চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

যেসব শর্তে দেশে চলবে হিন্দি ছবি

৮ বছর ধরে বাংলাদেশে হিন্দি ছবি মুক্তিতে নিষেধাজ্ঞা ছিল। তবে সেই নিষেধাজ্ঞা উঠে যাচ্ছে। চলচ্চিত্রের ১৯ সংগঠন মিলে গঠিত সম্মিলিত চলচ্চিত্র ঐক্য পরিষদ জানায়, তাদের কিছু শর্ত আছে। শর্তগুলো মানলে এদেশে হিন্দি ছবি মুক্তি পেলে আপত্তি থাকবে না। 

চলচ্চিত্র ঐক্য পরিষধের আহ্বায়ক নায়ক আলমগীরের স্বাক্ষরসহ সবগুলো সংগঠনের প্রধানদের স্বাক্ষতির একটি আবেদন গ্রহণ করেছে তথ্য মন্ত্রণালয়।

এই আবেদনের প্রেক্ষিতে মৌখিকভাবে সম্মতি এসেছে, বাংলাদেশে উপমহাদেশিয় ভাষার চলচ্চিত্র মুক্তিতে বাধা থাকছে না। শিগগির চিঠি পাশ হবে।

মন্ত্রণালয়ে চলচ্চিত্র ঐক্য পরিষদের দেওয়া শর্তগুলো চ্যানেল আই অনলাইনের হাতে এসেছে। তথ্য মন্ত্রণালয়ে আবেদনের প্রথম শর্তে বলা আছে, শুধুমাত্র বাংলাদেশের বৈধ চলচ্চিত্র প্রযোজক, পরিবেশকগণ বিদেশি (উপমহাদেশিয় ভাষায়) চলচ্চিত্র আমদানির সুযোগ পাবেন।

উপমহাদেশিয় ভাষায় চলচ্চিত্র পরীক্ষামূলকভাবে শুধুমাত্র ২ বছরের জন্য আমদানি করার সুযোগ থাকবে। প্রথম বছর ১০টি এবং পরের বছর ৮টি চলচ্চিত্র আমদানি করতে পারবে। সকল সিনেমা হল বছরের ৫২ সপ্তাহের মধ্যে ২০ সপ্তাহ আমদানিকৃত চলচ্চিত্র প্রদর্শন করতে পারবে।

আমদানিবকৃত বিদেশি (উপমহাদেশীয় ভাষার) চলচ্চিত্র মুক্তিকালীন সময়ে অবশ্যই ‘বাংলাদেশ ফিল্ম সেন্সর বোর্ড’র ছাড়পত্র প্রদর্শন করতে হবে। আমদানিকৃত চলচ্চিত্রের সঙ্গে বাজারে টিকে থাকতে দেশিয় চলচ্চিত্রের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ফিল্ম সেন্সর বোর্ডকে নমনীয় হতে হবে।

বাংলাদেশে দুই ঈদ ও দূর্গা পুজার সপ্তাহে উপমহাদেশিয় ভাষার কোনো চলচ্চিত্র প্রদর্শন করা যাবে না উপমহাদেশিয় ভাষার চলচ্চিত্র আমদানি করার পূর্বে অথবা অনুমতি পাওয়ার পর প্রতিটি চলচ্চিত্রের জন্য আমদানিকারক সংস্থা নির্দিষ্ট পরিমাণ অনুদান (আলোচনা ও শর্ত সাপেক্ষে) সম্মিলিত চলচ্চিত্র পরিষদের তহবিলে জমা দিতে হবে।

শর্তে আরও বলা হয়, অনুদান চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট সংগঠনের মাধ্যমে চিকিৎসা ও কল্যাণে ব্যয় হবে। চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতিকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রদান করা হবে।

শর্ত সাপেক্ষে উপমহাদেশিয় ভাষার চলচ্চিত্র আদমানির জন্য আবেদনকালীন সময়ে আবেদনপত্রের সাথে সম্মিলিত চলচ্চিত্র পরিষদের ছাড়পত্র সংযুক্ত থাকতে হবে।

“আমদানি করার পাশাপাশি দেশিয় চলচ্চিত্র নির্মাণ সংখ্যা বাড়াতে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানকে আগ্রহি করতে বন্ধ থাকা সিনেমা হল আধুনিকায়ন করে চালু করা ও নতুন প্রেক্ষাগৃহ নির্মাণের জন্য প্রধানমন্ত্রী যে এক হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করেছেন; সেই তহবিল থেকে পর্যায়ক্রমে ২০০ কোটি টাকা বিএফডিসির মাধ্যমে নির্মাণ ক্ষেত্রে বরাদ্দ করা যেতে পারে। এতে প্রযোজক পরিবেশকরা নতুন উদ্যোমে চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে পারে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বিএফডিসিও বাণিজ্যিকভাবে আয় ক্ষমতা বাড়াতে পারে।”

“দেশের চলচ্চিত্রের প্রতি দর্শকদের আরও আকৃষ্ট করার জন্য কাহিনি ও চিত্রনাট্যর প্রয়োজনে এবং প্রযোজকদের অর্থ বিনিয়োগ কমানোর লক্ষে বর্তমান “যৌথ প্রযোজনার নীতিমালা” রোহিত করে পূর্বেকার “যৌথ প্রযোজনার নীতিমালা” পুনরায় চালু করতে হবে।”

“বর্তমানে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শিল্পে প্রযোজক ও দর্শকদের চাহিদা মতো শিল্পী সংখ্যার ঘাটতি হয়ে যাওয়াতে ছবি নির্মাণ করারও বাণিজ্যিকভাবে হুমকির কারণ। সেই লক্ষ্যে চলচ্চিত্র ঐক্য পরিষদ মনে করে, তথ্য মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় ১৯৮৬ সালের মতো “নতুন মুখের সন্ধানে”র নামে একটি প্রকল্প চালু করে সারা বাংলাদেশ থেকে বাছাই করে শিল্পী সংগ্রহ করা যেতে পারে। যার ফলে শিল্পী সংকট থেকেও মুক্তি পাওয়া যেতে পারে।”

চলচ্চিত্র ঐক্য পরিষদ থেকে দেওয়া এই আবেদনের শেষে বলা হয়েছে, উপরের বিষয়গুলো অনুধাবন করে চলচ্চিত্র শিল্প রক্ষার স্বার্থে আমদানি ও মুক্তির অনুমতি দান এবং যৌক্তিক দাবিগুলো মানলে দেশের চলচ্চিত্র নতুনভাবে বেগবান হবে।

এসব আবেদনে আরও স্বাক্ষর করেছেন শাহ্‌ আলম কিরণ, মোহাম্মদ হোসেন, খোরশেদ আলম খসরু, কাজী হায়াত, শাহিন সুমন, আবদুল লতিফ বাচ্চু, আসাদুজ্জামান মজনু, ইলিয়াস কাঞ্চন, নিপুণ, আবু মুসা দেবু, কাজী শোয়েব রশিদ, আওয়াল হোসেন উজ্জ্বল, গোলাম কিবরিয়া লিপু, আবদুস সালাম, জাহিদুল ইসলাম, জামান আখতার, সনি আলম, আজিজ রেজা, ইমদাদুল হক খোকন, জি ডি পিন্টু, জাকির হোসেন, শামদুল ইসলাম, আলী বাবলু।