নারী ও শিশু স্বাস্থ্যঝুঁকির বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দিয়ে ধূমপান এবং তামাক ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ আইনটির প্রস্তাবিত সংশোধনী দ্রুত সংসদে উত্থাপন এবং চলতি সংসদ অধিবেশনেই তা পাসের দাবি জানিয়েছেন সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য নার্গিস রহমান।
সোমবার (৯ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর খিলগাঁও বাসাবো কমিউনিটি সেন্টারে নারী মৈত্রী আয়োজিত স্থানীয় সরকার প্রতিনিধিদের সঙ্গে ‘প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জনে বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রস্তাবিত সংশোধনী দ্রুত পাশের গুরুত্ব’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বিশেষ অথিতি ছিলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের নারী কাউন্সিলর আয়শা মোকাররম (ওয়ার্ড নং ২২) এবং ফারজানা ইয়াছমিন বিপ্লবী (ওয়ার্ড নং ২, ৩, ৪)। বিশেষ আলোচক ছিলেন ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডস (সিটিএফকে) -এর প্রোগ্রামস ম্যানেজার মো. আব্দুস সালাম মিয়া।
নার্গিস রহমান বলেন, তামাক স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর। বাংলাদেশে প্রতিবছর প্রায় ৩ কোটি ৮৪ লাখ মানুষ পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হচ্ছেন। যেখানে নারী ও শিশুরা সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। পরোক্ষ ধূমপানের কারণে নারীর প্রজনন ক্ষমতা হ্রাস, গর্ভপাত এবং সন্তান জন্মদানে মা ও শিশু উভয়ই মৃত্যুর মতো অনাকাঙ্খিত ঘটনা বাড়ছে। তাই নারী ও শিশু স্বাস্থ্য সুরক্ষায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রস্তাবিত সংশোধনী পাসের জোরালো দাবি জানান তিনি।
তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রস্তাবিত সংশোধনী অনুমোদনে মো. আব্দুস সালাম মিয়া বলেন, প্রস্তাবিত সংশোধনী তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের মূল উদ্দেশ্য হলো অধূমপায়ী ও নতুন প্রজন্মকে তামাকের ছোবল থেকে রক্ষা করা। বিশেষ করে নারী ও শিশুদের পরোক্ষ ধূমপানের ক্ষতি থেকে রক্ষা করা। তরুণ প্রজন্ম যাতে নতুন করে ধূমপানে আসক্ত হয়ে না পরে, সেজন্য বিক্রয় কেন্দ্রে তামাক দ্রব্যের প্রদর্শনী ও খুচরা শলাকা বিক্রি বন্ধ করতে হবে। এছাড়া তামাকজাত পণ্য ব্যবহারের কারণে বাংলাদেশে প্রতিদিন প্রাণ হারাচ্ছে ৪৪২ জন মানুষ। তাই এই মৃত্যুর মিছিল ঠেকাতে এবং পরোক্ষ ধূমপানের হাত থেকে জনসাধারণকে রক্ষা করতে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রস্তাবিত সংশোধনী দ্রুত পাস করা জরুরি।
কাউন্সিলর ফারজানা ইয়াছমিন বিপ্লবী বলেন, তামাক একটি মারাত্মক ক্ষতিকর দ্রব্য। এ দ্রব্য অবিলম্বে বর্জন করা উচিত। এ জন্য আমাদেরকে একতাবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। তবে তার আগে প্রয়োজন তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রস্তাবিত সংশোধনী দ্রুত পাশ করা। তাহলে আমরা জনগণকে ব্যাপকভাবে সচেতন করতে পারব। আইন থাকলে এর বিরুদ্ধে জোড়ালোভাবে পদক্ষেপ নেয়া সম্ভব হবে। এ বিষয়ে আমি আমাদের ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এর সম্মানিত মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসের সাথে মতবিনিময় করেছি। তিনি আমাদের দাবির সাথে সহমত জ্ঞাপন করেছেন এবং তামাক নিয়ন্ত্রণে সকল ধরনের কার্যক্রমে সবাইকে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণের জন্য আহ্বান জানিয়েছেন ।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন নারী মৈত্রী’র নির্বাহী পরিচালক শাহীন আকতার ডলি। উপস্থিত ছিলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের স্থানীয় সরকার প্রতিনিধি মাকছুদা শমশের (ওয়ার্ড নং ৫,৬,৭), মিনু রহমান (ওয়ার্ড নং ৮,৯,১০), ফারহানা ইয়াছমীন কুয়াশা (ওয়ার্ড নং (৬১,৬১,৬৩), সাথী আক্তার (ওয়ার্ড নং ৪৫, ৪৬, ৪৭) খালেদা আলম (ওয়ার্ড নং ৫২,৫৩,৫৪), শেফালী আক্তার (ওয়ার্ড নং ৫৫, ৫৬, ৫৭), নার্গিস মাহতাব, (ওয়ার্ড নং ১৬, ১৭, ২১ ), সাহিদা বেগম (ওয়ার্ড নং ৫৮, ৫৯, ৬০), নিলুফা ইয়াছমিন লাকী (ওয়ার্ড নং ৬৪,৬৫,৬৬) সহ বিভিন্ন তামাকবিরোধী সংগঠনের প্রতিনিধি এবং নারী মৈত্রীর নারী দলের নেত্রীবৃন্দ।