গেল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ‘প্রিয় নানাভাই ‘ শামসুল হক গাজীকে হারিয়েছেন চিত্রনায়িকা পরীমনি। জীবিতকালে যিনি ছিলেন পরীর একমাত্র ভরসার নাম। নিজের পরম আশ্রয়স্থল ছিলেন নানাভাই। তাকে হারিয়ে স্বভাবতই ভেঙে পড়েছেন এই নায়িকা।
নানার মরদেহ নিয়ে শুক্রবার ভোরেই ঢাকা থেকে পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়ায় যান পরী। সেখানেই হয় দাফন। চার দিনের মিলাদও দিয়েছেন নিজে উপস্থিত থেকে। শেষ বিদায় জানিয়ে আজ ঢাকায় ফিরছেন পরী।
নিজের পরিচিত গণ্ডিতে ফেরার সময়েও তাই শোকার্ত পরীর মন পড়ে আছে নানাভাইয়ের জন্য, যেখানে প্রিয় মানুষটিকে রেখে এসেছেন। কবরে শায়িত নানাভাইকে বিদায় জানিয়ে আসার মুহূর্তটি নিজের জন্য যতোটা না করুণ, তারচেয়ে ঢের বেশী মনকষ্টে পরী আছেন ছেলে রাজ্যর কথা ভেবে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর নানাভাইয়ের কবরের বেশকিছু ছবি নিজের ফেসবুকে শেয়ার করেছেন পরীমনি। ছবিতে দেখা যায়, নানার কবরের উপর গাঁদাফুল গাছ রোপন করছেন পরী। সঙ্গে আছে ছোট্ট রাজ্য!
ক্যাপশনে পরী লিখেন,“আমার পদ্মফুল কেবল নানুকে চিনতে শুরু করছিলো। বড়আব্বু বলে ডাকতে শিখেছিলো। এখন যদি কেউ ওকে বলে ‘তোমার বড় আব্বু কই? ওমনি এই যে বলে সাথে সাথে আঙ্গুল তুলে নানুর কবরটা দেখিয়ে দেয়! কবরের ওপরে চুমু খায়, হাত বুলায়, ফুঁ দেয়। আসার সময় হাত নেড়ে নেড়ে কত বার যে বললো ‘আব্বুটা বাই আব্বুটা বাই’!”
একই পোস্টে পরী আরো বলেন,“এর আগে যত বার নানু বাড়ি গেছি, নির্দিষ্ট তারিখেই ঢাকায় ব্যাক করেছি। বাড়ির সবাই দুই একদিন বেশি থেকে যেতে বলতো কত করে! থাকা হয়নি। আর এখন মনে হচ্ছে নানুর কবর ধরে সারাদিন সারারাত যদি বসে থাকতে পারতাম! কিন্তু পারি না!”
ছোটবেলায় মা-বাবাকে হারিয়ে পরীমনি বেড়ে ওঠেন ভাণ্ডারিয়ায় তার নানা বাড়িতে। সেখান থেকেই মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেছেন পরীমনি। পরীমনির ভাষ্য অনুযায়ী, নানা শামসুল গাজীই ছিলেন তার একমাত্র অভিভাবক। পরীমনি ঢাকায় স্থায়ী হলেও তার নানা শামসুল হক ভাণ্ডারিয়াতেই থাকতেন। তবে পরীমনির সুসময়-দুঃসময়ে বরাবর নাতনির পাশে দেখা গেছে তাকে।
শামসুল হক গাজীর বাড়ি পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়া উপজেলার সিংহখালী গ্রামে। পেশায় তিনি স্কুল শিক্ষক ছিলেন।
ঢাকা/এমটিএল