নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়ায় আওয়ামীলীগ কার্যালয়ে ভয়াবহ বোমা হামলার দীর্ঘ বাইশ বছর অতিবাহিত হল আজ। দীর্ঘ সময়েও মামলা নিষ্পত্তি ও আসামিদের বিচার না হওয়ায় হতাশ নিহত ২০ পরিবারের স্বজনরা। বিচার কাজ দ্রুত শেষ করার দাবি জানিয়েছন ভুক্তভোগীসহ মামলার বাদীপক্ষ। তবে অধিকাংশ সাক্ষী সাক্ষ্য না দেয়ায় বিচার প্রক্রিয়া ধীর গতিতে চলছে বলে জানান রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী।
২০০১ সালের ১৬ জুন সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জে শহরের চাষাঢ়া বালুরমাঠ এলাকায় আওয়ামীলীগ কার্য্যালয়ে দলীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে সভা করছিলেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের তৎকালীন সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক শামীম ওসমান। রাত আনুমানিক সাড়ে আটটার দিকে প্রচণ্ড শব্দে বোমা বিস্ফোরণে কেঁপে উঠে পুরো শহর।
বোমার আঘাতে লন্ডভন্ড হয়ে যায় আওয়ামীলীগ কার্যালয়। চার নারীসহ নিহত হন আওয়ামী লীগের বিশ নেতা-কর্মী। বোমার স্প্রিন্টারের আঘাতে আহত হন সংসদ সদস্য শামীম ওসমানসহ আরো ৭০জন। তাদের মধ্যে চিরতরে পঙ্গুত্ব বরণ করেন অর্ধ শতাধিক নেতা-কর্মী।
ঘটনার পরদিন শহর আওয়ামী লীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট খোকন সাহা বাদি হয়ে হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে পৃথক দুইটি মামলা করেন। পরবর্তীকালে বিএনপি নের্তৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করলেও বিচার কাজ থেমে থাকে।
২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর মামলার বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়। দীর্ঘ তদন্ত শেষে দুই মামলায় ছয়জনকে আসামী করে ২০১৩ সালে আদালতে অভিযোগপত্র দখিল করে পুলিশের তদন্তকারি সংস্থা সিআইডি। তবে দীর্ঘ একুশ বছরেও হয়নি মামলার নিষ্পত্তি। এত বছরেও বিচার না পেয়ে হতাশ নিহত ও আহতদের স্বজনরা। মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তি করে ন্যায়বিচারের দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরাসহ বাদীপক্ষ।
বোমা হামলার ঘটনার দায়ের করা মামলা দু’টি বর্তমানে নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। দুই মামলায় ১০৩ জন স্বাক্ষীর মধ্যে এখন পর্যন্ত ২২ জন স্বাক্ষী আদালতে স্বাক্ষ্য প্রদান করেছেন। অন্যান্য স্বাক্ষীদের স্বাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন করে মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির আশা করছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী।
দিবসটি উপলক্ষে আজ নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাঢ়ায় শহীদ মিনারের পাশে নির্মিত স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ, কোরআনখানি, দোয়া মাহফিলের আয়োজন করছেন বিভিন্ন সংগঠনসহ নিহতদের স্বজনরা।