কাঠামো পুনর্গঠন ঘিরে তৈরি হওয়া বিরোধের জেরে শ্রীলঙ্কায় সব ধরনের ঘরোয়া ক্রিকেট টুর্নামেন্ট বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট (এসএলসি) শুক্রবার এ পদক্ষেপের কথা জানায়। অচলাবস্থা নিরসনের ক্ষমতা এখন দেশটির ক্রীড়ামন্ত্রী রোশান রানাসিংহের হাতে রয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসএলসি জানিয়েছে, শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট বোর্ড পরিচালিত সকল ঘরোয়া টুর্নামেন্ট বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। চলমান মেজর ক্লাব তিন দিনের টুর্নামেন্ট এবং ‘বি’ স্তরের আমন্ত্রণমূলক ক্লাব তিন দিনের টুর্নামেন্টও এর আওতাভুক্ত থাকবে।
২০২১ সালেও ঘরোয়া কাঠামোকে পুনর্গঠন করার চেষ্টা নিয়ে এসএলসির ভেতর ঝামেলা বেঁধেছিল। বিষয়টি নিয়ে হয়েছিল ব্যাপক সমালোচনা। সদ্য বিলুপ্ত কারিগরি উপদেষ্টা কমিটি দুই স্তরের কাঠামো বাতিল করে দুটি গ্রুপে ১৩টি করে মোট ২৬ দল নিয়ে তিন দিনের টুর্নামেন্ট আয়োজনের সুপারিশ করেছিল। কমিটির প্রধান ছিলেন সাবেক লঙ্কান ক্রিকেটার অরবিন্দ ডি সিলভা।
বিলুপ্ত হওয়া কমিটির পরিকল্পনা ছিল, ২৬টি দল একটি মৌসুমে তিন দিনের ম্যাচে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। দুই গ্রুপের পয়েন্ট তালিকার তলানিতে থাকা দুটি করে মোট চার দল প্রথম দুই বছরের জন্য অবনমিত হবে। তৃতীয় বছর থেকে অবনমিত হবে তিনটি করে দল। এতে করে শ্রীলঙ্কার প্রিমিয়ার ঘরোয়া টুর্নামেন্টে দল সংখ্যা ১৫টিতে নেমে যেতো। এমনটি হলে সকল অভিযোগের সমাধানের পাশাপাশি ঘরোয়া ক্রিকেট সংস্কৃতিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা বৃদ্ধি হতো বলে কমিটি মত দিয়েছিল।
পরিকল্পনায় আরও ছিল, অবনমিত দলগুলো আর তিনদিনের টুর্নামেন্টে অংশ নিতে পারবে না। তার পরিবর্তে সীমিত ওভারের টুর্নামেন্ট গভর্নরস ট্রফিতে খেলবে। অবনমিত হওয়া বেশ কয়েকটি ক্লাব কম ম্যাচ কম পাওয়া ওনিম্নমানের টুর্নামেন্টে নেমে যাওয়ার অভিযোগ জানায়।
অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত ১৭ জুন এসএলসি জরুরি সাধারণ সভা ডাকে। ২০২১ সালে বিদ্যমান দ্বি-স্তরীয় ব্যবস্থাকে পুনঃস্থাপন করার প্রশ্নে সদস্যদের মধ্যে ভোট অনুষ্ঠিত হয়। বোর্ড সদস্যদের অনুমোদন সাপেক্ষে ওই মাসেই মেজর ক্লাব তিন দিনের টুর্নামেন্ট এবং ‘বি’ স্তরের আমন্ত্রণমূলক ক্লাব তিন দিনের টুর্নামেন্ট শুরু হয়।
বোর্ড শর্ত দেয়, গত বছরে অবনমিত হওয়া চার দলের সঙ্গে গভর্নরস ট্রফির শীর্ষ ছয় দল নিয়ে হবে নতুন গঠিত ‘বি’ স্তরের টুর্নামেন্ট। যদিও এই পদক্ষেপের প্রতিবাদ করেছিল গেস্টো ক্রিকেট ক্লাব (জিসিসি)। দলটি বর্তমানে গভর্নরস ট্রফি টুর্নামেন্টের নীচের দিকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। তারা বিষয়টি আদালতে নিয়ে যায়। গত মাসে আদালতের রায় জিসিসির বিপক্ষে গেলে টুর্নামেন্ট চলতে থাকে।
রায়ে অসন্তুষ্ট জিসিসি শ্রীলঙ্কার ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের কাছে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে। ক্রীড়া মন্ত্রী রানাসিংহে বিষয়টি সমাধানের দায়িত্ব দেন মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালককে। গত ২৫ আগস্ট মহাপরিচালক এসসিএলকে চিঠি পাঠান। সেই চিঠিতে লেখা ছিল, শ্রীলঙ্কার ক্রীড়া আইন অনুযায়ী, এসএলসি তাদের সংবিধানে কোনো পরিবর্তন আনতে চাইলে ক্রীড়ামন্ত্রীর অনুমতি দরকার।
এসএলসির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, তারা ক্রীড়ামন্ত্রীর কাছে অনুমোদন চেয়ে চিঠি দিয়েছে। কিন্তু কোনো সাড়া পায়নি। যার ফলে বিষয়টি সমাধান না হওয়া পর্যন্ত এসএলসি সকল ঘরোয়া ক্রিকেট টুর্নামেন্ট স্থগিত করতে বাধ্য হয়েছে।