পানি আর মায়ের কান্না, এছাড়া কিছুই মনে করতে পারি না। তাই নিজের কাছেই মনে হয় ওটা কি ঘুমে দেখা কোন দুঃস্বপ্ন!
আজও সেই রাতে প্রমত্ত পদ্মার ভয়াবহরূপ স্মৃতি হয়ে আছে। বার্ষিক পরীক্ষা শেষে প্রতি বছর আব্বা আমাদের নিয়ে যেতেন নাড়ির টানে প্রিয় ফরিদপুর। চাচাতো বোন জেসমিন নদীর ঢেউ আতঙ্ক দেখে একদিন বলেছিল যদি পদ্মা নদীতে একটা ব্রিজ হতো ফরিদপুর টু ঢাকা রিকশায় চলে যাব। এই গল্পটা আমাদের কাছে আষাঢ়ে গল্পের মত একটি মজার হাসির গল্প হয়ে গিয়েছিল। আজ আর সেটা গল্প বা কোন দুঃস্বপ্ন নয়! আজ স্বপ্ন পূরণের দিন! স্বপ্নের পদ্মা সেতু! আমাদের প্রাণে খুশীর জোয়ারের বন্যা!
খরস্রোতা নদীর বুকে আমাদের অহংকার! পদ্মাসেতু! স্থাপত্যশিল্পের অপরূপ সৌন্দর্য্য নিয়ে পৃথিবীর বুকে বাংলাদেশের এক গৌরবগাঁথার ইতিহাস পদ্মাসেতু! স্বপ্ন বাস্তবায়নের কাণ্ডারী স্বপ্নদ্রষ্টা মহিয়সী জননেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ভালোবাসা। দীর্ঘজীবন হোক আপনার।
আব্বার কথা মনে পড়ছে। আহারে কত কষ্ট করে আমাদের নিয়ে যেতেন তার শৈশবের কাছে। আজ এই সেতুর উদ্বোধনের দিনে বেঁচে থাকলে নিশ্চয়ই ছুটে যেতেন সেতুর কাছে! আমাদের স্বপ্নের পদ্মা সেতু! বার বার মনে হচ্ছে আজ ঈদ!