দিনভর মূলফটক আটকে রেখে সেশনজট নিরসন ও স্থায়ী শিক্ষক নিয়োগের নিয়ে আন্দোলন করলো চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়াবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা। পরে দাবি মেনে নিয়ে সমস্যা নিরসনের আশ্বাস দিয়েছেন উপ-উপাচার্য ড. বেনু কুমার দে।
বুধবার ১৭ জানুয়ারি বেলা সাড়ে ১১টায় শিক্ষার্থীরা জিরোপয়েন্ট’র মূলফটকে তালা ঝুলিয়ে দেয়। চলতে থাকে তাদের অবস্থান কর্মসূচি। এসময় সাদা কাফন পরে রাস্তায় শুয়ে প্রতিবাদ করতে দেখা যায় একাধিক শিক্ষার্থীকে।
শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়াবিজ্ঞান বিভাগের ১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী অঞ্জন সাহা তন্ময় বলেন, ‘আমি এখনও সেকেন্ড ইয়ারে। আর ক’বছর পর আমার চাকরির বয়স শেষ হয়ে যাবে। তখন এই সার্টিফিকেট দিয়ে আমরা কী করব? এখন পর্যন্ত ১৫-১৬ মাস্টার্সের রেজাল্ট পায়নি।’
তিনি আরও বলেন, আমাদের বিভাগে কোনো স্থায়ী নিয়োগের শিক্ষক নেই। গেস্ট টিচাররা প্রতি সেমিস্টারে আসে। আমাদের দাবি দুটো, সেশনজট নিরসন ও স্থায়ী মেয়াদে শিক্ষক নিয়োগ।
একই বিভাগের ২০-২১ বর্ষের শিক্ষার্থী মো. বায়েজিদ হোসেন বলেন, আমি এখনও ফার্স্ট ইয়ার শেষ করতে পারছি না। অথচ ভর্তি হয়েছি প্রায় দু’বছর। আমাদের নিয়মিত ক্লাস হয় না। পর্যাপ্ত শিক্ষক না থাকায় আমি এখনও সেকেন্ড সেমিস্টার দিয়ে ফলাফল পাইনি। এভাবে আর কতদিন চলবে?
সহকারী প্রক্টর স্বরূপ সাহা জয় বলেন, দেড়টার ট্রেনের চালককেও শিক্ষার্থীরা নাশতা করানোর জন্য নিয়ে চলে যায়। উনাকে খুঁজে এনে ট্রেন ছাড়া হয়। আড়াইটার ট্রেনের চালককে কোথায় নাশতা করাতে নিয়েছে আমরা খুঁজে পাচ্ছি না।
পরে উপ-উপাচার্য ড. বেনু কুমার দে এসে জিরো পয়েন্টে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের দাবী পূরণের আশ্বাস দেন। পরিস্থিতি বেলা ৫ টা ১০ এ স্বাভাবিক হয়। মূল ফটক খুলে দেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়াবিজ্ঞান বিভাগ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা অনুষদের অন্তর্ভুক্ত। ২০১৫ সালে স্থাপিত এই বিভাগে এখন পর্যন্ত স্থায়ী কোনো শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়নি। শিক্ষা অনুষদের এই বিভাগে কোনো শিক্ষক না থাকায় বিভিন্ন বিভাগ থেকে অতিথি শিক্ষক নিয়েই বিভাগটি চলছে।
এর আগে গতবছর ২৮ ফেব্রুয়ারি ওই বিভাগের শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে স্থায়ী শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ, সেশনজট কমানো, ফল প্রকাশসহ ছয় দফা দাবিতে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করে।