“আমার একটাই দুঃখ, হলে গিয়ে সিনেমা দেখার সৌভাগ্য হয় না। তবে আমি যখন প্লেনে চড়ি, তখন কিন্তু বাংলাদেশের সিনেমা দেখি। ক’দিন আগে দক্ষিণ আফ্রিকা যাওয়ার সময় প্লেনে বসে পর পর দুটি সিনেমা দেখেছি।”
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০২২ প্রদান অনুষ্ঠানে কথাগুলো বলছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ২৭টি বিভাগে ৩২জন শিল্পী ও কলাকুশলীর হাতে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ও সম্মাননা তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী।
পরে চলচ্চিত্র শিল্পের উন্নয়নে বর্তমান সরকারের ভূমিকা নিয়ে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। কথা বলার এক পর্যায়ে নিজের সিনেমা দেখার অভিজ্ঞতাও উপস্থিত অতিথি ও দর্শকদের সাথে শেয়ার করেন।
সময় পেলে বাংলাদেশের সিনেমা দেখেন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী এসময় বলেন,“মাঝেমাঝে আমাকে অনেকে পেনড্রাইভ পাঠায়, তখন সময় মতো মাঝেমাঝে একটু দেখি। তবে একটানা বসে দেখার তো সময় হয় না। একটা রাষ্ট্র চালানো, ১৭ কোটি মানুষের বোঝা তো আমার কাঁধে। তাদের জন্য কাজ করে ফাইল দেখতে দেখতে রিপোর্ট পড়তে পড়তেই সময় চলে যায়।” এসময় মজা করে তিনি আরো বলেন, “এতো পড়া যে পড়তে হবে এই বৃদ্ধ বয়সে এসে, এটা কখনো ভাবি নাই। মাঝেমাঝে দুঃখ হয়, এতো পড়া যদি ছোটবেলায় পড়তাম তাহলে প্রতিবার তো ক্লাসে ফার্স্ট হতে পারতাম! আল্লাহ বোধহয় তখন পড়তে দেয়নি, বলছে তুই বুড়ো বয়সে পড়বি।”
সিনেমা দেখার বিষয়ে সব সময় ছোট বোন রেহানার সহায়তা নেন জানিয়ে শেখ হাসিনা আরো বলেন, “সিনেমা দেখার জন্য রেহানা সহায়তা করে। ও বসে বসে হুকুম দেয়, ওই সিনেমা দেখো, এটা তোমার দেখা উচিত। ঢাকায় থাকলে তার কথা মতো সেটা দেখি।”
কথা প্রসঙ্গে শ্যাম বেনেগাল নির্মিত ‘মুজিব: একটি জাতির রূপকার’ নিয়েও কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। বঙ্গবন্ধুর শতবর্ষ উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত ‘মুজিব’ এর জন্য ভারত সরকারকে এসময় ধন্যবাদ জানান তিনি।
সেই সঙ্গে বাংলাদেশি কলাকুশলীদের প্রতি ধন্যবাদ জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, এই ছবিটি বাংলাদেশ ও ভারতের মানুষ দেখে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত সঠিক ইতিহাস জানতে পারছেন। সিনেমাটির পরিচালক থেকে শুরু করে সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানাই। বিশেষ করে আমাদের শিল্পীরা অনবদ্য ভূমিকা রেখেছেন। প্রত্যেকেই দারুণ অভিনয় করেছেন। সিনেমাটির সাথে আমি নিবিড়ভাবে জড়িত ছিলাম, দেখেছি সবাই অন্তর দিয়ে কাজটি করেছে। সবাইকে আমি ধন্যবাদ জানাই। বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের ইতিহাসে ‘মুজিব’ সিনেমাটি শ্রেষ্ঠ অর্জন হিসেবে থাকবে বলে আমি মনে করি।
শিল্পীদের কাজের জন্য সুন্দর পরিবেশ তৈরী করছেন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে বলেন,“এফডিসিতে ভবন নির্মাণ ও আধুনিকায়নে প্রচুর টাকা খরচ হয়েছে। তবে আমি সবকিছু নিয়ে টাকার হিসেব করি না। আমাদের শিল্পীরা যেন কাজের ঠিকঠাক পরিবেশ পায়, এটাই আমার লক্ষ্য।” এসময় গাজীপুরের কবিরপুরে বঙ্গবন্ধু ফিল্ম সিটি নিয়েও আশাবাদ ব্যক্ত করেন শেখ হাসিনা।