গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকে পূর্ব ইউরোপের দেশ স্লোভাকিয়ার কোমারনো শহরে পপির চাষের জমিতে রাজহাঁসের বিচরণ বেড়েছে। কৃষকদের জমিতে ঘুড়ে ঘুড়ে পপি ফল খাচ্ছে তারা। ধারণা করা হয়, রাজহাঁসগুলো পপি ফলের প্রতি আসক্ত হয়ে এলাকাগুলোতে ধীরে ধীরে আবাস গড়ে তুলছে।
বাল্টিক নিউজকে ব্যালিন্টস পাম নামে স্লোভাকিয়ার এক কৃষক বলেন, তিনি এ ধরনের ঘটনা আগে কখনও দেখেননি। ওই এলাকায় ২০০টিরও বেশি রাজহাঁস তিনি গণনা করেছেন। তার ধারণা এ রাজহাঁসগুলো সম্ভবত তার জমিতে বৃষ্টির পানিতে সৃষ্ট খাল ও বিশাল সবুজভূমিতে আকৃষ্ট হয়ে এসেছে। কারণ এ ধরনের পরিবেশ রাজহাঁসের জন্য প্রয়োজন।
ব্যালিন্টস পাম বহু বছর ধরে ওই এলাকায় পপি চাষ করছেন। বেশ কয়েকমাস ধরে এমন অস্বাভাবিক ঘটনার সম্মুখীন হচ্ছেন তিনি। প্রায় ১০ হাজার ইউরোর মত ক্ষতি হয়েছে স্লোভাকিয়ার কৃষকদের। ৪ মাসে রাজহাঁসের ঝাঁক ৫ হেক্টর জমির পপি ফল খেয়ে ফেলেছে। কৃষকদের আক্ষেপ এর ক্ষতিপূরণ তাদের কেউ পরিশোধ করবে না, না বীমাকারী প্রতিষ্ঠান, না রাষ্ট্র।
১৪ কিলোগ্রাম ওজনের প্রাপ্তবয়স্ক একটি রাজহাঁস ক্ষুধা মেটাতে ফুল থেকে শিকড় পর্যন্ত পপি ফল খেয়ে নিচ্ছে। এই ফল রাজহাঁসকে নেশাগ্রস্ত করে তুলতে সক্ষম। ফলে রাজহাঁসগুলো আর উড়তে পারে না। ক্লান্ত, বিভ্রান্ত এবং উদাসীন রাজহাঁসেরা সহজে শিকারে পরিণত হচ্ছে। ব্যালিন্টস পাম বলেন, বীজ ছাড়া, সম্পূর্ণ শস্যটিই বিষাক্ত। রাজহাঁসগুলো এগুলো খেয়ে নিজেদের ক্ষতি করছে।
প্রকৃতিবিদরা খুঁজে পেয়েছেন, মাদকাসক্ত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রেও ঘটনাটি একই রকম। এ রাজহাঁসগুলো অল্প পরিমাণে পপি ফল খেলেও, তা তাদেরকে নেশাগ্রস্থ করবে। কিন্তু তারা বেশি পরিমাণে খেয়ে ওভারডোজে মারা যায়। এ পর্যন্ত এই কারণে বহু রাজহাঁসের মৃত্যু হয়েছে।
রাজহাঁস স্লোভাকিয়ায় একটি সংরক্ষিত প্রজাতি। দেশটিতে শুধু রাজহাঁস শিকার করা নিষিদ্ধই নয়। তাদের বিরক্ত করাও নিষিদ্ধ। স্লোভাকিয়ার প্রকৃতি সুরক্ষা পরিষেবার প্রতিনিধি জ্যান্স কালাভস্কিস বলেছেন, রাজহাঁসগুলোকে কেবল হাত দিয়ে ভয় দেখানো ছাড়া, এই মুহূর্তে অন্য কিছু করা যাবে না। রাজহাঁস ও অন্যান্য পাখিরা কার্পেথিয়ান অঞ্চলে সারা বছর থাকলেও, শীত মৌসুমে তারা কৃষকদের ক্ষেতে খাবার খুঁজতে যায়।