প্রচন্ড বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করে বর্ণিল আয়োজন ও অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে কানাডার সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা শুরুর প্রাক্কালে শুভ মহালয়া পালন করলেন ক্যালগেরির সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।
শুক্রবার (১৩ অক্টোবর) স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উৎসব শুরু হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন জয়দীপ স্যানাল, কিরণ বনিক শংকর সহ ক্যালগেরির সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও সদস্যগণ।
শুভ মহালয়া উপলক্ষে কানাডার ক্যালগেরিতে নেয়া হয়েছে ব্যাপক আয়োজন। ক্যালগেরীর বঙ্গীয় পরিষদের উদ্যোগে নিজস্ব ভবনে গীতি-নৃত্য-আলেখ্য “মহিষাসুরমর্দিনী” মঞ্চায়ন হয়েছে। যার মাধ্যমে শুরু হচ্ছে ক্যালগেরীর প্রবাসী বাঙালি হিন্দুদের বৃহত্তম ধর্মীয় অনুষ্ঠান শারদীয় দুর্গোৎসবের কাল দেবীপক্ষের। আর তাই চণ্ডীপাঠের মাধ্যমে মর্ত্যলোকে আমন্ত্রণ জানানো হবে শক্তির দশভুজা দেবীকে।
বঙ্গীয় পরিষদের সভাপতি জয়দীপ স্যানাল জানান, মহালয়া দুর্গোৎসবের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। কারণ এ দিন থেকেই শুরু হবে দেবীপক্ষের। অর্থাৎ দুর্গাপূজার ক্ষণ গণনা শুরু হচ্ছে এ দিন থেকেই।
তিনি জানান, জগতে দু’টি বিরোধী শক্তি ক্রিয়াশীল। একটি জগৎকে রক্ষা করে, কল্যাণের পথে উন্নতির পথে নিয়ে যায়। এটি দৈবী শক্তি। অপরটি অকল্যাণের পথে, ধ্বংসের পথে নিয়ে যেতে চেষ্টা করে। এটি আসুরী শক্তি। এই দুই শক্তির যুদ্ধ সততই চলছে আমাদের অন্তরে এবং বাহিরে। এই সংঘর্ষই দেবাসুর সংগ্রাম নামে কল্পিত। দুর্গাপূজা অপশক্তির বিরুদ্ধে শুভশক্তির বিজয়ে ভক্তিঅর্ঘ্য নিবেদন। তমসা থেকে জ্যোতিতে উত্তরণের প্রার্থনা। অন্তরের পশুভাব দেবীচরণে বলি দিয়ে দেবভাব প্রতিষ্ঠা দেবীপূজার চরম উদ্দেশ্য। আমাদের আশা দেবী অর্চনার মূল উদ্দেশ্য সবার হৃদয়ে প্রতিফলিত হোক।
মহালয়ার পর কানাডার প্রবাসী সনাতন ধর্মাবলম্বীরা আগামী ২০ অক্টোবর ষষ্ঠীপূজার মধ্য দিয়ে দুর্গোৎসবের আনুষ্ঠানিক সূচনা ঘটবে। সনাতন বিশ্বাস ও পঞ্জিকামতে, দেবী দুর্গা এবার ঘোড়ায় চড়ে স্বর্গলোক থেকে মর্ত্যলোক বা পৃথিবীতে আসবেন। দেবী বিদায়ও নেবেন ঘোড়ায়। যার ফল হচ্ছে ফসল ও শস্যহানি।
উল্লেখ্য বরাবরের মত এ বছর ও কানাডার ক্যালগেরিতে “ক্যালগেরি বঙ্গীয় পরিষদ”, “আমরা সবাই” ও “বাংলাদেশ পূজা পরিষদ” পৃথক পৃথকভাবে ভিন্ন ভিন্ন স্থানে শারদীয় দুর্গা উৎসব পালন করবে।