নরসিংদীতে হত্যা মামলার আসামিদের ফাঁসাতে নিজের শরীরে নিজেই ছুরি দিয়ে আঘাত করে চামড়ার ভেতরে লোহার টুকরো রেখে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বলে শুক্রবার এমন নাটক তৈরি করেছিলেন মামলার সাক্ষী নিজেই।
শনিবার দুপুরে নরসিংদী জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) মো. আল আমীন। এর আগে, গতকাল শুক্রবার দুপুরে নরসিংদী জেলা হাসপাতালে এসে সজিব মিয়া (৩০) নামে এক যুবক গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বলে দাবী করেন স্বজন, চিকিৎসক এবং সংবাদকর্মীদের কাছে।
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) মো. আল আমীন জানান, ২০১৫ সালে নরসিংদীর শিবপুরে পুটিয়া ইউপির সদস্য আরিফ পাঠান হত্যা মামলার অন্যতম সাক্ষী সজিব মিয়া গত ১১ অক্টোবর আদালতে এসে মামলার সাক্ষ্য দেন। সাক্ষ্য দেয়ার পরদিন, ওই হত্যা মামলার ৪ আসামীর নাম উল্লেখ করে জীবন নাশের হুমকিতে আছেন দাবী করে মাধবদী থানায় একটি জিডি করেন। এরপর, গতকাল ১৪ অক্টোবর দুপুরে নরসিংদীর সদর উপজেলার পাঁচদোনা এলাকায় নির্জন একটি পুকুরপাড়ে গিয়ে মামুন নামে তার বন্ধুর সহায়তায় ছোট ছুরি দিয়ে নিজের বুকের ডানপাশে নিজেই ছিদ্র করে তার ভেতরে লোহার ছোট টুকরা ঢুকিয়ে দেয় সজিব। ঘটনার পর সজিব তার বন্ধু মামুনকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলে। পরে হাসপাতালে এসে স্বজন , ডাক্তার এবং সাংবাদিকদের সামনে সজিব দাবী করে ইউপি সদস্য হত্যা মামলার সাক্ষ্য দেয়ায় ওই মামলার আসামিরা তাকে গুলি করে। এই ঘটনা শোনার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর কোনো প্রকার অস্ত্রোপাচার ছাড়াই আহত সজিবের বুকের চামড়ার নিচ থেকে লোহার টুকরো বের করে তাকে ছাড়পত্র দেয় চিকিৎসক।
পরবর্তীতে পুলিশ এই ঘটনা নিয়ে তদন্ত শুরু করলে পুলিশের কাছে সাক্ষী সজিব মিয়া প্রতিপক্ষকে ফাঁসানোর উদ্দেশ্যে এই কাজ করেছে বলে স্বীকার করে। এই ঘটনার নাটকের সাথে আরো কেউ জড়িত আছে কিনা তদন্তের পর আইনগতভাবে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানায় পুলিশ।