বিশ্বকাপ থেকে বাদ পড়া, অধিনায়কত্ব হারানো ছাপিয়ে বিরাট কোহলি ভুগছিলেন রানখরায়। বিশ্ব ক্রিকেটের সময়ের অন্যতম সেরা ব্যাটার যখন নিজেকে হারিয়ে খুঁজছিলেন, তখন তাকে নিয়ে চলছিল চুলচেরা বিশ্লেষণ। কী করলে রানে ফিরবেন, মানসিক সমস্যা কাটিয়ে উঠতে পারবেন— আগ বাড়িয়ে অনেকেই কোহলিকে দিচ্ছিলেন হরেক উপদেশ। সেসময় আদতে কাউকে পাশে না পাওয়ার কথা এতদিনে এসে অকপটেই বললেন কোহলি।
টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপের পর দুঃসময়ের সেই ক্ষণটায় মানসিকভাবেও ভেঙে পড়েছিলেন কোহলি। অধিনায়কত্ব থেকেও সরে দাঁড়িয়েছিলেন। সেসময় মহেন্দ্র সিং ধোনি ছাড়া কোচ, সতীর্থ, সমালোচকদের কাউকেই পাশে পাননি। পাকিস্তানের বিপক্ষে এশিয়া কাপের সুপার ফোরে হারার পর সংবাদ মাধ্যমের সামনে সবাইকে ধুয়ে দিয়েছেন ৩৩ বর্ষী তারকা।
‘যখন টেস্টের অধিনায়কত্ব ছাড়লাম, মাত্র একজন মানুষের কাছ থেকে বার্তা পেয়েছিলাম, যার সঙ্গে আগে খেলেছি— নামটা এমএস ধোনি। তখন অনেকের কাছে আমার ফোন নম্বর ছিল। টিভিতে অনেকে পরামর্শ দিয়েছিল, অনেককিছু বলেছিল। কিন্তু নম্বর থাকা সত্ত্বেও তারা একটা বার্তাও পাঠায়নি।’ বলেছেন কোহলি।
কোহলি কেন রান পাচ্ছেন না, কী করলে রান পাবেন বা এমন সময়ে তার কী করণীয়— এসব বিষয় বিশেষজ্ঞ-সমালোচকদের নানান কথায় শিরোনাম হচ্ছিলেন কোহলি। সেসব সমালোচনা বা পরামর্শ তার কোনো কাজেই আসেনি বলছেন তিনি। বলেছেন, টিভিতে এসব না বলে তার কাছে এসে পরামর্শ দিলে তিনি পছন্দ করতেন। লোক দেখানো বিষয়গুলো কোহলি পছন্দ করেন না, তবে এসবে এখন আর বিরক্তও হন না।
‘বিশ্বাস করুন, বাইরের সমালোচনায় কান দেই না। ১৪ বছর ধরে জাতীয় দলে খেলে চলেছি, এটা খুব সহজে হয়নি। নিজের খেলা ফেরাতে কঠোর পরিশ্রম করাই আমার কাজ, যেটা সবসময় করতে চাই। দলের জন্য নিজেকে আরও উন্নত করতে চাই। এটা এমন কিছু যা সবসময় করে চলেছি, যেতে চাই।’
বিশ্রাম শেষে একাদশে ফেরা কোহলি নিজেকেও ফিরে পেয়েছেন। পাকিস্তানের বিপক্ষে গ্রুপপর্বের ম্যাচে করেছিলেন ৩৫ রান, পরে হংকং ও সুপার ফোরে পাকিস্তানের বিপক্ষে পেয়েছেন ফিফটি। হাজার দিনেরও বেশি সময় সেঞ্চুরি না পাওয়া কোহলিকে নিয়ে তবুও সমালোচনা চলছে— সেসব কথা গায়ে মাখেন না তিনি। ভারতের সাবেক অধিনায়ক নিজের দায়িত্বের ব্যাপারে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
‘দিনশেষে সবাই নিজে নিজের কাজটাই করেন। আমার কাজ হচ্ছে পরিশ্রম করা, দলের জন্য ১২০ শতাংশ দেয়া। যতদিন দল আমার উপর আস্থা রাখবে, ততদিন দলের বাইরে কী হচ্ছে, এটা নিয়ে ভাবছি না। সবারই নিজের মতামত আছে। নিজের উপর প্রত্যাশার চাপও দিতে চাই না। বিষয়গুলো দূরে রেখেছিলাম, ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে দেখছি— এটি জীবনের সর্বোত্তম ও শেষ কিছু নয় বলেও মানিয়ে নিয়ে স্বস্তিতে আছি। খেলাটা আমার উপভোগ করা দরকার।’