এই খবরটি পডকাস্টে শুনুনঃ
লেগ স্পিনাররা লাল-সবুজের দলে দুয়ার অধিকাংশ সময় ধরে বন্ধই পেয়েছেন। ঘরোয়া ক্রিকেটেও তাদের খেলাতে অনীহা দেখানো ধারাবাহিক ঘটনা। এরমাঝেই অন্ধকারে উজ্জ্বল আলোকচ্ছটা হয়ে আবির্ভূত হয়েছেন রিশাদ হোসেন। টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপের দলে থাকা ২১ বর্ষী তারকা বিশ্বমঞ্চে চওড়া প্রত্যাশার কথা খোলামনে প্রকাশ করেছেন।
নীলফামারীর যে এলাকা থেকে রিশাদ উঠে এসেছেন, সেটি শহরের বাইরে। যেখানে ক্রিকেটের অবকাঠামোগত সুবিধা তেমনকিছু নেই। ছোটবেলায় মামাদের খেলা দেখে শেখা এবং আগ্রহের পারদ বেড়ে চলা।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ওয়েস্ট ইন্ডিজে হতে চলা টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে ক্রিকেটারদের ধারাবাহিক সাক্ষাৎকার প্রকাশ করছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। দলের সঙ্গে থাকা কোচ এবং খেলোয়াড়রা জানাচ্ছেন ভাবনা। সোমবার বোর্ড প্রকাশিত ভিডিওতে কথা বলেছেন ২৩ বর্ষী রিশাদ।
বিশ্ব আসরে খেলতে যাওয়া প্রসঙ্গে রিশাদ বলেছেন, ‘সারাজীবনের জন্য সবচেয়ে বড় অর্জন বলা যায়। বিশ্বকাপে খেলা আমার জন্য গর্বের ব্যাপার। নিজের সামর্থ্যের সর্বোচ্চটা দেয়ার চেষ্টা করবো।’
‘বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি বোলার হিসেবে নিজের নাম দেখতে চাই। যেহেতু আমি বোলার। অলরাউন্ডার হিসেবে নিজেকে অনেকধাপ এগিয়ে যেতে দেখতে চাই। আমি ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং- তিন মাধ্যমেই দলের প্রয়োজনে অবদান রাখতে চাই। সবসময় এটাই চেষ্টা করব।’
‘প্রথমে ক্রিকেট খেলা যখন শুরু করি, তখন লেগ স্পিনার ছিলাম। কিন্তু আমার চিন্তা ভাবনা ছিল আরও বড় কিছু করার। দেশের জন্য কিছু করতে হলে আমাকে তিন মাধ্যম থেকেই অবদান রাখতে হবে। আর যখন ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং সবক্ষেত্রে ভালো করতে চাইবেন, তখন কঠোর পরিশ্রম করতে হবে।’
টি-টুয়েন্টিতে ১৭ ম্যাচ খেলে ফেললেও লেট অর্ডারের ব্যাটার হওয়ায় ৭ ইনিংসের বেশি ব্যাট হাতে নামতে পারেননি রিশাদ। দেশের প্রতিষ্ঠিত ব্যাটারদের তুলনায় ১৩৫.৩৮ স্ট্রাইক রেটকে ভালোই বলা যায়। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে গত ওয়ানডেতে সিরিজের শেষ ম্যাচে ১৮ বলে ৫ চার ও ৪ ছক্কায় ৪৮ রানের অপরাজিত ইনিংসটি দলের জয়ে দারুণ ভূমিকা রেখেছিল।
বোলিংয়ের পাশাপাশি ব্যাট হাতে অবদান রাখতে পারাটা দলের জন্য যে ইতিবাচক রিশাদ নিজেও উপলব্ধি করছেন। তার ভাষ্য, ‘আমি চেষ্টা করেছি ব্যাটিংয়ে আরও উন্নতি করার জন্য। সব ব্যাটারই চায় বড় বড় শট খেলতে। আমিও সবসময় চাই যে বাউন্ডারির দিকে বেশি শট খেলতে। ছক্কা মারার জন্য নিজের উপর বিশ্বাস সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। কে বল করছে, সেদিকে খুব একটা ভ্রূক্ষেপ করি না। শুধু বল বুঝে সেই অনুযায়ী খেলার চেষ্টা করি।’
বাংলাদেশ দলের স্পিন কোচের দায়িত্বে আছেন পাকিস্তানের কিংবদন্তি সাবেক স্পিনার মুশতাক আহমেদ। তাকে নিয়ে রিশাদের মূল্যায়ন, ‘উনি ওনার অভিজ্ঞতা আমাদের সাথে শেয়ার করেন। বিশ্বমঞ্চে ওনার দাপুটে পারফরম্যান্স সম্পর্কে জানিয়েছেন। জিজ্ঞেস করেছিলাম কীভাবে বড় মঞ্চে পারফর্ম করা যায়। কীভাবে শান্ত ও ঠাণ্ডা থাকা যায়। এসব নিয়েই কথা হচ্ছিল। উনি বলেছিলেন বিশ্বমঞ্চে যত ঠাণ্ডা থাকা যায় তত ভালো পারফর্ম করার সুযোগ থাকে। আমি এগুলো প্রয়োগ করার চেষ্টা করব।’
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও যুক্তরাষ্ট্রে হতে চলা বিশ্বকাপে ভিন্ন ভিন্ন কন্ডিশনে খেলবে বাংলাদেশ। বিষয়টি নিয়ে অতি ভাবনায় ডুবতে নারাজ টাইগার স্পিনার। পিচের আচরণ বুঝে বোলিংয়ের পরিকল্পনা করবেন, জানালেন।
‘কন্ডিশন যেটাই হোক, আমাদের সামর্থ্য দিয়ে ডেলিভারি করতে হবে। চেষ্টা করবো আপাতত কন্ডিশন নিয়ে না ভাবার। মাঠে গিয়ে দেখব উইকেট কেমন বা অন্যান্য কিছু।’