এই খবরটি পডকাস্টে শুনুনঃ
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে কক্সবাজারে সাগর উত্তাল হয়ে উঠেছে। আজ রোববার (২৫ মে) সকালে সাগরে জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে দুই-তিন ফুট বৃদ্ধি পেয়েছে। সমুদ্র সৈকতে বেড়াতে আসা পর্যটকদের নিরাপদে থাকতে বলা হয়েছে। সৈকতে নিয়োজিত বীচ কর্মী ও লাইফ গার্ড কর্মীরা পর্যটকদের সতর্কতা জারি করে মাইকিং করেছে। সৈকতে পর্যটকদের গোসল করতে নিষেধ করা হয়েছে।
অপরদিকে, জেলার উপকুল ও নিম্নাঞ্চলের ঝূকিপূর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের আশ্রয়কেন্দ্রে চলে আসার জন্য স্বেচ্ছাসেবকরা মাইকিং করছেন।
জানা যায়, গতকাল শনিবার রাত থেকে কক্সবাজারে বাতাসের গতিবেগ বৃদ্ধি পেয়েছে। রাতে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি বৃষ্টি হয়েছে। সাগরে মাছ ধরার ট্রলার সমুহকে উপকূলে নিরাপদে চলে আসতে বলা হয়েছে।
রেমাল মোকাবিলায় কক্সবাজারে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসন। কক্সবাজার জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত এক জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরানের সভাপতিত্বে জেলা প্রশাসকের শহীদ জাফর আলম সিএসপি সম্মেলন কক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান ঘূর্ণিঝড় রেমালের ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলায় সংশ্লিষ্টদের পাশাপাশি হোটেল মোটেল জোনও যেন প্রয়োজন মোতাবেক দুর্যোগে সহযোগিতার হাত বাড়ায় সেই অনুরোধ করেন। রোডস অ্যান্ড হাইওয়ে, ফায়ার সার্ভিসকে জরুরি রেসকিউর জন্য প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাহাড়ধস এড়াতে ঝুঁকিপূর্ণ জায়গা থেকে মানুষজনকে সরিয়ে আনার জন্য পৌরসভা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও খাবার এবং খিচুড়ির ব্যবস্থা করতে পৌরসভাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
পুলিশ সুপার মাহফুজুল ইসলাম জানান, ঘূর্ণিঝড় রেমাল মোকাবেলায় উপকূলের প্রান্তিক মানুষদের সচেতনতা ও আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে এসে নিরাপদে রাখার জন্য সকলকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
সভায় উল্লেখ করা হয়, ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় উপকূল এলাকাসহ জেলায় ৮ হাজার স্বেচ্ছাসেবক জেলায় কাজ করছে। ১৩ শ’ ভলান্টিয়ার কক্সবাজারে রয়েছে। ৪ নম্বর সিগন্যাল পাওয়ার পরপরই প্রচারণায় বেরিয়ে পড়বে স্বেচ্ছাসেবক দল। এছাড়া রেড ক্রিসেন্টের ৮৮০ ভলান্টিয়ার প্রস্তুত রয়েছে। প্রতি উপজেলায় ৫০ জন করে কর্মী রয়েছে ।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ঘূর্ণিঝড় রেমাল মোকাবিলায় ৬৩৮টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে। এছাড়া ৮ হাজার ৬ শ’ স্বেচ্ছাসেবক এবং ২২ শ সিপিপি প্রস্তুত রাখা হয়েছে জরুরি কাজে অংশগ্রহণের জন্য।
দুর্যোগ মোকাবেলায় জেলা প্রশাসন প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে বলে জানিয়েছে। জেলা প্রশাসনের কাছে চাল ৪৮৬ মেট্টিক চাল, ২ লাখ ৭৫ হাজার নগদ টাকা, ঢেউটিন ২৩ বান্ডিল, টিনের সাথে গৃহনির্মাণ মঞ্জুরির অর্থ ৬৯ হাজার মজুত রয়েছে। প্রয়োজনে শুকনো খাবার মজুত করা হবে।