এই খবরটি পডকাস্টে শুনুনঃ
চিকিৎসার জন্য ভারতে গিয়ে খুন হন ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম। আলোচিত এই হত্যাকাণ্ডে যে নামটি বারবার উঠে আসছে তা হলো যুক্তরাষ্ট্রের প্রবাসী আখতারুজ্জামান শাহীন। তিনি এমপির এলাকারই এক মেয়রের ভাই। আনোয়ারুলকে হত্যা করতে আখতারুজ্জামান ৫ কোটি টাকা দিয়ে ভাড়াটে খুনি ঠিক করেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের আইজি (সিআইডি) অখিলেশ চতুর্বেদী জানান, পরিকল্পিতভাবে খুন করে কলকাতা ছেড়ে আমেরিকায় পাড়ি জমিয়েছেন আখতারুজ্জামান। তার বিরুদ্ধে চোরাকারবারি, হুন্ডি ব্যবসাসহ নানা অভিযোগ রয়েছে। এমপি আজিমের সঙ্গে তার ব্যবসায়িক লেনদেন ছিলো বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এদিকে ঢাকা থেকে সৈয়দ আমানুল্লাহ, মুস্তাফিজুর এবং ফয়সাল আলি নামে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাছাড়া হত্যাকাণ্ডের ঘটনা তদন্তে ভারতীয় সিআইডি’র তিন সদস্যের টিম সকালে ঢাকা এসে পৌঁছেছেন।
জানা গেছে, আখতারুজাম্মান বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। তার বাড়ি ঝিনাইদহ এলাকার কোটচাঁদপুরে। অভিযুক্তের ভাই ওই এলাকারই মেয়র। আনারের সঙ্গে আখতারুজাম্মানের ব্যবসায়িক শত্রুতা ছিল।
ভারতের সংবাদ মাধ্যমগুলো জানিয়েছে, খুনের ঘটনায় যুক্ত ছিলেন প্রায় সাত জন। তার মধ্যে ছ’জনই বাংলাদেশি। অভিযুক্তদের তালিকায় নাম রয়েছে আখতারুজাম্মানের বান্ধবী শিলস্তি রহমানের। খুনের আগে আখতারুজ্জামান যখন কলকাতার ফ্ল্যাটে যান তখন সঙ্গে ছিলেন শিলস্তি।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আমানুল্লাহ নামের এক ব্যক্তিকে ভাড়া করেন আখতারুজাম্মান। খুনের জন্য দেওয়া হয় প্রায় পাঁচ কোটি টাকা। অন্যদিকে এই আমানুল্লাহ আবার জিহাদ এবং সিয়াম নামে দু’জন বাংলাদেশি সঙ্গীকে চোরা পথে কলকাতায় নিয়ে আসে ভাড়া করা ফ্ল্যাটে থাকার জন্য। খুন করার উদ্দেশ্যে আমানুল্লাহ ভাড়া করেন মুস্তাফিজুর এবং ফয়সাল নামের আরও দুই ব্যক্তিকে। জিহাদ আর সিয়াম ছাড়া বাকিরা বৈধ নথি নিয়ে ভারতে এসেছিল। খুনের পর আলাদা আলাদাভাবে সবাই ঢাকায় ফিরে যায়।
ভারতের পুলিশ ধারণা করছে, গত ১৩ মে নিউটাউনের ফ্ল্যাটে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়ে থাকতে পারে আনোয়ারুল আজিমকে। এরপর মৃত্যু নিশ্চিত করতে মাথায় ভারী বস্তু দিয়ে আঘাত করা হয়েছিল। মরদেহের গন্ধ এড়াতে দেহটিকে কেটে অংশবিশেষ ফ্রিজে রাখা হয়েছিল।
তদন্তে আরও উঠে এসেছে, খুনের পরিকল্পনা করা হয় বাংলাদেশেই। এই কাজে আনারের ঘনিষ্ঠ কেউ যুক্ত থাকতে পারে কারণ তিনি ভারতে আসবেন জানতে পেরেই খুনের চক্রান্ত করা হয়। সূত্রের খবর, নিউটাউনের ফ্ল্যাটে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গেই আনোয়ারুলকে খুন করা হয়েছে। ২০ মিনিটের মধ্যে দেহ টুকরো করে ট্রলিতে ভরা হয়েছে। ওই সময়ের মধ্যেই ফ্ল্যাট পরিস্কারও করে দেওয়া হয় বলেও ধারণা করা হচ্ছে।
চিকিৎসার জন্য গেলো আট দিন ধরে নিখোঁজ থাকার পর কলকাতায় এমপি আনার খুন হন বলে বুধবার খবর আসে। তবে তার মরদেহ উদ্ধার হয়েছে কি না তা নিয়ে এখনো ধোঁয়াশা রয়েছে। এদিকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত হয়েছে সন্দেহে একটি গাড়ি আটক করেছে কলকাতার নিউটাউন পুলিশ।