‘আমরা ধীরে ধীরে গান থেকে দূরে সরে যাচ্ছি। যে যেভাবে পারছে গান করছে, যেমন খুশি গাচ্ছে। অনেকে গায়ের জোরে শিল্পী হচ্ছে। আমরা অভিভাবকহীন হয়ে পড়ায় এমনটা হচ্ছে। গান করা ও জানার জন্য আমাদের অনেকগুলো ইনস্টিটিউশন দরকার। সেখানে আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল, আলম খান, আলাউদ্দিন আলী স্টাডির সাবজেক্ট হতে পারে।’
ভেজা চোখে অনেকটা চাপা কষ্ট নিয়ে কথাগুলো বললেন জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী কনকচাঁপা। দেশ বরেণ্য সংগীত পরিচালক আলম খানের মৃত্যুতে ভীষণ ভেঙে পড়েছেন এই শিল্পী। শুক্রবার বিকেলে চ্যানেল আই প্রাঙ্গনে আলম খানের প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়, সেখানেই প্রিয় সুরকারকে শেষবারের মতো দেখতে উপস্থিত হয়েছিলেন কনকচাঁপাও।
আলম খানের মরদেহবাহী অ্যাম্বুলেন্সের পাশে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে কাঁদছিলেন কনকচাঁপা। পরে চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, যেসব গুণীরা চলে গেছেন তাদের নিয়ে পড়াশোনা করলে তাদের উৎসর্গিত জীবন ও রেখে যাওয়া প্রতিভার যথাযথ মূল্যায়ন হবে।
আলম খান চলে যাওয়ায় নিজের অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে কনকচাঁপা আরও বলেন, আমরা পাখির মতো বুলি আওড়াই, উমুক চলে যাওয়ায় অপূরণীয় ক্ষতি হলো। কিন্তু এখনকার প্রজন্ম কী সেটা সত্যিই অনুভব করে কতটা ক্ষতি?
একজন আলম খানকে আগে ভালভাবে জানতে হবে বলে মনে করেন প্লেব্যাকের তুমুল জনপ্রিয় গায়িকা কনকচাঁপা। তিনি বলেন, আলম খানের কী কী আছে জানতে হলে তাকে নিয়ে পড়ালেখা করতে হবে। তিনি তার সৃষ্টির মাধ্যমে বেঁচে থাকবেন।
এই সৃষ্টিগুলো কীভাবে এলো, কতটা জনপ্রিয়তা পেল, কাজগুলো কতটা শ্রুতিমধুর ছিল সেটা জানার জন্য যথেষ্ট স্টাডির প্রয়োজন। তাই এখনকার যুবসমাজকে আলম খানকে সবার আগে জানতে বললেন কনকচাঁপা।
তিনি বলেন, আমাদের কতটা ক্ষতি হচ্ছে সেটা আমরা টের পাচ্ছি? আমাদের কোনো মুরুব্বী কি আছে? কেউ নেই। এজন্য যার খুশি সে গান করছে। গান না জানলেও যন্ত্রের প্রতি নির্ভর হয়ে অনেকেই গান করছে। কনকচাঁপা বলেন, সংগীতের সবার এক করার জায়গা নেই। কিন্তু নাটক, চলচ্চিত্রে আছে। সবাইকে যদি এক করার মতো জায়গা থাকতো তাহলে মাঝেমধ্যে দেখা হতো।
একাধিকবার উদ্যোগ নিয়েও আমরা সংগীতের মানুষরা কোনো একটি ক্লাব তৈরি করতে পারিনি বলেও জানালেন কনকচাঁপা।
আলম খানকে বাবার মতো মনে করতেন কনকচাঁপা। বললেন, শেষবার দেখা হলে উনি আমাকে জড়িয়ে ধরে বলেছিলেন ক্যানসার থেকে সেরা উঠছেন। কিন্তু আমি বুঝতে পারলাম তার শরীরে মাংস কমে গেছে। পরে দুএকবার শুধু ফোনে কথা হয়।