করোনা মহামারির পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে বিশ্বজুড়ে মুদ্রাস্ফীতি বেড়েছে। তবে বাংলাদেশে মুদ্রাস্ফীতির চেয়েও ভয়াবহ আকার ধারণ করছে কারসাজি। কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী চক্রের অতি মুনাফালোভী মানসিকতার কারণে নাভিশ্বাস উঠছে সাধারণ মানুষের। সর্বশেষ দিনাজপুরে আবারও চালের বাজার অস্থিতিশীল হয়ে পড়েছে।
চ্যানেল আইয়ের প্রতিবেদনে জানা যায়, দিনাজপুরে চালের বাজার অস্থিতিশীল হয়ে বেড়েছে সব ধরনের চালের দাম। খুচরা ও পাইকারি বাজারে প্রায় সব রকম চালে কেজি প্রতি বেড়েছে ২ টাকা থেকে ৩ টাকা। বেড়েছে ধানেরও দাম। এক সমপ্তাহের ব্যবধানে প্রকারভেদে প্রতিবস্তা ধানের দাম বেড়েছে দেড়’শ থেকে থেকে দুই’শ টাকা।
এছাড়া মিনিকেট নামে কোনো ধানের জাত না থাকলেও চাল ব্যবসায়ীরা মিনিকেট নাম দিয়ে বেশি দামে বিক্রি করছে। এ বিষয়টি নিয়ে কারসাজি হচ্ছে কিনা সেটা সন্দেহের তালিকায় রয়েছে সংশ্লিষ্টদের। এজন্য কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো প্যাকেটজাত পণ্যে বেশি লাভ করছে কিনা, পণ্যের দাম ঠিক করার বিষয়েও সিদ্ধান্ত নিতে সংশ্লিষ্টদের সাথে বৈঠকে বসতে যাচ্ছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। মিনিকেট চালের নামে ভোক্তাদের সাথে প্রতারণা হচ্ছে কিনা তাও খতিয়ে দেখা হবে। কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো সরকার ও গোয়েন্দা সংস্থার পুরোপুরি নজরে আছে বলে জানিয়েছে অধিদপ্তর।
অন্যদিকে চ্যানেল আইয়ের আরেকটি প্রতিবেদনে জানা যায়, বরিশাল ও চাঁদপুরের ইলিশ রপ্তানি হচ্ছে ভারতে। তবে সাধারণ ক্রেতাদের অভিযোগ, বাজারে ইলিশের প্রচুর সরবরাহ থাকলেও দাম নাগালের বাইরে। চাঁদপুর মাছ ব্যবসায়ি সমিতি বলছে, ভারতে রপ্তানি করায় স্থানীয় বাজারে ইলিশের দাম কমছে না।
শুধু চাল বা ইলিশ নয়, ডলার থেকে শুরু করে বলতে গেলে এমন কোনো ক্ষেত্র নেই যেখানে দাম বাড়ানো হয়নি। সরকারি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো মাঝেমধ্যে অভিযান চালালেও দীর্ঘমেয়াদে প্রভাব ফেলতে পারছে না। সরকারের একার পক্ষে এটা সম্ভবও নয়। সেজন্য সরকারের পাশাপাশি সবার সদিচ্ছা এবং জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতা না থাকলে দ্রব্যমূল্যের কারসাজি বন্ধ করা দুঃসাধ্য ব্যাপার। তবে সেই দুঃসাধ্যকে সাধন করতেই হবে। সে বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে আমরা সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।