ভারতের ক্রিকেট অনেকবার এমন দেখেছে। দর্শক-সমর্থকদের ‘কে সেরা’ বিতর্কে একে-অন্যের বিপক্ষে স্ফুলিঙ্গ ছোটাতে দেখা গেছে। বিষয়টিতে অভ্যস্ত দেশটির ক্রিকেট বোর্ড বিসিসিআই। সেই কপিল দেব নাকি সুনীল গাভাস্কার বিতর্কের পর শচীন টেন্ডুলকার-সৌরভ গাঙ্গুলি হয়ে এখন যা ঠেকেছে বিরাট কোহলি ও রোহিত শর্মাকে ঘিরে!
ভারতের অন্যতম তারকাদের পারফরম্যান্স, দলের প্রতি নিবেদন, অধিনায়কত্ব এবং সবকিছু বিবেচনায় সমর্থকদের এমন আলোচনা স্বাভাবিকভাবেই দেখছে বোর্ডটি। বিসিসিআই কোষাধ্যক্ষ অরুণ ধামালের মতে, এসব বিচার-বিশ্লেষণ সমর্থকদের আবেগ ছাড়া অন্যকিছু নয়।
বিসিসিআই যতই দর্শকদের আবেগ বলে চালিয়ে দিক, আদতে মাঠে এবং মাঠের বাইরে বিরাট-রোহিতের দাপট তো স্পষ্টই। ভারতের সাবেক অধিনায়ক কোহলি ফর্ম হারিয়ে যখন একাদশে জায়গা পেতে সমালোচিত হচ্ছেন, তখন দলকে বিশ্বকাপ জেতাতে প্রস্তুত হচ্ছেন বর্তমান অধিনায়ক রোহিত।
রোহিত নাকি বিরাট— কে সেরা, এই বিতর্ক যদিও ধোপে টিকবে না। তবুও ভারতের অধিনায়কত্ব হারানোর পর বিরাটের পাল্লাটা কিছুটা হেলে যাচ্ছে। দলের হয়ে উদ্বোধনী ব্যাটার হিসেবে ২০১৩ সালে আত্মপ্রকাশের পর রোহিত তার জায়গায় অন্যতম সেরা হিসেবে আছেন। গত দুবছরে কিছুটা নাজুক ফর্মে থাকা কোহলিও কম যাননি। কিন্তু দর্শকরা কেন শুনবে সেকথা, বর্তমান বিচারে তারা পরিসংখ্যানের খেরোখাতায় হিসেব কষে বের করতে চেষ্টা করছে কে সেরা?
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ট্রেন্ডে রূপ নেয়া বিষয়টিকে সবার মুক্তমতের প্রসার হিসেবে দেখছেন অরুণ ধামাল, ‘আমরা এসব নিয়ে ভাবছি না। আবেগ তাদের প্রভাবিত করছে এবং এই বিতর্ক তুলছে। আবেগতাড়িত হলে কেউ এসব বলার প্রবণতা রাখেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এমন একটি প্ল্যাটফর্ম, যেখানে যা মন চায় তাই বলতে পারবেন। তারা তাদের উদ্দীপনা থেকে কথা বলে, এখানে কোনো বাধ্যবাধকতা নেই।’
পুরনো স্মৃতি মনে করিয়ে দিয়ে বিসিসিআই কোষাধ্যক্ষ বলেছেন, ‘আমরা ঠিক একই বিতর্ক দেখেছি সুনীল গাভাস্কার এবং কপিল দেব, পরে সৌরভ গাঙ্গুলি ও শচীন টেন্ডুলকারকে ঘিরে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিতর্কগুলো এমনভাবে ছড়িয়ে পড়ে যে লোকেরা সেটাই বিশ্বাস করতে শুরু করে দেয়।’
বহু সাফল্য এনে দিয়েছে বিরাট-রোহিতের মারকাটারি ব্যাটিং ও অধিনায়কত্ব। ভারতের জার্সিতে কোহলি-রোহিত একসঙ্গে ব্যাট করেছেন ৮২ ইনিংসে। ৪,৯১৪ রান তুলেছেন চোখ কপালে তোলা গড়ে ৬৩.৮১তে! এরমাঝে দুজনের রয়েছে ১৫টি ফিফটি ও ১৮টি শতরানের জুটি। দুইশ ছাড়ানো জুটি আছে পাঁচটি, সর্বোচ্চটা ২৪৬ রানের। রেকর্ডের খাতা খুললে তালিকা বিশাল জায়গা জুড়েই থাকবে।
ফেসবুক-ইনস্টা-টুইটারে রোহিত-বিরাট বিতর্ক জোরাল হলেও ভারতের বর্তমান দলের অন্যতম তারকা এ দুজনই। কে সেরা, এই বিতর্ক তাই বিসিসিআই আপাতত এড়িয়েই যাচ্ছে।