দর্শকপ্রিয় চলচ্চিত্র ‘হাওয়া’র বিরুদ্ধে মামলা এবং ‘শনিবার বিকেল’ ছবির মুক্তি আটকে রাখার ঘটনায় সরব শোবিজ অঙ্গন। প্রতিবাদ জানাতে সম্প্রতি দেশের দেশের নির্মাতা, শিল্পী ও কলাকুশলীরা জানিয়েছেন সম্মিলিত প্রতিবাদ।
‘গল্প বলার স্বাধীনতা চাই’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে ‘হাওয়া’র বিরুদ্ধে মামলা ও ‘শনিবার বিকেল’ এর মুক্তি আটকে রাখার ঘটনার নিন্দা জানানোর পাশাপাশি সেন্সর বোর্ড প্রথা বাতিল ও ওটিটি নীতিমালা নিয়েও ৫ দফা দাবি জানানো হয়। ‘অদৃশ্য চাপ’ এর বিরুদ্ধে দেশের নির্মাতা, শিল্পী ও কলাকুশলীদের একাট্টা হওয়ার বিষয়টি সাড়া ফেলে পুরো শোবিজ অঙ্গনে।
শিল্প সংস্কৃতির উপর চাপিয়ে দেয়া নানা খড়গের বিরুদ্ধে কথা বলতে চ্যানেল আইয়ে এসেছিলেন নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, মেজবাউর রহমান সুমন ও অভিনেত্রী জয়া আহসান। চ্যানেল আই অনলাইনের সাথে কথা বলার পাশাপাশি তারা অংশ নিয়েছিলেন চ্যানেল আইয়ের নিয়মিত অনুষ্ঠান ‘টু দ্য পয়েন্ট’ এ।
‘শনিবার বিকেল’ নিয়ে সেন্সর বোর্ডের সিদ্ধান্তে হতাশ নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। নির্মাতার ভাষ্য, প্রায় সাড়ে ৩ বছর ধরে ছবিটি বিনা কারণে আটকে রাখা হয়েছে। কী কারণে ছবিটিকে প্রদর্শনীর অনুমতি দিচ্ছে না সেন্সর বোর্ড, সে কারণটিও এখনও জানেন না এই মেধাবী নির্মাতা।
আলোচনায় এসব বিষয় প্রসঙ্গ আসতেই ফারুকী বলেন, “দুঃখজনকভাবে আমাকে প্রতিটা ছবি নিয়ে সেন্সর বোর্ডের সাথে যুদ্ধ করতে হয়েছে। আমার নির্মিত ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ সেন্সর বোর্ডে দেড় বছরের মতো আটকে ছিলো। সেটা ছিলো বিএনপির আমল। সেন্সরের ক্ষেত্রে দেখেছি, আমাকে বিএনপি-আওয়ামী লীগ, দুই সরকারই সমানভাবে ভালোবাসে। ‘থার্ড পারসন সিঙ্গুলার নাম্বার’ প্রায় ১১ মাস আটকানো ছিলো, ‘ডুব’ আটকানো ছিলো প্রায় দেড় বছর। আর ‘শনিবার বিকেল’তো প্রায় সাড়ে তিন বছর ধরে আটকে আছে।”
ক্ষোভ প্রকাশ করে এই নির্মাতা আরও বলেন, “যারা এখানে (সেন্সর বোর্ড) বসে আছেন, তারা যে চোখ দিয়ে সিনেমা দেখেন- তাদের চোখ দিয়ে তো আমরা সিনেমা বানাই না। আমরা নতুন ভাষার সিনেমা বানাই, আমরা চাই সেই সিনেমা নিয়ে নতুন দর্শকের সাথে সিনেমার নতুন ভাষা নিয়ে ডায়ালগ হবে। এখন যারা সেন্সর বোর্ডে বসে আসেন, তারা হয়তো আগে যে সিনেমাগুলো দেখছেন, সেগুলোর সাথে আমাদের নতুন ভাষার এই সিনেমাগুলো মিলছে না। তখন হয়তো তারা চিন্তা করেন, এটা কি দেখানো যায়!”
আলোচনার এক পর্যায়ে সেন্সর বোর্ড প্রথা বাতিলের কথাও বলেন ফারুকী। এ বিষয়ে তিনি বলেন, “সেন্সর বোর্ড প্রথা বাতিল করে গ্রেডিং সিস্টেম করা উচিত। সারা পৃথিবীতে যেভাবে আছে।”
সিনেমার উপর নানা সময়ে যে অদৃশ্য চাপ নেমে আসে, সবাই একসাথে থাকলে সবকিছু ‘ওভারকাম’ করা যাবে বলেও মনে করেন এই নির্মাতা।
ফারুকী বলেন, “আমরা সবাই যদি এক থাকি, তবে সেন্সরের চাপিয়ে দেয়া খড়গ, হামলামামলা- এগুলো আমাদের উপর বেশিদিন রাখতে পারবে না। সরকারকে আমরা বলতে চাই, নির্মাণের মধ্য দিয়ে আমরা বাংলাদেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে কাজ করছি, পেছন থেকে টান দিয়ে ধরতে নয়। ফলে সরকারের আমাদের সাপোর্ট করা উচিত, বাধা না দিয়ে।”