তিন ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় টি-টুয়েন্টিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের দেওয়া ১৯৪ রানের লক্ষে বাংলাদেশ করতে পেরেছে ১৫৮ রান। ৩৫ রানে হারের ম্যাচে পাওয়ার প্লে কাজে লাগাতে পারেনি মাহমুদউল্লাহ দল। বোলিংয়েও টেনে ধরতে পারেনি রানের লাগাম। এই দুই কারণকেই ম্যাচে জয় আসেনি ম্যাচ শেষে জানিয়েছেন টাইগার অধিনায়ক।
বৃষ্টির বাগড়ায় প্রথম ম্যাচ পরিত্যক্ত হলেও ব্যাটিং ব্যর্থতার ছাপ ধরে রেখেছিলেন ওপেনাররা। এ ম্যাচে তাই মুনিম শাহরিয়ারকে বাদ দিয়ে মোসাদ্দেক সৈকতকে দলে সুযোগ দেওয়া হয়। ওপেন করেন লিটন-এনামুল জুটি। বরাবরের মতো এ ম্যাচেও ব্যর্থ বাংলাদেশের ওপেনাররা। বড় রান তারায় ৩ ওভারের মাথায় হারায় ৩ উইকেট। ম্যাচ শেষে যা হারের কারণ হয়েছে বলে মাহমুদউল্লাহ স্বীকার করে নিয়েছেন।
‘১৯০ রান তাড়া করতে গেলে ভালো শুরু খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পাওয়ার-প্লেতে ৫৫-৬০ রান করতে হতো আমাদের। তাহলে হয়ত ম্যাচে থাকতাম। প্রথম ৬ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে রান করেছিলাম ৪৪। আমরা ওখানেই পিছিয়ে পড়েছি।’
পাওয়ার প্লের বাজে শুরু কাটায় আফিফ-সাকিব জুটি। আফিফকে সঙ্গ দিচ্ছিলেন সাকিব। অন্য প্রান্তে শট খেলছিলেন আফিফ। কিন্তু ২৭ বলে ৩৪ করে আফিফ ফিরলে অন্য প্রান্তে খুব একটা সঙ্গ পায়নি সাকিব। শুরুতে সাকিব নিজেও ছিলেন কিছুটা স্লো। পরে অবশ্য সেটি পুষিয়ে দিয়েছেন। ৩ ছয় ও ৫ চারে ৫২ বলে ৬৮ রান করে অপরাজিত থাকেন তিনি। সাকিবের প্রশংসা করলেও লক্ষ্য অনেক বড় হওয়ায় বোলিংয়ে লাগাম টানতে না পারাকেই দায়ী করেছেন টি-টুয়েন্টি অধিনায়ক।
‘সাকিব খুব ভালো ব্যাট করেছে। তবে বোলিংয়ে আমরা কয়েকটা ওভারে বেশি রান দিয়ে ফেলেছি। আফিফ–সাকিবের জুটিটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল, যেটা আমাদের মোমেন্টাম দিয়েছিল। শেষ দিকে সাকিব পরপর কয়েকটা বাউন্ডারি মারল। তারপরও বোলিংটা যদি আরেকটু ভালো করতে পারতাম, লক্ষ্যটা যদি আরেকটু কম হতো। ১০-১৫ টা রান কম দিতাম তাহলে আমাদের জন্য সেটা ভালো হতো।’
টি–টুয়েন্টিতে আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের শিকার হবেন বোলারা এটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। মাহমুদউল্লাহ ভাবনাও সেটি নিয়ে নয়, পরিকল্পনা অনুযায়ী বোলিং করতে পারেনি বোলাররা ম্যাচ শেষে জানিয়েছেন সেটি।
‘আমরা যেখানে বল করতে চেয়েছি, সেখানে বল করতে পারিনি। সত্যি বলতে পরিকল্পনা অনুযায়ী বোলিং হয়নি।’
টি-টুয়েন্টিতে ওপেনিংয়ে দীর্ঘদিন ধরেই ভুগছে বাংলাদেশ। নানা সময়ে একাধিক ওপেনারকে দিয়ে চেষ্টা চালানো হলেও কেউও প্রতিভার সাক্ষর রাখতে পারেননি। ফলাফল স্বরূপ ভালো শুরু পায় না মাহমুদউল্লার দল। সবশেষ ম্যাচে লিটনকে ওপেনিংয়ে আনা হলেও তিনিও ফিরেছেন দ্রুতই। ওপেনিংয়ে পরীক্ষা–নিরীক্ষার আর কতদিন চলবে এমন প্রশ্নে মাহমুদউল্লাহ জানিয়েছেন যেহেতু ধারাবাহিকতা দেখাতে পারছে না ওপেনাররা কাজেই অদল-বদল হতেই পারে।
‘লিটন আমাদের সেরা ব্যাটসম্যান। লিটন টেস্ট, ওয়ানডেতে খুবই ধারাবাহিকতা ধরে রেখেছে। টি–টুয়েন্টিতে হয়তো সেটা পারছে না। তবে সে আমাদের সেরা ব্যাটসম্যান। টি–টুয়েন্টিতে যে কোনো ব্যাটসম্যানের যে কোনো জায়গায় ব্যাটিং করার সামর্থ্য থাকতে হবে এবং লিটনের সেটা আছে। যেহেতু ওপেনিংয়ে আমরা ধারাবাহিক পারফরম্যান্স পাচ্ছি না, সে জন্য একটু অদল–বদল হতেই পারে। আমার মনে হয় দল হিসাবে আমরা ভালো খেলতে পারছি না। সেটারই প্রভাব পড়ছে সবকিছুতে।’