বাউল সম্রাট শাহ আবদুল করিমের জন্মদিন বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি)। ১৯১৬ সালের এই দিনে সুনামগঞ্জের দিরাই থানার উজানধল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। প্রতিবারের মতো এবারের জন্মদিনেও উজানধল গ্রামে বসছে দুই দিনব্যাপী হচ্ছে উৎসব।
বৃহস্পতিবার থেকে কালনী নদীর তীরে উজানধল গ্রামে চলছে ‘শাহ আবদুল করিম লোক উৎসব ২০২৪’, চলবে শুক্রবারও। শাহ আবদুল করিম পরিষদ আয়োজিত উৎসবের সহযোগিতায় আছে দেশের সবচেয়ে বড় মোবাইল আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান বিকাশ। দুই দিনের উৎসবে অতিথি শিল্পীরা শাহ আব্দুল করিমের গান পরিবেশন করবেন।
জীবন সংগ্রামের মাঝে বড় হওয়া বাউল শাহ আবদুল করিমের সংগীত সাধনার শুরু ছেলেবেলা থেকেই। বাউল সম্রাটের প্রেরণা তার স্ত্রী আফতাবুন্নেসা; যাকে তিনি আদর করে ‘সরলা’ নামে ডাকতেন।
ভাটি অঞ্চলের মানুষের জীবনের সুখ প্রেম-ভালোবাসার পাশাপাশি তার গান কথা বলে সকল অন্যায়, অবিচার, কুসংস্কার আর সাম্প্রদায়িকতার বিরূদ্ধে। তিনি তার গানের অনুপ্রেরণা পেয়েছেন প্রখ্যাত বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহ, পুঞ্জু শাহ এবং দুদ্দু শাহ এর দর্শন থেকে।
আব্দুল করিম এ পর্যন্ত প্রায় দেড় সহস্রাধিক গান লিখেছেন এবং সুরারোপ করেছেন। বাংলা একাডেমির উদ্যোগে তার ১০টি গান ইংরেজিতে অনূদিত হয়েছে। কিশোর বয়স থেকে গান লিখলেও কয়েক বছর আগেও এসব গান শুধুমাত্র ভাটি অঞ্চলের মানুষের কাছেই জনপ্রিয় ছিল। তার মৃত্যুর কয়েক বছর আগে বেশ কয়েকজন শিল্পী বাউল শাহ আব্দুল করিমের গানগুলো নতুন করে গেয়ে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করলে তিনি দেশব্যাপী পরিচিতি লাভ করেন।
বাউল সাধক শাহ আবদুল জীবনের একটি বড় অংশ লড়াই করেছেন দরিদ্রতার সাথে। তিনি জীবদ্দশায় সমাজের নিপিড়িত অসহায় ও মেহনতী মানুষের জন্য গান রচনা করে গেছেন। তাই ভক্তরা শাহ্ আব্দুল করিমের গানেই খোঁজেন তাকে। প্রতিদিন তার বাড়ির আঙ্গিনায় জমে গানের আসর। করিম-ভক্তরা গানে গানে মুখর রাখেন তার জন্মভিটা।