তীব্র গরম উপেক্ষা করে ঈদ ও পহেলা বৈশাখের টানা ছুটিতে পর্যটন নগরী কক্সবাজারে পর্যটকের ঢল নামে। প্রাকৃতিক পরিবেশে সময় কাটাতে পরিবার পরিজন নিয়ে ছুটে আসেন পর্যটকরা। প্রকৃতির ছোঁয়ায় আনন্দ-উপভোগে সময় পার করেন তারা।
ঈদের পর থেকে চার দিনে কক্সবাজারে প্রায় ৪ লাখ পর্যটকের সমাগম ঘটে। সাড়ে পাঁচ শতাধিক হোটেল-মোটেল ও রিসোর্টের শতভাগ কক্ষ বুকিং ছিল সোমবার পর্যন্ত। আগত পর্যটকদের হয়রানি রোধ ও নিরাপত্তায় নেওয়া হয় বিশেষ ব্যবস্থা। কক্সবাজার পর্যন্ত ট্রেন চালু হওয়ায় পর্যটকের সংখ্যা বেড়েছে বলে মনে করেন ব্যবসায়ীরা।
টুর অপারেটর এসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট তোফায়েল আহমেদ বলেন, ঈদের পরদিন থেকে কক্সবাজারে পর্যটকদের আগমন শুরু হয়। সোমবার পর্যন্ত প্রায় চার লাখ পর্যটক আসে কক্সবাজারে। তিনি বলেন, টানা ছুটিতে কেউ এসেছেন পরিবারের সাথে, কেউ স্বজন ও বন্ধুদের সাথে সমুদ্রজলের নীলদিগন্ত ছুঁয়ে দেখতে। আগত পর্যটকদের অনেকে লোনাজলে দাপাদাপির পাশাপাশি কেউ কেউ ঘোড়া, জেটস্কি ও বিচ বাইকে চড়ে বিনোদনে মেতেছেন। আবার কেউ কেউ বিস্তৃত সৈকতের বালিয়াড়িতে ঘুরাঘুরির পাশাপাশি স্মৃতি ধরে রাখতে তুলছেন ছবি। আর পর্যটকদের পাশাপাশি ঈদ উৎসব উদযাপনে যোগ দিয়েছেন স্থানীয় দর্শনার্থীরাও। এতে সৈকতের কবিতা চত্তর থেকে কলাতলী পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে পরিণত হয় জনসমুদ্রে।
ঢাকা থেকে আসা পর্যটক পারুল, ময়না, হারুন, মৌরি ও ও সুস্মিতা জানান, যান্ত্রিক জীবনের একগেঁয়েমি কাটানো এবং ঈদের আনন্দ একটু ভিন্নভাবে উপভোগে তারা সমুদ্রের অপার সৌন্দর্য্যের টানে কক্সবাজার ছুটে এসেছেন। রাজশাহী থেকে আসা নাসিম আক্তার মন্টি বলেন, ঈদের পর প্রথমবার এসে ভালই লাগছে। বেশি মানুষ হওয়ায় ভালো লাগার পাশাপাশি মনোরম পরিবেশে চমৎকার লেগেছে।
পর্যটকরা সাগরে গোসল করার সময় যেন পানিতে ডুবে না যায়, সাগরের সেই নিরাপত্তায় কাজ করেন লাইভগার্ড কর্মীরা।সিসিএফ লাইভ গার্ড সদস্য ওসমান বলেন, পর্যটকের সংখ্যা বেশি হওয়ার কারণে ঈদের পর থেকে তাদের বেশ কিছু স্বেচ্ছাসেবক দিয়ে কাজ করাতে হয়েছে।
হোটেল মালিক সমিতির নেতা আবদুর রহমান বলেন, রমজানের পুরো এক মাসের খরা কাটিয়ে ঈদ ও পহেলা বৈশাখের টানা ছুটিতে আশানুরুপ পর্যটক সমাগম ঘটায় খুশি হোটেল-মোটেলসহ পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।
টুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার অঞ্চলের এডিশনাল ডিআইজি আপেল মাহমুদ বলেন, আগত পর্যটকদের জন্য বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ, ২৫ টি সিসি টিভি ক্যামেরার মাধ্যমে মনিটরিং করার পাশাপাশি পর্যটকদের হয়রানি রোধে নানা পদক্ষেপ নেয় টুরিস্ট পুলিশ।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. শাহীন ইমরান জানান, পর্যটকরা যাতে কোনভাবে হয়রানির শিকার না হন, বেশি ভাড়া যাতে কেউ আদায় করতে না পারে সেজন্য নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের তিনটি টিম ঈদের পরদিন থেকে কাজ করছে।