‘ঢাকা অ্যাটাক’ বানিয়ে নজর কাড়েন দীপংকর দীপন। রিয়াজ, সিয়াম, রোশান, নুসরাত ফারিয়া, মনোজ অভিনীত এই নির্মাতার দ্বিতীয় ছবি ‘অপারেশন সুন্দরবন’ মুক্তি পাবে ২৩ সেপ্টেম্বর। মুক্তির আগে টিজার, ট্রেলার ও গান প্রকাশের পর দর্শকের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে র্যাব ওয়েলফেয়ার কো-অপারেটিভ সোসাইটি লি. প্রযোজিত তারকাবহুল এই ছবি। ‘অপারেশন সুন্দরবন’-এর মুক্তি প্রসঙ্গে দীপংকর দীপন কথা বললেন চ্যানেল আই অনলাইনের সাথে।
মুক্তির আগে এই সময়টা কেমন কাটছে?
খুব ব্যস্ততায় আছি। ‘অপারেশন সুন্দরবন’ সত্যিকারের একটি বড় আয়োজনের ছবি। এতে অনেক উপাদান আছে। প্রচুর ভিএফএক্স ও বিভিন্ন সাউন্ড ইফেক্টস আছে। আলাদা ভিজ্যুয়াল ট্রিটমেন্ট আছে। তার উপর ডলবি অ্যাটমসে সাউন্ড হচ্ছে। সব মিলিয়ে মুক্তির আগে শেষ সময়ের কাজটা যে কতটা টেকনিক্যালি জটিল এটা যারা করেনি তারা কেউ বুঝবে না। আশা করি দর্শকদের সিনেমা হলে পরিপূর্ণ সিনেমার স্বাদ দিতে পারব।
পরপর ‘পরাণ’, ‘হাওয়া’ ব্যাপক সাফল্য পেল। এই সময়ে ‘অপারেশন সুন্দরবন’ মুক্তিতে চাপ অনুভব করছেন?
সত্যি পরাণ, হাওয়া আমাদের সিনেমার জন্য অনেক বড় কিছু বয়ে এনেছে। সেই ধারাবাহিকতায় একটু চাপ থাকার কথা। কিন্তু আমি চাপ মুক্ত আছি। আমি এমনিতেই সবসময় চাপ মুক্ত মানুষ হবার চর্চা করি। আমি ধর্মগ্রন্থে বিশ্বাস করি। গীতা’র মূল কথা – তুমি পুরোপুরি সততা দিয়ে তোমার ১০০ ভাগ দিয়ে সেটা করতে পারলেই তুমি সফল। ফলাফলের উপর আসল সফলতা বা ব্যর্থতা নির্ভর করে না। আমি সবসময় আমার ১০০ ভাগ দেই। পরেরটা নিয়ে ভাবি না। বাকিটা কনসিকোয়েন্স।
অনেকেই মনে করছেন, ‘অপারেশন সুন্দরবন’ র্যাবের সাফল্যগাঁথা ডকুমেন্টারি ধরনের সিনেমা। সঠিক নাকি?
একেবারে নয়, অপারেশন সুন্দরবন পুরোপুরি মূল ধারার সিনেমা। এখানে অ্যাকশন, সাসপেন্স, আবেগ, প্রেম-গান সব আছে। তবে সেটা অথেনটিক ভাবে এসেছে, সিনেমাটিক স্টাইলাইজেশন দিয়ে। গণমানুষকে কানেক্ট করার সিনেমা অপারেশন সুন্দরবন। সেই সাথে ক্লাস পিপল যেন পছন্দ করে সেই চেষ্টা আছে। ঢাকা অ্যাটাকে যেটা ছিল। সুন্দরবন দস্যু মুক্ত হবার গল্প নিয়ে নয়, ‘অপারেশন সুন্দরবন’ তৈরি হয়েছে সুন্দরবন দস্যুমুক্ত হওয়াকে উদযাপন করতে। এটি কোন ডকুমেন্টারি নয়, এটি সম্পূর্ণ বাণিজ্যিক সিনেমা; যেখান ড্রামা-সাসপেন্স- নারী পুরুষের সম্পর্ক প্রেম ভালবাসা সবকিছু আছে।
সুন্দরবন দস্যুমুক্ত হবার গল্পে প্রেম ভালবাসা কী করে এসেছে?
ওই যে বললাম এটা ডকুমেন্টারি নয়, মূল ধারার বাণ্যিজ্যিক সিনেমা। আমরা তাই চেয়েছি পুরো প্রজেক্টটায়। এই ছবিটি সুন্দরবন জলদস্যু মুক্ত হওয়া উপলক্ষে বানানো সিনেমা। আমরা চেয়েছি ছবিটি জনপ্রিয় ধারার সিনেমা হিসাবে আলোচিত হোক। মানুষের ভালবাসা জয় করুক। তাহলেই সুন্দরবন মুক্ত করার বড় পথ পরিক্রমাটা সবাই জানবে। ঘটনাটির সাথে ইমোশনাল কানেকশন তৈরি হবে। সেই সাথে সুন্দরবন নিয়ে মানুষের আগ্রহ বাড়বে। সেটা করতে গল্পে যৌক্তিক কাল্পনিক উপাদান যুক্ত হয়েছে। চরিত্রদের ব্যক্তি জীবনের আবেগে জোর দেয়া হয়েছে। আর সেটা করা হয়েছে গল্পে গাঁথুনি নষ্ট না করে। চ্যালেঞ্জটা ছিল ওখানেই।
‘অপারেশন সুন্দরবন’ যে রসহীন গুরু গম্ভীর সিনেমা নয়, সেটা তো সুন্দর সুন্দর গানগুলো শুনে বুঝতে পারছি, তবে সুন্দরবনের সৌন্দর্য কতটা পাবে দর্শক?
সেটা ঠিক বলতে পারছি না। এখানে আমি একটু অন্ধ। বুঝিয়ে বলি, আমি নিজেও সুন্দরবেনর প্রেমে হাবুডুবু খাওয়া মানুষ। ভালোবাসলে তো মানুষ কিছুটা অন্ধ হয়ে যায়। সুন্দরবনে গেলে আমার বাঘের প্রতিও মায়া হয়, হরিণের প্রতিও মায়া হয়- আবার হরিণ যে কেওড়া গাছের নিচের পাতাগুলো খায় সেগুলোর জন্যও মায়া হয়। সুন্দরবনে যত যাই তত নতুন নতুন রুপ দেখি। আমি যা দেখেছি তার সব তুলে আনা সম্ভব তা নয়। কিন্তু যা তুলে আনতে পেরেছি সেটা অনেকে দেখেনি। এটা তো নেটজিও ডকু নয়, তবে গল্পের হাত ধরে সুন্দরবনের ভরপুর সৌন্দর্য অনেক আছে। অন্যদিকে দেখানোর আরও অনেক কিছু আছে। সেগুলোর জন্য একটা ডকুমেন্টারি করব, যদি অপারেশন সুন্দরবন সফল হয়।