বিমানবন্দর টার্মিনাল-৩ নির্মাণে ঢাকায় আসেন দক্ষিণ কোরিয়ার নাগরিক তেহো কিম। পরে এক পরিচিত বন্ধুর মাধ্যমে ২০২০ সালের ডিসেম্বরে মডেল অভিনেত্রী পিজে হেলেনের সঙ্গে পরিচয় হয় তার। ২০২১ সালে জানুয়ারিয়াতে কিমের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়ান হেলেন। সেই প্রেম পরিণতি পায় বিয়ের মাধ্যমে!
ভিন্ন দুই দেশের নাগরিকের মধ্যে বিয়ের ঘটনা এখন রীতিমত সাধারণ ই! তবে ভিন্ন ধর্ম হলে কখনও কখনও প্রতিবন্ধকতা তৈরী হতে দেখা যায়। পিজে হেলেন ইসলাম ধর্মের, অন্যদিকে কিম বৌদ্ধ ধর্মের। তারা কি ধর্ম নিয়ে কোনো ঝামেলার সম্মুখিন হয়েছেন?
হেলেন জানান, ধর্ম ভাষা কিংবা জাতীয়তা কিছুই তাদের প্রেম ও বিয়েতে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়নি। কিম বৌদ্ধ ধর্মের হলেও তাকে (পিজে হেলেন) বিয়ে করতে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। দুই বছর চুটিয়ে প্রেমের পর গেল ১৮ মার্চ দুই পরিবারের সম্মতিতে বিয়ে করেন তারা।
চ্যানেল আই অনলাইনকে পিজে হেলেন জানান, সম্প্রতি ঢাকার একটি ক্লাবে ধুমধাম আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয়েছে তাদের বিবাহোত্তর সংবর্ধনা।
হেলেন বলেন, কিম আমাকে বিয়ে করতে চাইলে তার পরিবার আমাকে দেখতে চায়। আমি চার বার কোরিয়া গিয়ে তাদের সঙ্গে দেখা করেছি। তারা অনেক শিক্ষিত। তাদের কালচার অনেক ডিসিপ্লিনড এবং তারা কর্মঠ। তার পরিবার আমাকে অনেক আদর করে। সবমিলিয়ে বিয়ের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
হেলেন জানান, তার স্বামী তেহো কিম পেশায় একাউন্টস ম্যানেজার। তিনি বলেন, আমরা দুজনেই ইংরেজিতে দক্ষ। এজন্য কমিনিকেশনে কোনো সমস্যা হয়নি। সে আমাকে প্রথম প্রপোজ করেছিল। সে মনে করেছে আমি একজন দায়িত্ববান এবং ওয়াইজ মানুষ। এখন সে ভালো বাংলা বলতে না পারলেও বোঝে। তার সঙ্গে পরিচয়ের পর বুঝেছি মানুষ হিসেবে সে খুবই সৎ এবং আমাকে কেয়ার করে। এক কথায় সে মানুষ হিসেবে অনেক ভালো এজন্য তার প্রেমে পড়ে যাই এবং আমরা সুখে সংসার করছি।
হেলেন আরও বলেন, কিম ভিনদেশী বলে আমার পরিবার একটু ভয়ে ছিল, সে বৌদ্ধ ধর্মে থেকে কীভাবে তাকে বিয়ে করবো এগুলো নিয়ে সন্ধিহান ছিল। কিন্তু আমার পরিবার তাকে দেখে বুঝতে পারে সে বিনয়ী এবং আমার পরিবার রাজী হয়। সে আমাকে বিয়ের জন্য মুসলিম ধর্ম গ্রহণ করেছে।
‘আমি এবং আমার মায়ের কাছ থেকে সে ইসলাম ধর্মের অনেক খুঁটিনাটি বিষয়ে জানতে চায়। তাকে বিভিন্ন হাদিসের কথা বলি। শুনে খুশি হয় এবং আরও জানতে আগ্রহী হয়। আমাদের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করেছে।’-বলছিলেন হেলেন।
একাধিক ফটোশুট, টিভি কমার্শিয়াল এবং নাটকে কাজ করেছেন পিজে হেলেন। তিনি বলেন, কাজে কিছুটা বিরতি দিয়ে লেখাপড়া শেষ করেছি। কোরিয়া গিয়ে মার্স্টাস শেষ করবো। কিমের ইচ্ছে আমি যেন কাজ করি। এজন্য সে বলেছে কোরিয়া গিয়ে সেখানকার এজেন্সির মাধ্যমে আবার কাজ শুরু করতে।