প্রতিটি গোলের পর ফুটবলাররা নৃত্যের তালে তালে নিজেদের শরীর দুলিয়েছেন। এমন উদযাপন সবার নজর কাড়তে বাধ্য। কোয়ার্টার ফাইনালের টিকিট কাটা নেইমার-ভিনিসিয়াস-রিচার্লিসনরা নিজেদের খেলা কতটা উপভোগ করছেন, সেটিও জানান দিয়েছে তাদের নৃত্য পরিবেশন।
মাঠের ফুটবলে ব্রাজিলের দাপটের চেয়েও মন ভরিয়েছে ছন্দময় ও নান্দনিক পারফরম্যান্স। ঐতিহ্যগতভাবেই সেলেসাওদের কাছে গোটা দুনিয়ার শুধু ম্যাচ নয়, সুন্দর ফুটবল খেলে হৃদয় জয় করার দাবিও থাকে। পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা যেন সাউথ কোরিয়ার বিপক্ষে দাবিটা পুরোপুরি মিটিয়ে দিয়েছে।
নান্দনিক ফুটবল খেলার পাশাপাশি উদযাপনেও সবার চেয়ে আলাদা নজর কাড়তে বাধ্য ব্রাজিল। গোল আর নাচের ছন্দে শেষ আটের টিকিট নিশ্চিত করে ফেলেছে সাম্বার দেশ।
৩৬ মিনিটেই চারবার জালে বল জড়িয়ে দেন সেলেসাওরা। তবে তৃতীয় গোলটি নিয়ে আলাদাভাবে না বললেই নয়। রিচার্লিসনের চোখজুড়ানো মন মাতানো গোল যেন বিশ্বকাপে ব্রাজিলের দলীয় বোঝাপড়া ও শক্তির দারুণ এক দৃষ্টান্তই হয়ে রইল।

বক্সের সামনে বল নিয়ন্ত্রণে নিয়ে তিনবার একই স্থানে দাঁড়িয়ে রিচার্লিসন হেড নেন। এরপর মার্কুইনহোসকে পাস দেন। তিনি থিয়াগো সিলভার কাছে বল বাড়ান। সিলভার টোকায় ডি বক্সের ভেতরে থাকা রিচার্লিসনই বল আদায় করেন। সামনে গোলরক্ষক ছাড়া আর কেউ ছিলেন না। পায়ের হালকা স্পর্শে বলটি তিনি জালে জড়িয়ে দিলেন।
মাঠে সতীর্থদের সঙ্গে উদযাপনের পর তিনি ডাগ আউটের দিকে ছুটে যান। সেখানে বেঞ্চে থাকা ফুটবলার ও কোচিং স্টাফদের সঙ্গে নেচে ওঠেন টিটে।
ফুটবল কোচদের এভাবে আনন্দে মাতোয়ারা হতে তেমন একটা দেখা যায় না। গুরুগম্ভীর এক চেহারাই যেন মানসপটে ভেসে ওঠে। ৬১ বছর বয়সী টিটে ম্যাচের পর বললেন, ‘ফুটবলাররা খুব অল্পবয়সী এবং আমি সবসময় তাদের ভাষার সাথে কিছুটা খাপ খাইয়ে নেয়ার চেষ্টা করিতাদের একটি ভাষা আছে, সেটি হল নৃত্য।’
টিটে এটিও জানিয়েছেন যে, ম্যাচের আগেই শিষ্যরা তাকে কথা দিয়েছিলেন যে দারুণ ফুটবল উপহার দিয়ে তারা নাকি কোচকে নাচিয়েই ছাড়বেন। হয়েছেও তাই, ব্রাজিলিয়ান কোচ নৃত্যের তালে করেন উদযাপন।
তবে এমন উদযাপনের পরও খেলোয়াড়দের পা মাটিতে থাকেন সেই ব্যাপারে কোচ বেশ সতর্ক। কাউকে অপমান উদ্দেশ্যে যে এমনটি করা হয়নি সেটি তিনি স্মরণ করিয়ে দেন।
‘এমন কিছু লোক আছে যারা বলবে এটা খারাপ ছিল, অসম্মানজনক ছিল। মোটেও সেই উদ্দেশ্য ছিল না। এটি আনন্দের বহিঃপ্রকাশ ছিল। আমি সাউথ কোরিয়ার কোচ পাওলো বেন্তোকে সম্মান করি।’