আবগারি নীতি মামলায় আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের সরকারি বাসভবনে তল্লাশি ও প্রায় দু’ঘণ্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর কেজরিওয়ালকে গ্রেপ্তার করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)।
মূলত, আর্থিক সংক্রান্ত তদন্তে দিল্লি হাইকোর্ট অরবিন্দ কেজরিওয়ালের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া থেকে অন্তর্বর্তী সুরক্ষা দিতে অস্বীকার করার কয়েক ঘণ্টা পর তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী বলেন, কেজরীওয়ালের বিরুদ্ধে অনেক দিন থেকে ষড়যন্ত্র করছে। বারবার ডেকে পাঠাচ্ছে নির্বাচনের আগে। ওকে গ্রেপ্তার করে বিরোধী দলগুলোর জোটকে দুর্বল করার চেষ্টা করছে।
কেজরিওয়াল প্রথম ভারতের ইতিহাসে, যিনি মুখ্যমন্ত্রী পদে থাকাকালীন গ্রেপ্তার হয়েছেন। পরিসংখ্যান বলছে, স্বাধীন ভারতের ইতিহাসে এই ঘটনা আগে ঘটেনি। তবে আপের তরফ থেকে জানানো হয়, মুখ্যমন্ত্রী পদে থাকবেন তিনিই। এর আগে ঝাড়খন্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন গ্রেপ্তার হন। তবে গ্রেপ্তারির ঠিক আগে, তিনি রাজভবনে গিয়ে ইস্তফা দেন।
যে মামলায় কেজরিওয়ালের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা
মামলাটি ২০২১-২২ সালের জন্য দিল্লি সরকারের আবগারি নীতি প্রণয়ন ও কার্যকর করার ক্ষেত্রে দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের অভিযোগ সম্পর্কিত, যা পরে বাতিল করা হয়েছিল।
এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের দাবি, আবগারি নীতিতে আপ নেতারা ১০০ কোটি টাকার ঘুষ পেয়েছেন। ইডির পেশ করা চার্জশিটে একাধিকবার কেজরিওয়ালের নামও রয়েছে। সংস্থাটি অভিযোগ করেছে যে, অভিযুক্তরা আবগারি নীতি তৈরির জন্য কেজরিওয়ালের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল।
আপ নেতা মণীশ সিসোদিয়া এবং সঞ্জয় সিং ইতোমধ্যে এই মামলায় বিচারবিভাগীয় হেফাজতে রয়েছেন।
কেজরিওয়াল গত বছরের ২ নভেম্বর থেকে ফেডারেল এজেন্সির জারি করা আটটি সমন এড়িয়ে যান এবং এটিকে ‘অবৈধ এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে অভিহিত করেন।
ইডির দাবি, দিল্লির আবগারি নীতি নিয়ে অরবিন্দ কেজরিওয়াল, মণীশ সিসোদিয়া, কে কবিতাসহ (গত সপ্তাহে ধৃত) অন্যান্য রাজনৈতিক নেতারা ষড়যন্ত্র করেছেন। ব্যবসায়ী শরৎ রেড্ডি, মাগুন্তা শ্রীনিবাসুলু রেড্ডি এবং কে কবিতার সমন্বয়ে গঠিত একটি দক্ষিণ গোষ্ঠী নতুন আবগারি নীতি ২০২১-২২ এর অধীনে দিল্লিতে ৩২টির মধ্যে ৯টি অঞ্চল পেয়েছে।
পাইকারি বিক্রেতাদের জন্য অস্বাভাবিক উচ্চ ১২ শতাংশ লাভের মার্জিন এবং খুচরো বিক্রেতাদের জন্য প্রায় ১৮৫ শতাংশ লাভের মার্জিন নিয়ে নীতিটি আনা হয়েছিল।
ইডির অভিযোগ, ১২ শতাংশ মার্জিনের মধ্যে ৬ শতাংশ পাইকারি বিক্রেতাদের কাছ থেকে আপ নেতাদের ঘুষ হিসেবে আদায় করা হয়েছিল।