সাকিব আল হাসান দীর্ঘদিন জাতীয় দলের নেতৃত্ব দিয়েছেন, দিচ্ছেন। যেটা অল্প কিছু নির্বাচিত খেলোয়াড়ের একটি দল নিয়ে লড়াই। এবার দাঁড়িয়েছেন জাতীয় নির্বাচনে। নানা বয়সী, নানাবিধ মানুষকে নিয়ে জনগণের প্রতিনিধি নির্বাচিত হওয়ার লড়াই। যে কাজে একেকজনের একেক ধরনের প্রার্থী পছন্দ-অপছন্দ। ৩৬ বর্ষী সাকিবকে যেমন নিঃস্বার্থ ভালোবাসার মানুষের অভাব নেই, তেমনি অভাব নেই সমালোচকেরও। সবাইকে নিয়েই চলতে হবে সাকিবকে, লাগবে সবারই ভোট। কিন্তু কেন সকলে সাকিবকেই ভোট দেবেন?
বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশের ক্রিকেটের ব্র্যান্ড সাকিব, সঙ্গে আছে জনপ্রিয়তা। তা দিয়ে তিনি কি ভোটের লড়াইয়ে সর্ব সাধারণের মনে সাড়া ফেলতে পারবেন? চ্যানেল আই ভবনে এক আলাপচারিতায় সে প্রশ্নের খোলাখুলি উত্তর দিয়েছেন ৩৬ বর্ষী সাকিব।
কেন সাকিবকে জনগণ ভোট দেবেন, বিশেষ কোনো পরিকল্পনা আছে কিনা? এমন প্রশ্নে তিনি হেসে বলেছেন, ‘কেন সাকিবকে ভোট দেবে না (হাসি)? বিশেষ পরিকল্পনা বলতে সমষ্টিগতভাবে একটা পরিবর্তন আনতে চাই, যেটা আমি আগেও বলেছি। আমাদের বাংলাদেশে এখন বেশ কয়েকটি জেলা আছে, যারা উন্নতির দিক থেকে উদাহরণ সৃষ্টি করেছে। সেই জেলাগুলো থেকে অনেককিছু শিক্ষা নেয়ার আছে। আর আমি মনে করি মাগুরায় কাজ করার অনেক সুযোগ আছে। তবে আমি বলব না যে মাগুরায় আগে কোনো কাজ হয়নি।’
‘আগে যারা ছিলেন, তারাও অনেক কাজ করেছেন। ভবিষ্যতে যে আসবেন, তিনিও কাজ করবেন। কিন্তু কথা হচ্ছে এখানে আমি কতটা বেশি কাজ করি, করতে পারি। উন্নতি তো সবারই হয়, কারো ৫%, ১০% বা ১৫%, আমি কত বেশি ইমপ্রুভ করতে পারি সেটা হচ্ছে আমার চ্যালেঞ্জ।’
ক্রিকেট মঞ্চ থেকে নির্বাচন, এই পরিবর্তন আপনার পরিবার কীভাবে নিচ্ছে? এমন প্রশ্নে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার জানান, ‘দেখুন, জিনিসটা কখনোই পরিবর্তন হয়নি। জিনিসটা হচ্ছে আমাকে যে অবস্থায় যখন যেভাবে চলতে হচ্ছে, আমি সেভাবে চলছি। আমার ক্রিকেটের জীবনে আমাকে যেভাবে চলতে হয়েছে, আমি সেভাবে চলার চেষ্টা করেছি।’
‘আর রাজনীতি, এ ব্যাপারে আপনি যেটা বলছেন, আমি তো মাগুরাতে ছোট সময় থেকেই বড় হয়েছি। মাগুরাতে একটা নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবার থেকেই আমি এসেছি। এখানের মোটামুটি সবকিছুই জানি। মাঠের ধান কাটা থেকে শুরু করে মরিচ তোলা, ফজরের নামাজের পর সবগুলো করার অভ্যাসই আমার আছে।’
এরপর নিজের ছোটবেলার অভিজ্ঞতা বলতে থাকেন সাকিব, ‘আমার হাতে এই কাটা দেখতে পাচ্ছেন? এগুলো সেই সব কাঁচি থেকেই হয়েছে। মাড়াই করা, গরু দিয়ে হাল চাষ, গোবরের মধ্যে পা পড়া, টেনিস বলে খেলা, সবই অভ্যাস আছে। কতবার যে শামুকে পা কেটেছে, সেগুলো আমার নিজের জানা নেই। কতবার যে টিটেনাস এর টিকা নিতে হয়েছে। তাই স্বাভাবিকভাবে বলতে গেলে এই জিনিসগুলোর যে অভ্যাস নেই তা না। তবে হ্যাঁ, ক্রিকেটে যেহেতু ছিলাম, স্বাভাবিকভাবে অত মানুষের সাথে দেখা করার সুযোগ হয়নি, কথা বলারও সুযোগ হয় না, কিংবা করার প্রয়োজনও হয় না। তবে হ্যাঁ, এখন যে প্রফেশন সেখানে করা উচিত, করা দরকার বা করা প্রয়োজন এবং আমি সেটাই করব।’
সোমবার আগামী ৭ জানুয়ারির দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের জন্য মাগুরা-১ আসনে প্রার্থীদের মাঝে প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী সাকিব প্রত্যাশামতো পেয়েছেন নৌকা প্রতীকই। এবারই প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন টাইগার অধিনায়ক। এরআগে তিনটি আসনে মনোনয়ন কেনা টাইগারদের বিশ্বসেরা তারকা ২৬ নভেম্বর মাগুরা-১ আসন থেকে নৌকার মাঝি হওয়ার অনুমতি পান।