তীব্র শীতে জনজীবন বিপর্যস্ত উত্তরের জনপদ দিনাজপুরে। আজ মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) সেখানে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৮ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঘন কুয়াশার সাথে বইছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহও। তীব্র শীতের কারণে কাজে বের হতে পারছে না দিনমজুরেরা।
দিনাজপুর আঞ্চলিক আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান জানান, জেলার উপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। আজ সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৮ দশমিক ৯ ডিগ্রী সেলসিয়াস। বাতাসের আর্দ্রতা ৯৩ শতাংশ। তাপমাত্রা আরো কমতে পারে বলে জানান তিনি।
ঘন কুয়াশা আর কনকনে শীতে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। সবচেয়ে দুর্ভোগে পড়েছে ছিন্নমূল ও খেটে খাওয়া মানুষ।
আজ মঙ্গলবার সকালে দিনাজপুরের শ্রম বাজার সষ্টিতএই প্রতিনিধির সাথে কথা হয় শীতে কাবু দিনমজুর মোসলেম উদ্দিনের(৫২)। তিনি বলেন, ‘জাড়ত (শীতে) কইজাটাও ( কলিজা) কাঁপেছে বাপ। তারপরও কামত ( কাজে) বের হইচু (হয়েছি)। কিন্তু, কাহা (কই) কাম কুন্ঠে (কোথায়)? কাম-কাইজ কিছুই নাই। বেহান (সকাল) থাকি বসি আছু (আছি)। জাড়ত দু’দিন বাইর হই নাই। বউ-ছোয়াল (সন্তান) না খাই আছে। এখন কী করিমো বাপ!’

শুধু মোসলেম উদ্দিন নয়, শীতের প্রকোপে এ জেলার অসংখ্য খেটে খাওয়া হতদরিদ্র মানুষের বেহাল দশা। চরম দুর্ভোগে পৌছেছে তাদের জীবনযাত্রা।
অন্যদিকে শীতের তীব্রতা বৃদ্ধির কারণে শীতজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। এর মধ্যে সর্দি-কাশি, ইনফ্লুয়েঞ্জা, নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ার প্রকোপ বেশি। লাগাতর ঠান্ডায় কেউ কেউ টাইফয়েডেও আক্রান্ত হচ্ছে।
অরবিন্দ শিশু হাসপাতালের চিকিৎসক ডাঃ নাফিজা নাঈম জানান, বছরের শুরু থেকেই তীব্র শীতের কারনে শিশুদের নিউমোনিয়া, ডায়রিয়াসহ শীত জনিত রোগে শিশু আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে। শিশুদের শরীরে যাতে শীত না লাগে সে ব্যাপারে সাবধানতা অবলম্বনের জন্য পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
শহরতলীর ছিন্নমূল পরিবারের শিশু ও বৃদ্ধদের অবস্থা সবচেয়ে করুন। আগাম শীতের প্রকোপ মোকাবিলায় প্রস্তুতি না থাকায় অনেক দুর্ভোগে আছেন তারা। শীতের কারণে জেলা শহরের হকারস মার্কেট এবং ফুটপাতের গরম কাপড়ের দোকানগুলোতে বাড়ছে গরম কাপড় সংগ্রহে শীতার্ত মানুষের ভিড়। কেউ আবার খড়-কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের ব্যর্থ প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।