লিওনেল মেসির তখন তর সইছিল না! আরাধ্য শিরোপাটা সামনে, সব আয়োজনও ফুরিয়েছে, কিন্তু শিরোপা আকাশে উঁচিয়ে ধরার ফুরসত যেন আসতে দেরি। অপেক্ষার শেষে মঞ্চে উঠলেন ঠিকই, তাকে কিছু একটা বলে থামালেন ফিফা প্রেসিডেন্ট জিয়ান্নি ইনফান্তিনো। এরপর চ্যাম্পিয়ন অধিনায়ককে পরানো হল কাতারি ঐতিহ্যবাহী পোশাক ‘বিশত’।
আর্জেন্টিনা অধিনায়কের চোখে-মুখে তখন চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্নিগ্ধ হাসি, কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি গায়ে জড়িয়ে দিলেন কালো কাপড় ও সোনালী পাড়ের ‘বিশত’। অত্যন্ত সম্মানের পোশাক পরে মেসিও হাসলেন চওড়া হাসি। কিন্তু ট্রফি তুলে ধরার আগে কেন আর্জেন্টিনা জার্সি কাতারি পোশাকে ঢাকতে হল, তুঙ্গে এখন সেই আলোচনা।
পক্ষে-বিপক্ষে নানা জনের নানান মত। অনেকের মতে, বড় সম্মানে ভূষিত হয়েছেন মেসি— এটি দোষের কিছু না। কিন্তু সাবেক ইংলিশ ফুটবলার ও উপস্থাপক গ্যারি লিনেকার জার্সি ঢাকতে হওয়ার বিষয়টিকে দেখছেন লজ্জার হিসেবে।
‘এটা খুব লজ্জার। তারা মেসির আর্জেন্টিনা জার্সি ঢেকে দিয়েছে।’ একই সুর তুলেছেন আলবিসেলেস্তেদের সাবেক তারকা পাবলো জাবালেতাও, ‘জার্সি পরানো কেন, কেন? এটার কোনো কারণ নেই।’
কাতারে ‘বিশত’ সাধারণত তাদেরই পরানো হয়, যারা খুব খুব স্পেশাল কিছু করে ফেলেছেন। স্নায়ুচাপী ম্যাচে ফ্রান্সকে টাইব্রেকারে হারানোর মধ্য দিয়ে ৩৬ বছরের শিরোপাখরা ঘুচিয়েছেন মেসি। তার স্পেশাল মুহূর্তকে আরও দুর্দান্ত করতেই পোশাকটি পরায় কাতার। এটি সাধারণত উচ্চবিত্ত পরিবার, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, ধর্মগুরুদের পরানো হয়। হাতে তৈরি পোশাকটি কাতারের অন্যতম সম্মানের প্রতীক হিসেবেও স্বীকৃত।
লুসেইল স্টেডিয়ামে শিরোপার মঞ্চে উত্তেজনার পারদ চড়ে ছিল তুঙ্গে। খেলার ৮০ মিনিট পর্যন্ত ২-০ গোলে পিছিয়ে থাকা ফ্রান্স সমতায় ফেরে ৮১ মিনিটে। এমবাপের জোড়া গোল আর্জেন্টিনাকে থমকে দিলে খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। মেসি ফের লিড আনলে শেষ সময়ে পেনাল্টি থেকে আবারও সমতায় আনে ফ্রান্স। মেসির জোড়া গোল ও এমবাপের হ্যাটট্রিকে শেষ সমাধান আসে টাইব্রেকারে। ৪-২ শট ব্যবধানে এমিলিয়ানো মার্টিনেজ নৈপুণ্যে চ্যাম্পিয়ন হয় লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনা।