এই খবরটি পডকাস্টে শুনুনঃ
তীব্র তাপদাহে পুড়ছে চুয়াডাঙ্গা। বৈশাখ মাসের মাঝামাঝির দিক, তবুও কালবৈশাখী নিয়ে স্বস্তির বার্তা দিতে পারছে না চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিস। বরং তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে বলে পূর্বাভাস দিল আবহাওয়া অফিস।
শুক্রবার ২৬ এপ্রিল তাপপ্রবাহের মধ্যেই চুয়াডাঙ্গায় বেলা ৩টায় সারাদেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে
৪২ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস যা এ মৌসুমের সর্বোচ্চ বলে জানা গেছে। চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২০১৪ সালের ২১ মে রেকর্ড করা হয়েছিল। সেই বছর এ জেলায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪৩ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
চলতি এপ্রিল মাস জুড়ে তাপপ্রবাহের সম্ভাবনা রয়েছে। সেই কারণে হিট অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। এ অবস্থায় সকলকে সাবধানে থাকার অনুরোধ জানিয়েছেন চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার।
দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সীমান্তবর্তী জেলা চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে দীর্ঘ সময় তাপপ্রবাহ বয়ে যাওয়ায় এ অঞ্চলের শ্রমিক, দিনমজুর, ভ্যান-রিকশা চালকদের জীবন-জীবিকাতে দেখা দিয়েছে সীমাহীন দূভোর্গ। সেই সাথে বেড়েছে গরম জনিত রোগীর সংখ্যা। হাসপাতালে শয্যার অভাবে এসব রোগীদের চিকিৎসা নিতে হচ্ছে মেঝেতে এবং হাসপাতালের বারান্দায়।
রোদের প্রখরতায় ক্ষতি হচ্ছে আম, লিচু, ধানসহ বিভিন্ন ফল-ফসলের। এ জেলায় সূর্যের প্রখরতা এতোটাই বেশি যার জন্য স্বাস্থ্য বিভাগের পরামর্শক্রমে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তথ্য অফিসের সহায়তায় জেলার সব স্থানে মাইকিং করে জনসাধারণকে সতর্ক করা হচ্ছে। তারা যেন অতি প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের না হয়।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার সুমদিয়া গ্রামের রিক্সাচালক শাহজাহান আলী বলেন, এবারের মতো গরম আমি আগে দেখিনি। রোদে গেলে মনে হচ্ছে গায়ের চামড়া পুড়ে যাচ্ছে।
চুয়াডাঙ্গা শহরতলী দৌলাতদিয়ার গ্রামের ৫৩ বছর বয়সী রমজান মিয়া ২৩ বছরেরও বেশি সময় ধরে ভ্যান চালাচ্ছেন। গরমের কারণে তার দৈনন্দিন আয় প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে।
তিনি বলেন, আয় করবো কী করে? ভ্যানে মাল নিয়ে টানতে গেলেই গলা-বুক শুকিয়ে কাঠ হয়ে যাচ্ছে। পানি খাওয়ার পরও মনে হচ্ছে তেষ্টা মিটছে না।
চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের সিনিয়র আবহাওয়া পর্যবেক্ষক রাকিবুল হাসান জানিয়েছেন, এপ্রিল মাস দেশের উষ্ণতম মাস। এ মাসে গরম বেশি। দেশের বিভিন্ন স্থানে কিছু কিছু জায়গায় বৃষ্টি হলেও এ জেলায় বৃষ্টি নেই। এ কারণে গরম বাড়ছে।
তিনি আরও বলেন, গরম বেশি অনুভূত হওয়ার কারণ, বাতাসে আর্দ্রতা বেশি। শুক্রবার বেলা ৩ টায় ১১ শতাংশ বাতাসের আর্দ্রতার সাথে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪২ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাপমাত্রা আরও বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। তাই সকলকে সাবধানে থাকার অনুরোধ জানান তিনি।