অভিনেত্রী তানজিন তিশার সঙ্গে বিনোদন সাংবাদিকদের দ্বন্দ্বের অবসান ঘটল শনিবার। এদিন দুপুর রাজধানীর মিন্টু রোডের ডিবি কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন তিশা। এসময় অভিনয় শিল্পী সংঘের সভাপতি আহসান হাবিব নাসিম এবং সাধারণ সম্পাদক রওনক হাসান উপস্থিত ছিলেন।
অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদের মধ্যস্থতায় বৈঠক শেষে দুই পক্ষই গণমাধ্যমের মুখোমুখি হন। এসময় তানজিন তিশা দুঃখপ্রকাশ করে বলেন, ‘আপনাদের সকলের ভালোবাসা ও সহযোগিতায় অভিনয়শিল্পী তানজিন তিশা। আমি কয়েকদিন আগে হাসপাতালে অসুস্থ ছিলাম। সেখান থেকে বাসায় ফেরার পর দেখলাম, দুয়েকটি নিউজপোর্টাল আমার আত্মহত্যা চেষ্টা শিরোনামের নিউজ করেছে। এমন সময় সাংবাদিক তামিম (যার সঙ্গে আমার কোনো পূর্ব পরিচয় নেই) সে আমাকে একটা টেক্সট করে, যেটা ওই সময়ের জন্য আমার কাছে যৌক্তিক মনে হয়নি। আমি ভাবতেই পারিনি, এই সময়ে কেউ আমাকে এমন একটি টেক্সট করবে বা একজন নারীকে কেউ এমন প্রশ্ন করতে পারে। আমি সহ্য করতে না পেরে তাকে জানাই, টেক্সটের বিষয়ে নিউজ করলে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেব।’
এসময় দুঃখপ্রকাশ করে তিশা আরো বলেন, ‘তার সঙ্গে ফোনে যেসব শব্দ উচ্চারণ করেছি, আমি জানি তা সঠিক নয়। সেটার জন্য আমি দুঃখপ্রকাশ করেছি, এখনও করছি। এরমধ্যে আমার সঙ্গে কথা বলার কলরেকর্ড অনুমতি ছাড়া প্রচার করা হয়েছে। তা শুনে অন্যান্য সাংবাদিকরা রেগে যায়, যা খুবই যৌক্তিক। তবে আমাকে ও আমার পরিবারকে নিয়ে অনেকে অসত্য, মনগড়া সংবাদ ও লেখা সোশ্যাল মিডিয়ায় লেখেন। সেসব দেখে আমি রেগে যাই। তারপর আমি ডিবিতে অভিযোগ করতে আসি। সেখানেও গণমাধ্যমের সামনে তামিম ও প্রতিষ্ঠানের নাম নিয়ে ফেলি। যেটা আমি উদ্দেশ্যমূলকভাবে নিইনি। সেজন্য প্রতিষ্ঠানটির (চ্যানেল টোয়েন্টিফোর) কাছে আমি দুঃখপ্রকাশ করছি। একজনকে নিয়ে প্রতিষ্ঠান চলে না।’
তামিমের বিরুদ্ধে করা অভিযোগ তুলে নেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি পুলিশের কাছে যে অভিযোগ করেছিলাম, সেটাও তুলে নিচ্ছি। তবে যারা আমার এবং আমার পরিবারকে ঘিরে অসত্য-অসম্মানজনক নিউজ প্রকাশ করেছে, তারা অনুতপ্ত হবে। সেইসঙ্গে লেখাগুলো সরিয়ে নেবেন, সেটাও আমি প্রত্যাশা করি। কারণ এটা একজন শিল্পী বা নারীর জন্য অসম্মানজনক।’
এসময় বিনোদন সাংবাদিকদের মুখপাত্র হিসেবে ছিলেন বুলবুল আহমেদ জয়। তিনি বলেন,‘সাংবাদিকরা কখনোই শিল্পীদের প্রতিপক্ষ নয়। গণমাধ্যমের কাজ প্রশ্ন করা, সত্য সংবাদ যাচাই-বাছাই করে পাঠক-দর্শকের সামনে তুলে ধরা। এই কাজটি করতে গিয়ে কখনও কখনও ভুল বোঝাবুঝি হয়। সেদিন তামিম ক্ষুদেবার্তায় তিশার কাছে যে বিষয়টি জানতে চেয়েছিলেন, সেটি না পাঠালেও পারতেন। আবার তিশাও সেই প্রশ্নটি এড়িয়ে যেতে পারতেন। যাই হোক, বিতর্ক নয়। আমরা সমাধান চাই। আমরা একে অন্যের সাথে মিলেমিশে কাজ করে যেতে চাই। এরমধ্যে তানজিন তিশা তার জায়গা থেকে ভুল বুঝতে পেরেছেন, দুঃখপ্রকাশ করেছেন। আমরাও আমাদের জায়গা থেকে দুঃখপ্রকাশ করছি।”
এরপর শিল্পীসংঘের সভাপতি তার বক্তব্যে বলেন, “শিল্পী আর সাংবাদিক কখনোই প্রতিপক্ষ নয়। এটা শিল্পীরাও ভুলবেন না, সাংবাদিকরাও ভুলে যাবেন না। কারণ আমরা একে অপরের পরিপূরক। যে বিষয়টা ঘটেছে, সেটা আসলেই অনাকাঙ্খিত। বাংলা নাটককে দর্শকের আস্থার জায়গায় নিয়ে যেতে এসব ভুল বোঝাবুঝি কোনোভাবেই সামনে কাম্য নয়।”