মস্কোতে বাংলাদেশি ‘আদিম’ এর জয়জয়কার
৪৪তম মস্কো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের সমাপনী রাত
উৎসবে ‘স্পেশাল জুরি অ্যাওয়ার্ড’ পেলেন তরুণ নির্মাতা যুবরাজ শামীম
মস্কো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের ৪৪তম আসরে বাংলাদেশি চলচ্চিত্র ‘আদিম’ এর জয়জয়কার। প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র দিয়েই এই উৎসবে ‘স্পেশাল জুরি অ্যাওয়ার্ড’ জিতে নিয়েছেন তরুণ নির্মাতা যুবরাজ শামীম।
পুরস্কার ঘোষণার মধ্য দিয়ে শুক্রবার রাতে পর্দা নামলো বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন এই চলচ্চিত্র উৎসবের। উৎসবে ‘আদিম’ ছাড়াও ‘নো প্রায়র অ্যাপয়েন্টমেন্ট’ এর জন্য উৎসব সেরা ছবির পুরস্কার জিতে নিয়েছেন ইরানি নির্মাতা বেহরোজ শোয়েইবি। এই ছবির জন্য সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার পেয়েছেন পেগা আনগারানি।
‘আদিম’ নির্মাতা যুবরাজ শামীমের হাতে ‘স্পেশাল জুরি অ্যাওয়ার্ড’ তুলে দেন মস্কো চলচ্চিত্র উৎসবের পরিচালক।


তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় যুবরাজ শামীম চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, ‘এমন উৎসবে আমার নির্মিত ছবিটি মূল প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণের সুযোগ পাওয়ার চেয়ে বড় পুরস্কার আর নেই। তবু উৎসব কর্তৃপক্ষের আমন্ত্রণে এখানে অংশ নিয়ে নতুন অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি। তরুণ নির্মাতা হয়েও যে সম্মান পেয়েছি তা অমূল্য।’
নির্মাতা বলেন, দুপুরে যখন ‘নেটপ্যাক জুরি অ্যাওয়ার্ড’ প্রদান করা হয়, তখনই বিশ্বাস হচ্ছিলো না। আর যখন ‘স্পেশাল জুরি অ্যাওয়ার্ড’ এ আমার নাম ঘোষণা করা হয়, তখন সত্যিই আমি বাকরুদ্ধ! স্টেজে দাঁড়িয়ে বলেছিলাম, ‘এটা কি বাস্তব!’
এরআগে শুক্রবার দুপুরে যুবরাজ শামীমের ‘আদিম’ মস্কো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে জিতে নেয় ‘নেটপ্যাক জুরি অ্যাওয়ার্ড’। তখন এক প্রতিক্রিয়ায় তরুণ এই নির্মাতা বলেছিলেন, ‘ফেস্টিভাল জার্নির পুরো বিষয়টাই আমার কাছে এখন পর্যন্ত কাল্পনিক মনে হচ্ছে। মনে হচ্ছে আমি হয়তো কোন ঘোরের মধ্যে আছি। আমার এই অর্জন আমার বাবা শাহজাহান ভূঁইয়ার নামে উৎসর্গ করছি৷’
যুবরাজ জানান, ‘আদিম’ এর প্রিমিয়ার শো ছিলো ৩০ আগস্ট। ছবিটি দেখে সাধারণ দর্শক থেকে উৎসব বিচারকরাও প্রশংসা করেছেন। প্রিমিয়ারের পর দিনই আমার দেশে চলে আসার কথা। কিন্তু উৎসব কর্তৃপক্ষ আমাকে শেষ দিন পর্যন্ত থাকতে বলেন। তখনই কিছুটা আঁচ পেয়েছিলাম যে কিছু একটা হতে যাচ্ছে! সেটারই যেন প্রতিফলন পেলাম আজ।
টঙ্গীর একটি বস্তিতে হয়েছে ‘আদিম’ এর শুটিং। ছবির কাহিনীও বস্তিকে কেন্দ্র করেই। ছবির চরিত্ররাও বস্তিতেই বাস করেন। গণঅর্থায়নে নির্মাতার নিজস্ব প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান রসায়ন’র ব্যানারে নির্মিত এবং সহ প্রযোজক হিসেবে সিনেমাকার ও লোটাস ফিল্ম যুক্ত আছে বলেও জানান যুবরাজ।
আদিম’র বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন বাদশা, দুলাল, সোহাগী, সাদেক প্রমুখ। চলচ্চিত্রটির চিত্রগ্রহণে ছিলেন আমির হামযা এবং সাউন্ড ও কালার করেছেন সুজন মাহমুদ।