দেশের স্বনামধন্য সংগীতশিক্ষা প্রতিষ্ঠান ‘সুরের ধারা’র ‘মিউজিক ফর ডেভেলপমেন্ট’ বা ‘উন্নয়নের জন্য সংগীত’ এর আওতায় সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের প্রতিভা প্রদর্শনের জন্য একটি চ্যারিটি গালার আয়োজন করা হয়েছে।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, অনুষ্ঠানটি আগামী ১৯ জানুয়ারি সন্ধ্যায় গুলশান ক্লাবের ল্যাম্ডা ব্যানকুইট হলে অনুষ্ঠিত হবে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন বিভিন্ন দাতা-প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিবৃন্দ, বাংলাদেশস্থ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত এবং দেশের গুরুত্বপূর্ণ বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বরা।
এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। বিশেষ অতিথি থাকবেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক, পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়-এর সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ এবং ইউএন রেসিডেন্ট কো-অর্ডিনেটর রেনেটা লুক ডেসালিন।
সুরের ধারা’র কর্ণধার রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যার একটি সুদূরপ্রসারী স্বপ্নের বাস্তব প্রতিফল ‘উন্নয়নের জন্য সঙ্গীত’। ইউএনডিপি’র হাত ধরে ২০০৯ সালে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের নিয়ে সুরের ধারা শুরু করেছিল এই প্রকল্প। পরবর্তীতে ‘শুকতারা প্রকল্প’ এর মাধ্যমে যৌনকর্মীদের শিশুদেরকেও এতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। অনুষ্ঠানে মিউজিক ফর ডেভেলপমেন্টের শিক্ষার্থীদের বিশেষ পরিবশেনা থাকবে।
সুরের ধারার ব্যতিক্রমী আয়োজন ‘উন্নয়নের জন্য সংগীত’ প্রকল্প। রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা এর নাম দিয়েছেন ‘উন্নয়নয়ের জন্য সংগীত’। ব্যতিক্রমধর্মী এই কার্যক্রমের ছাত্রছাত্রী মূলত সুবিধাবঞ্চিত পরিবারের সদস্য। সমাজের অবহেলিত একটি অংশ যারা শিক্ষা, স্বাস্থ্য, আহার, বাসস্থান, শিল্প-সাহিত্য থেকে বঞ্চিত সেইসব ছেলেমেয়েদেরকে আত্মপ্রত্যয়ী করে গড়ে তোলার জন্য কাজ করে যাচ্ছে ‘মিউজিক ফর ডেভেলপমেন্ট’। লালমাটিয়া হাউজিং সোসাইটি উচ্চ বিদ্যালয় সপ্তাহের তিনদিন এই কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। এখানে যেসব ছাত্রছাত্রী শিক্ষা গ্রহণের জন্য আসেন তারা বিদ্যালয়ের পাঠগ্রহণের পাশপাশি প্রাইভেট পড়ার সুবিধা পান। তাদের জন্য আলাদা ক্লাস নেয়া হয়। ফলে বাড়তি কোনো টিউশনি বা প্রাইভেট পড়তে হয় না। এদেরকে সপ্তাহে তিনদিন দুইবেলা আহারের ব্যবস্থা করা হয়। যাতায়াত ব্যবস্থা, স্কুলের ইউনিফরমের ব্যবস্থাও করা হয়।
শিল্প-সাহিত্য, আবৃত্তি, ছবি আঁকা, খেলাধুলা, সংগীত, নৃত্য, কম্পিউটার প্রযুক্তির ধারণা- যে বিষয়ে তারা আগ্রহী তাদেরকে সেই বিষয়েই প্রশিক্ষণ দেয়া হয়।
এই কার্যক্রমের বর্তমানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৫০ জন। শিশুদেরকে তাদের মৌলিক অধিকার সম্পর্কে সচেতন এবং তাকে শিল্প-সংস্কৃতি মনষ্ক করে গড়ে তোলাই প্রধান উদ্দেশ্য বলে জানিয়েছেন বন্যা।
এ প্রসঙ্গে রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা জানান, সুবিধাবঞ্চিত শিশুরা যেন আনন্দ-বিনোদনের মাধ্যমে বড় হয়, তাদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন এবং তারা প্রতিষ্ঠিত সুনাগরিক হয়ে দেশের উন্নয়নে সম্পৃক্ত হতে পারে সেই দায়িত্ববোধ থেকেই সুরের ধারার পাশাপাশি ‘মিউজিক ফর ডেভেলপমেন্ট’ কাজ করে যাচ্ছে। তিনি দেশের বিত্তশালীদেরকে এগিয়ে আসমার জন্য আহ্বান জানান।