বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় অপারেশন ক্লিন হার্টে নির্যাতনের শিকার সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব আহকাম উল্লাহ্’র অস্ত্রোপচার আগামী ১৯ জুন। এই জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন তার স্ত্রী ড. বিলকিস রহমান দোলা।
তিনি তার ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে মো. আহ্কাম উল্লাহ্’র জন্য দোয়ার আহবান জানান।
মোঃ আহ্কাম উল্লাহ্ দেশের অগ্রগণ্য সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব। আবৃত্তিশিল্পী আহ্কাম উল্লাহ্ সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট ও বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদ এর সাধারণ সম্পাদক। শিক্ষা জীবনে ছিলেন কৃতি বিতার্কিক। ছাত্রজীবন থেকেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রামে চৌকস ও সাহসী নেতৃত্বের জন্য জনপ্রিয় ছিলেন তিনি।
আওয়ামী লীগ নেতা মো. আহ্কাম উল্লাহ্কে ২০০২ সালে তৎকালীন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের চালানো অপারেশন ক্লিন হার্টের আওতায় আটক করে যৌথবাহিনী। সে সময় তিনি ছায়ানটের ভবন নির্মাণে তহবিল সংগ্রহের জন্য রাজধানীতে একটি অনুষ্ঠানে আবৃত্তি পরিবেশন করছিলেন। মূলত তৎকালীন বিরোধী দল তথা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে দমনের জন্য চালানো অপারেশন ক্লিন হার্টে আটক ও নির্যাতনের শিকার হয়ে অনেকে নিহত হন। অনেকে শারীরিক প্রতিবন্ধিতা নিয়ে বেঁচে আছেন। তাদের মধ্যে রাজনৈতিক এবং সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রের বিশিষ্টজনেরাও রয়েছেন।
অপারেশন ক্লিনহার্টে আটক হওয়ার পর নির্যাতনের শিকার হয়ে মো. আহকাম উল্লাহ্’র ঘাড়ের হাড় ভেঙে যায় এবং মেরুদণ্ড ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর জের ধরে দিন দিন তার শারীরিক অবস্থা খারাপ হতে থাকে। বিএনপি-জামায়াত সরকার সেইসব হত্যা-নির্যাতনের বিচার না হওয়ার জন্য ইনডেমনিটি নিয়েছিল। পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেই ইনডেমনিটি বাতিলের ব্যবস্থা করেন। এরপর আদালত নিহতদের পরিবার এবং আহতদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেন। অপারেশন ক্লিন হার্টে আটক হওয়ার পর নির্যাতনের শিকার হওয়ার জের ধরে আহ্কাম উল্লাহ্’র শারীরিক অবস্থা বর্তমানে গুরুতর হয়ে উঠেছে।
এ অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটি ল্যাংগন হসপিটালে আগামীকাল ১৯ জুন তার ঘাড়ের সামনের ও পেছনের অংশে জটিল অস্ত্রোপচার করা হবে।